Muktijudho
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৩১ মে ২০২২: মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের সাবেক আমির রেজাউল করিম মন্টুসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রেজাউল করিম মন্টু ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মো. শহিদ মণ্ডল ও মো. নজরুল ইসলাম (পলাতক)। মামলায় প্রথমে চারজনকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে মো. ইসহাক তদন্ত চলার সময়ই গ্রেফতার অবস্থায় মারা যান।
মঙ্গলবার (৩১ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, আবুল কালাম আজাদ ও তাপস কুমার বল। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান ও গাজী এম এইচ তামিম।
২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। এক বছর ধরে চলা তদন্তে মোট ৩১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর ১২ ফেব্রুয়ারি আসামি শহিদ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামি রেজাউল করিম মন্টু জয়পুর হাট সদরের বাসিন্দা। জেলা শহরের প্রফেসর পাড়ার রাজাকার বিল্ডিং নামে পরিচিত বাসায় থাকতেন। আর পলাতক নজরুল ইসলাম ঢাকায় তেজগাঁওয়ে থাকতেন। শহিদ মণ্ডলের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছি থানার চাঁপাডাল গ্রামে।
তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রসিকিউশন ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর মামলাটি আদালতে দাখিল করেন। শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এরপর ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর যক্তিতর্ক শুরু হয়ে ২৬ এপ্রিল শেষ হয়। ওইদিনই মামলাটি রায়ের জন্য রাখা হয়।
সাতজনকে হত্যাসহ অবৈধভাবে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে সম্পদ ধ্বংসের অপরাধে আসামিদের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ গঠন করা হয়।
তদন্ত সংস্থা জানায়, আসামি মো. রেজাউল করিম মন্টু ১৯৮৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী জয়পুরহাট জেলার আমির ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজ বাড়িতে চলে আসেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সশস্ত্র রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।
১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলে তিনি আত্মগোপন করেন। বাকীরাও জামায়াতের সমর্থক বলে জানানো হয়।