Muktijudho

মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলী নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৩ : মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি প্রায় ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায়, কিন্তু এখনো আমরা তরুণদের মধ্যে সেই ধরনের জাগরণ তৈরি করতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মানুষের আত্মত্যাগের ঘটনা রাষ্ট্রীয়ভাবে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। তা না হলে ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে যে শপথ আমরা নিয়েছিলাম, তা অর্জিত হবে না।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ মিলনায়তনে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘অবিস্মরণীয় এক দিন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
তারা বলেন, ‘বাঙালি জাতির জীবনে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব অপরিসীম। সেদিন সেখানে অনেক বিদেশি সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। সব সামপ্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে আমাদের দেশ গঠিত হয়েছে। সেসময় বিদেশি সাংবাদিকদের কারণে মুজিবনগর সরকারের ব্যাপক প্রচার হয়েছিল। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছিল। আমরা আজ জামায়াত-শিবিরের চক্রান্তের কথা বলি। কিন্তু তৎকালীন তাজউদ্দীনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার লোকও ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। আওয়ামী লীগের ভেতরেও এরকম লোক অনেক আছে, আমাদের সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘যারা জন্মসনদ স্বীকার করে না, তারা এদেশের সন্তান হয় কীভাবে? তারা বাংলাদেশে রাজনীতি করে কীভাবে? এই প্রশ্নের সমাধান হওয়া দরকার। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র চলছে। যা সত্যি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।’
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘মুজিবনগর সরকারের কথা বলতে গেলে ৭ মার্চের কথা আসবে। সেই ৭ মার্চের স্বাধীনতার ডাক পৌঁছে গিয়েছিল তখনকার অজপাড়াগাঁ মেহেরপুরে। সে কারণেই আজকের ১৭ এপ্রিল। মার্চের ৩০ তারিখ থেকে ১৭ এপ্রিলের আগ পর্যন্ত দেশের মুক্তিকামী মানুষের কোনো প্রকার স্বীকৃতি ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে যখন দুর্ভিক্ষ শুরু হয় তখন এক ধরনের শ্রেণিভেদ তৈরি হয়। আমাদের দেশেও এক ধরনের শ্রেণিভেদ তৈরি হয়েছে। যেই শ্রেণিভেদের কারণে আমাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এর ফলে নানা ধরনের অশান্তিও তৈরি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড়গুণ ছিল সে মানুষকে খুব তাড়াতাড়ি কাছে নিতেন। এটা তার কোনো রাজনৈতিক কৌশল ছিল না। স্বপ্রণোদিত হয়ে মানুষকে কাছে নিতেন। আমি মনেকরি আমরাও যদি মানুষের কাছে থাকি তাহলে আমরা মানুষের সমস্যা এবং সুখ-দুঃখকে ভালো করে বুঝতে পারবো। তখনই কিন্তু এর সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে।’