Finance
এক ঘোষণাতেই পেঁয়াজের দাম মণে কমলো ৫০০ টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা, ২০ মে ২০২৩: পাবনার হাট-বাজারে শুক্রবার পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২৮০০-২৯০০ টাকা মণ। এমন দামে কিছুটা লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু চাষিদের সেই আশায় ‘গুড়েবালি’। কারণ একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে গড়ে ৫০০ টাকা কমে গেছে।
শনিবার (২০ মে) দেশের বৃহৎ পেঁয়াজের হাট বনগ্রামে সবচেয়ে ভালোমানের প্রতিমণ পেঁয়াজ ২২০০ থেকে ২৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে ফাটা পেঁয়াজ আরও কম দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষিরা বলছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেওয়ায় দরপতন শুরু হয়েছে।
শনিবার পাবনার বনগ্রাম হাটভর্তি ছিল পেঁয়াজ। তবে বাজারে সরবরাহের তুলনায় চাহিদা কম। ব্যাপারীরা বেশি দরে পেঁয়াজ কিনতে উৎসাহী নন। শুক্রবার পাবনার অন্যতম বড় পেঁয়াজের হাট চিনাখড়ায় যে পেঁয়াজ ২৭০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে; সেই মানের পেঁয়াজ শনিবার বিক্রি হয়েছে ২২০০-২৩০০ টাকা দরে। আর ২৮০০-২৯০০ টাকা মণের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকা দরে।
অনেক চাষিই বলছেন, এক রাতের ব্যবধানে দাম এত টাকা কমে যাবে তা তারা ভাবতেও পারেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ভালো পেঁয়াজের দাম ছিল ১৪০০-১৫০০ টাকা মণ। দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে দাম কমে হয়ে যায় ১১০০- ১২০০ টাকা।
চাষিদের দেওয়া তথ্যমতে, গতবছর মণপ্রতি তাদের খরচ ছিল এক হাজার টাকার বেশি। তার ওপর পেঁয়াজ ঘরে রাখলে ওজনে কমে যায়, পচে যায়। তাই তারা গত বছর লাভবান হতে পারেননি। এবছর দাম বেশি হলেও ফলন হয়েছে গত বছরের অর্ধেক। সে হিসাবে তাদের উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ হয়ে গেছে। মৌসুমের কিছুদিন পর এসে দাম বাড়ায় তারা লাভের আশা করছিলেন। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রীর আমদানির ঘোষণা তাদের আশায় গুড়েবালি দিয়েছে।
সাঁথিয়া উপজেলার বামনডাঙ্গা গ্রামের চাষি সাগর হোসেন বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের বললেন, পেঁয়াজের দাম দুই-একদিনের মধ্যে না কমলে আমদানি করা হবে। তার এক ঘোষণাতেই পেঁয়াজের দামের বারটা বেজে গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, চাষির পেঁয়াজ উৎপাদন খরচ পড়ে প্রতি কেজিতে ৩৫-৪০ টাকার ওপর। কিন্তু মৌসুমে চাষিরা ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এতে তারা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তিনি আরও বলেন, তখন ওই দরে বিক্রি না করে উপায়ও থাকে না চাষির। কারণ তারা দেনার ভারে জর্জরিত থাকেন। এবছর যে দাম উঠেছে তাতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। সরকার আমদানি করে দামটা ভারসাম্যপূর্ণ রাখার চেষ্টা করছে। যাতে ক্রেতা-ভোক্তা উভয়েই ভালো থাকেন। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।