Column

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তির পাশে দাঁড়াক ভারত

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক শক্তির পাশে দাঁড়াক ভারত

| | 27 May 2013, 10:45 am
জাতীয় ইতিহাসের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যুগসন্ধিতে এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য এবং দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের রাজনীতি থেকে ইসলামি গোঁড়ামি ও মৌলবাদ মুছে ফেলে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটানোর আন্দোলনে সেখানকার মানুষ আজ উত্তাল।

 বিপুল-আন্দোলিত জেনারেশন এক্স, অর্থাৎ তরুণ প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা দলে দলে রাস্তায় নেমে দেশের রাজনীতিকে একাত্তরের প্রেত মুক্ত করার দাবি জানাচ্ছে। এই প্রেতের দলই স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে বাংলাদেশের বুকে গণহত্যা চালিয়েছিল, পাশবিক অত্যাচার করেছিল অসংখ্য মহিলার উপর। তাই দেশের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা কয়েকজন জামাত নেতার ফাঁসির আদেশকে এই জেনারেশন এক্স দু\'হাত তুলে স্বাগত জানিয়েছে। আর এখানেই বাংলাদেশের রাজনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি খুশির কারন হয়ে দাঁড়ায়। 

 
তরুণ প্রজন্মের এই আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় যে হিংস্রতা মৌলবাদী ইসলামি সংগঠণগুলির দেখিয়েছে, তা যেমন আশার অতীত নয়, তেমনি যে রকম কড়া ভাবে সরকার তার মোকাবিলা করেছে, তাও আশ্চর্যের নয়। 
 
বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল, উদার-ঐস্লামিক এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে যাতে আত্মপ্রকাশ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেই মনে হয়।ভারত এবং আমেরিকা সহ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং প্রতিষ্ঠানে বিশ্বাসী বিশ্বের সমস্ত বৃহৎ রাষ্ট্রের উচিৎ তাঁর এই সংগ্রামকে স্বাগত জানান।
 
 নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তার তাগিদেই বাংলাদেশের স্থায়িত্ব এবং নিরাপত্তার ব্যাপারে, স্বাভাবিকভাবে, ভারতের স্বার্থও জড়িত। 
 
দু\' হাজার নয় সাল থেকে শেখ হাসিনার দ্বিতীয় দফার প্রধানমন্ত্রীত্বকালে ভারতের ব্যাপারে বিদেশনীতির ক্ষেত্রে তারা যে সদর্থক পথে চলতে চায়, তার যথেষ্ট প্রমাণ বাংলাদেশ রেখেছে। তাদের বর্তমান বিদেশনীতি বাংলাদেশের যাবতীয় নিরাপত্তাহীনতার মূলে ভারত--অতীতের এই রাজনৈতিক মনোভাব থেকে মুক্ত। 
 
এই সময়ের তথ্য ঘাঁটলে দেখা যাবে, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখার যে নীতি বাংলাদেশে বরাবর অনুসরন করা হত, শেখ হাসিনা তার থেকে বেরিয়ে এসে দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপারে অনেক বেশি সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
 
এ\' কথা জোরের সঙ্গে বলা যেতেই পারে, সন্ত্রাসবাদের বিপদ রুখতে পারস্পরিক স্বার্থে ভারত ও বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে এক সাথে কাজ করার ফলেই নদীর জল বন্টন এবং ছিটমহল হস্তান্তরের মত বিষয়গুলি নিয়েও তারা একটা জায়গায় পৌঁছতে পেরেছে। এর কৃতিত্ব শেখ হাসিনার। এর কারন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রাতিষ্ঠানিকতার মধ্যে তিনি কৌশল অবলম্বনের ক্ষেত্রে বাস্তববোধ সঞ্চার করতে পেরেছেন। 
 
আজ যখন স্বদেশবাসীদের উপর অত্যাচার চালানো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার উদ্দেশ্যে প্রতিক্রিয়াশীল ইসলামি শক্তিগুলি তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ এবং হিংসাশ্রয়ী প্রচার চালিয়ে দেশের আইন-শৃংখলাকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে চাইছে, তখন শেখ হাসিনা মুখোমুখি এক সন্ধিক্ষণের। বিরোধীদের এই প্রচার-আন্দোলন আসলে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির চালচিত্রে তাদের নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার একটা মরীয়া চেষ্টা। এ\' ছাড়াও এই প্রচেষ্টার আরও উদ্দেশ্য যে বাংলাদেশের ইসলামি দলগুলির জন্য বিদেশী অর্থ সাহায্য এবং সমর্থন আদায় করা, এমন কথাও উড়িয়ে দেওয়া যায়না। সুতরাং হিংসাত্মক তান্ডব আরও বাড়তে পারে। 
 
বহির্শক্তিগুলির মধ্যে পাকিস্তান থেকে উপসাগরীয় দেশগুলি--কেউই চাইবেনা বাংলাদেশ একটি উদার, গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠুক। ভারত-বিরোধী ইসলামি দলগুলির মাধ্যমে পূব দিক থেকে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে ভারতকে চাপে রাখার নীতির দিক থেকেও এই না চাওয়াটা জরুরী।
 
এই পটভূমিতে এটা স্পষ্ট যে, জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থেই ভারতের এখন বাংলাদেশে এমন কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, যাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সে দেশের সরকার প্রধানত জামাত-দলভুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের ইসলামি সমর্থকদের চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করে দীর্ঘ স্থায়িত্ব লাভ করে এবং আরও শক্তিশালী হয়। েএ\' কথা বলার মানে এই নয় যে, ভারত বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করুক। 
 
যা করা যেতে পারে, তা হল ভারতের পক্ষ থেকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতার ব্যাপারে একটি পরিষ্কার রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের জায়গা তৈরি করা। এ ছাড়াও বাংলাদেশ-বিরোধী মানুষজন যাতে পাকিস্তানের উদ্দেশ্য সাধন করা স্থানীয় প্রান্তিক ইসলামি শক্তির সহায়তায় ভারতে আশ্রয় না নিতে পারে,তাও নিশ্চিত করা দরকার। জামাত বাংলাদেশের বিরোধী জোটের অন্যত

সর্বশেষ শিরোনাম

বাংলাদেশে পশ্চিমের ‘গণতান্ত্রিক বিতর্কের’ শূন্যতা Tue, Jan 02 2024

হাসিনার ১৫ বছর: আঞ্চলিক সহযোগিতা ও প্রবৃদ্ধির একটি অনুকরণীয় গল্প Thu, Dec 07 2023

বাংলাদেশ: পাকিস্তানের ছায়া থেকে পরিপক্ক গণতান্ত্রিক দেশ Fri, Dec 01 2023

ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম ধর্মতন্ত্র: বাংলাদেশ - এবং পশ্চিম - হুমকির মুখে Thu, Nov 16 2023

সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের সূচক - বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের তুলনা Tue, Jan 17 2023

বাংলাদেশে বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতি - ব্যাপক দুর্নীতি ও উগ্র ইসলামবাদ Sat, Nov 19 2022

বিডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনের বাইরে বাংলাদেশ Wed, Dec 08 2021

Manipulating institutions: The Chinese Way in Bangladesh Sat, Dec 04 2021

শিল্পদ্রব্যের গুনমাণ: কোথায় চীনের বিশ্বাসযোগ্যতা Tue, Sep 15 2020

চিন থেকে সাবধান হওয়ার সময় এখন Mon, Aug 31 2020