South Asia
আফগানিস্তানের রিহ্যাব সেন্টারে মানুষ মানুষের মাংস খাচ্ছে
কাবুল: আফগানিস্তানের মাদক রিহ্যাব কেন্দ্রে মানুষের মাংস খাচ্ছে রোগীরা! সম্প্রতি ডেনমার্কের সাংবাদিকেরা এমনই দাবি করেছেন।
ডেইলি মেল-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মাসে ডেনমার্ক রেডিওর সাংবাদিকেরা রিহ্যাব কেন্দ্র থেকে মুক্তি পাওয়া এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন। ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, তালিবান পরিচালিত ওই রিহ্যাব সেন্টারের ভিতরের পরিবেশ ভয়ঙ্কর।
গত বছর যখন তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে, সেই সময় তাদের অন্যতম প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল দেশে মাদকাসক্তির সমস্যা দূর করা, যদিও তারাই আফিমের মত মাদকদ্রব্য কেনাবেচার পয়সা থেকেই বছরের বছর তাদের তহবিল গড়েছে।
এর পরে গত ছ'মাসে তালেবান হাজার হাজার ঘর ছাড়া ভবঘুরে মাদকাসক্তদের ধরে হাসপাতালে আটকে রেখেছে। কাবুলের এমনই একটি হাসপাতালে ডেইলি মেলের ওই সাংবাদিক খোঁজখবর করতে গিয়ে দেখতে পেলেন ভয়ঙ্কর পরিবেশের মধ্যে আছেন সেই সব মানুষ- একই বিছানায় গাদাগাদি করে তিনজনে শোওয়া, অতি সামান্য অথবা কোনও খাবারই না থাকা, ক্ষিদের যন্ত্রনায় ঘাসপাতা খাওয়া তো আছেই। শোনা যায় এঁদের কেউ কেউ প্রাণ বাঁচাতে নাকি বেড়াল মেরে খেয়েছেন, এমন কি মানুষের মাংসও।
এক রোগীর দাবি, রিহ্যাব কেন্দ্রের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। খাবার না পেয়ে ক্রমশ হিংস্র হয়ে উঠছেন। সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে খুন করে আগুনে পুড়িয়ে তাঁর মাংস খেয়েছেন কয়েক জন। এ ছাড়াও ওই কেন্দ্রের ভিতরে থাকা একটি পার্কে একটি বিড়ালকে ধরে তার কাঁচা মাংস পর্যন্ত নাকি খেয়েছেন রোগীরা।
নিজেকে আবদুল নামে পরিচয় দেওয়া ওই হাসপাতালে থাকা আর এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, রোগীদের দিনের পর দিন অভুক্ত থাকা সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। খিদের জ্বালায় তাই নিয়মিত ভাবে মানুষ মারাও যাচ্ছেন।
আফগানিস্তান থেকে পৃথিবীর মধ্যে সব থেকে বেশি আফিম এবং হেরোইনের মত নিষিদ্ধ মাদক পাচার হয়। তালেবানের তহবিলের বেশিটাই আসে আফিম পাচারের উপর কর সংগ্রহ করে অথবা নিজেরাই বিদেশে আফিং পাঠিয়ে।
দেশে বিপুল পরিমাণের মাদক উৎপন্ন হওয়ার ফলে তার দাম আয়ত্তের মধ্যে এবং সাধারণ মানুষের কাছেও সহজলভ্য এবং তার ফলে অসংখ্য মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। ২০১৫ সালে করা একটি সরকারি সমীক্ষায় দেখা গেছিল এই মাদকাসক্তির প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষা শিকার ২৫ লক্ষ থেকে ৩৫ লক্ষ মানুষ।
তবে ক্ষমতা দখল করার পর, বহির্বিশ্বকে খুশি রাখার জন্য তালেবান দেশের এই অভিশাপ দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ করার মত সামর্থ্য না থাকায় সরকার মাদকাসক্তদের জেলখানাসদৃশ হাসপাতালে আটকে রেখেই কর্তব্য সেরেছে।