Muktijudho
যুক্তরাষ্ট্র্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে সমর্থন করেছিল: টেড কেনেডি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২ নভেম্বর ২০২২ : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ন্যায্য দাবির পক্ষে এডওয়ার্ড এম কেনেডির নৈতিক অবস্থানের কথা স্মরণ করে তার ছেলে টেড কেনেডি বলেছেন, পাকিস্তানের প্রতি তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক নীতি সত্ত্বেও বেশিরভাগ আমেরিকান ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন করেছিল।
তিনি সোমবার এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক যুগান্তকারী বক্তৃতায় বলেন, ‘আমি মনে করি, আপনাদের সবার জন্য এটা জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, (আপনাদের) স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিংহভাগ মানুষ আপনাদের (বাংলাদেশের) পক্ষে ছিল।’
প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা এডওয়ার্ড (টেড) এম কেনেডি জুনিয়র বলেন যে, ওয়াশিংটন ও ঢাকার মধ্যে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে কেনেডি পরিবার সর্বদা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধিকে সমর্থন করবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ যারা রক্তপাতের শিকার হয়েছেন তাদের সঙ্গে কেনেডি পরিবার বিশেষ আত্মীয়তা অনুভব করে। বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার সপ্তাহব্যাপী সফরে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এখানে এসেছেন।
টেডের বাবা, তৎকালীন মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড এম কেনেডি পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি মার্কিন সরকারের ঝুঁকে পড়া পররাষ্ট্রনীতি সত্ত্বেও ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থান নিয়েছিলেন। জেনারেল ইয়াহিয়া খানের অধীনে পাকিস্তানের সামরিক প্রশাসন ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাংলাদেশে গণহত্যা চালানোর তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এডওয়ার্ড কেনেডি ১৯৭১ সালের আগস্টে ভারতে শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে পাকিস্তাানি দখলদার বাহিনীর বর্বরতা উন্মোচন করেন।
কেনেডি বলেন যে, তার বাবা শরণার্থী শিবির থেকে ফিরে আসার পর পাকিস্তানকে সমর্থন করার জন্য তৎকালীন নিক্সন প্রশাসনের সমালোচনা করেছিলেন এবং ‘আমেরিকাকে ইতিহাসের সঠিক পক্ষে (বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে)’ অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
টেড বলেন, তার বাবা তার প্রতিবেদনে বলেছিলেন যে ‘ইসলামাবাদের প্রতি আমেরিকান সমর্থন (তৎকালীন) পূর্ব বাংলার মানবিক ও রাজনৈতিক ট্র্যাজেডির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার চেয়ে কম নয়।’
১৯৭২ সালে এডওয়ার্ড কেনেডি সদ্য জন্ম নেওয়া বাংলাদেশে সফরের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিখ্যাত ‘বটতলা’ নামক স্থানে একটি বট গাছের চারা রোপণ করেছিলেন।
টেড কেনেডি বলেন, আজ এই বটগাছটি পরিদর্শন করা তার কাছে খুব ‘প্রবল এবং আবেগময়’ অভিজ্ঞতা, কারণ তিনি সারা জীবন তার বাবার কাছ থেকে গাছটির গল্প শুনেছেন। তিনি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, ‘আজ আমি গাছটির নীচে গিয়ে আমার বাবার উপস্থিতি অনুভব করেছি।’