Bangladesh
‘কেএনএফ’র কাছে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বাড়িছাড়া তরুণরা
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৭ অক্টোবর ২০২২ : সম্প্রতি ভারত ও মিয়ানমারের সীমাš ঘেঁষা দুর্গম পাহাড়ে বাড়িছাড়া কিছু তরুণ জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। নতুন জঙ্গি সংগঠনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ) নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, দেশের পার্বত্য অঞ্চলে হঠাৎ মাথাচাড়া দেওয়া সংগঠনটি এখন ভয়ঙ্কররূপে আত্মপ্রকাশের চেষ্টা করছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন করার নীলনকশাও বাস্তবায়নের অপচেষ্টা করে যাচ্ছে তারা। পাহাড়ি সংগঠন ‘কেএনএফ’ এরই মধ্যে নিজস্ব পতাকা বানিয়েছে। তৈরি করেছে মনগড়া মানচিত্র। এসব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তথা আলাদা রাজ্য বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষের সমন্বয়ে গড়েছে প্রশিক্ষিত নিজস্ব বাহিনী, যাদের দেওয়া হয়েছে সামরিক বাহিনীর আদলে কমান্ডো প্রশিক্ষণ। তাদের রয়েছে আলাদা ইউনিফর্ম, র্যাংকভিত্তিক আলাদা আলাদা ব্যাচ। ইউনিফর্মের হাতে রয়েছে তাদের নিজস্ব পতাকা।
সম্প্রতি উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া ১৯ জেলার ৫৫ তরুণের তালিকা প্রকাশ করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে ৩৮ জনের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’। যার বাংলা অর্থ- পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার। এই সংগঠনের আহ্বানে বাড়ি ছাড়ে তরুণরা।
কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নিরুদ্দেশ হওয়া অন্তত ৩৮ তরুণ বর্তমানে এই কেএনএফের অধীনে দুর্গম পাহাড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর স্থান তাদের হামলার টার্গেট হতে পারে- এমন গোয়েন্দা তথ্যের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ও র্যাব যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে।
জানা যায়, পাহাড়ে সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে কেএনএফ’র আত্মপ্রকাশ বেশিদিন হয়নি। তবে এর মধ্যেই তারা তাদের ‘সামর্থ্য’ দেখিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ওপর হামলা চালিয়েছে। বলা হচ্ছে, এরা জেএসএসের প্রতিপক্ষ একটি দল। সম্প্রতি হামলা চালিয়ে জেএসএসের নেতাকে হত্যার পর পাহাড়ে কেএনএফ’কে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এক সময় জঙ্গি সংগঠন হুজির পাহাড়ে আস্তানা গাড়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছিল। আফগান ফেরতদের এই দল গঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল মিয়ানমারের মুসলিম রোহিঙ্গাদের পক্ষ নিয়ে লড়াইয়ে অংশ নেওয়া। নব্বইয়ের দশকে রোহিঙ্গাদের দুই সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এবং আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (এআরএনও) সঙ্গে হুজির সম্পর্কের খবরও আলোচনায় আসে।