South Asia
তেল কিনতে শ্রীলঙ্কাকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ ভারতের
নয়াদিল্লী/কলম্বো: ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট থেকে খানিকটা মুক্তির আশ্বাস দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে তেল কেনার জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে ভারত।
অর্থসমস্যায় জর্জরিত এই দ্বীপরাষ্ট্রটির বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারের যা দশা, তাতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে সচল রাখা বা সাধারণ মানুষের জন্য বাইরের দেশ থেকে জ্বালানি আমদানি করার মত নগদ অর্থ নেই তাদের। ফলে উৎপাদনে বিপুল্ ঘাটতি এবং যখন তখন ব্ল্যাকআউটের অন্ধকার।তাছাড়া পরিবহণখাতেও এর প্রভাব পড়েছে। এই সময়েই শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত।
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর শ্রীলংকার বিদেশমন্ত্রী জি এল পেইরিসকে একটি চিঠিতে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের এই ধারাবাহিক ঋণ দিতে রাজি হওয়ার পরে সম্প্রতি এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই ঋণের টাকা দিয়ে ভারতের কোম্পানিগুলোর কাছ থেকেই পেট্রোলিয়াম তেল কিনবে শ্রীলঙ্কা।
এর আগে ভারত সম্প্রতি শ্রীলঙ্কাকে বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে ৯০০ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য করেছে। খাদ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং ওষুধপত্র আমদানি করার জন্য আরও এক বিলিয়ন অর্থাৎ ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার জন্য কথাবার্তা প্রায় চূড়ান্ত হতে চলেছে।
" যে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেগুলি শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়ানো, তাদের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করা এবং দু'দেশের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সহযোগীতার উন্নতিতে আমাদের যে প্রতিশ্রুতির অনুসারী," কলম্বোতে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বলেছেন।
শ্রীলঙ্কার বৈদশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস হলো পর্যটন খাত। কিন্তু করোনার কারণে এই খাতে ধস নেমেছে। যার প্রভাব পড়েছে দ্বীপ রাষ্ট্রটির পুরো অর্থনীতির ওপর। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।
উন্নয়ন কর্মকান্ড চালাতে চীনের কাছ শ্রীলঙ্কা অনেক টাকা নিলেও পরবর্তীতে সেগুলো আর মেটাতে পারেনি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যে প্রকল্পগুলি নেওয়া হয়েছিল, সেগুলির অনেকগুলিই সাদা হাতি পোষার সামিল হয়েছে। এখন নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে চীনের কাছে আরও ঋণ চেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে সে দেশে চাল, সিমেন্ট, গাড়ির যন্ত্রাংশ, প্রভৃতির আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে সে দেশে গত মাসে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে রেকর্ড ২৫ শতাংশ।
শ্রীলঙ্কাকে ঋণদানের প্রায় একই সময় দিয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ২০২২-২৩ সালের বার্ষিক বাজেটে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করল ভারত। বিদায়ী অর্থ বৎসরে এই বরাদ্দ ছিল ২০০ কোটি টাকা।
বাজেট ঘোষণার সময় ভারতের সংসদে এই ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
তালেবান শাসন প্রতিষ্ঠার পর আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনো স্থাপিত হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে আগামী অর্থবছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০ কোটি টাকা খরচ করবে। গতবারের বাজেটের চেয়ে এবারের বরাদ্দ প্রায় ১৫০ কোটি কম। কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ভারত নিয়মিত আফগানিস্তানে মানবিক সাহায্য পাঠিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য ছাড়াও পাঠাচ্ছে ওষুধ ও কোভিডের টিকা।
অর্থ বরাদ্দ হয়েছে মিয়ানমারের জন্যও। মোট ৬০০ কোটি টাকা। গত বাজেটেও এই পরিমাণ অর্থ মিয়ানমারের জন্য বরাদ্দ ছিল। এ বছরও সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ ভুটানের জন্য- ২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাবে মরিশাস। মোট ৯০০ কোটি। আফ্রিকার দেশগুলোর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা। ভারতের আর এক প্রতিবেশী নেপাল পাচ্ছে ৭৫০ কোটি টাকা।