Muktijudho
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৯ মে ২০২২: একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে মৌলভীবাজারের বড়লেখার আব্দুল আজিজ ওরফে হাবুলসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুজন হলেন মো. আব্দুল মতিন ও আব্দুল মান্নান ওরফে মনাই। এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকেই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর এটি ৪৫তম রায়। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও কে এম হাফিজুল আলম।
রায়ে ২৪০ পৃষ্ঠার মধ্যে সারসংক্ষেপ অংশ পাঠ করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। এরপর রায় পড়েন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার এবং সর্বশেষ দণ্ডসহ মূল রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম।
মামলার তদন্ত থেকে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল আজিজ ও আব্দুল মতিন দুই ভাই। ১৯৭১ সালে তারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রশিক্ষণ নিতে তারা ভারতের বারপুঞ্জিতে যান। তবে প্রশিক্ষণ শেষ না করে দেশে ফিরে আসেন তারা। এরপর যোগ দেন রাজাকার বাহিনীতে। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি আব্দুল মান্নান মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। বর্তমানে আব্দুল মতিন পলাতক।
রায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে আব্দুল আজিজ ওরফে হাবুল ও তার ভাই পলাতক আসামি আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে ২ ও ৫ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগের প্রতিটিতে আলাদাভাবে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্য আসামি আব্দুল মান্নান ওরফে মনাইয়ের বিরুদ্ধে ১ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। এসময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ হায়দার আলী, প্রসিকিউটর রানা দাশ গুপ্ত, ঋষিকেশ সাহা, সুলতান মাহমুদ সীমন, সাহিদুর রহমান, জাহিদ হাসান, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি, রাজিয়া সুলতানা চমন, ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল, মোশফেকুর রহমান ও তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক। এছাড়া গ্রেফতার দুই আসামিকেও আদালতে হাজির করা হয়।