World
চীনের জিয়ান শহরে স্মার্টফোনের বদলে চাল কিনছেন কোয়ারেন্টাইন-বন্দী মানুষ
জিয়ান, চীন: খাদ্যদ্রব্যের অপ্রতুলতার মধ্যে কোভিড-তাড়িত চীনের জিয়ান শহরের কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষজন এখন স্মার্টোফোন অথবা অন্যকিছুর বিনিময়ে চাল এবং অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য কিনছেন।
এই দৃশ্য দেখা গেছে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলিতে। সংবাদসংস্থা বিবিসিও জানিয়েছে, জিয়ানে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বেশ কিছু মানুষ খাদ্য সংকটে পড়ে বিনিময় প্রথার মাধ্যমে খাদ্যদ্রব্য কিনছেন। প্রায় এক কোটি তিরিশ লক্ষ মানুষ গত ২৩শে ডিসেম্বর থেকে কোয়ারেন্টাইনের কবলে পড়ে ঘর থেকে বেরোতে পারছেন না।
চীনে নতুন করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে দেশটির প্রশাসন। ফলে, ঘর ছেড়ে বাইরে যেতে পারছেন না বাসিন্দারা। বর্তমানে বিধিনিষেধ এমন কঠোর করা হয়েছে যে, খাবার কেনার জন্যও কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারছেন না।
যদিও জিয়ানের প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ মানুষের বাড়িতে বিনামূল্যে খাদ্য পৌঁছে দিচ্ছে, সামাজিক মাধ্যমে নানা অভিযোগ উঠে আসছে, যার মধ্যে পরিমাণের অপ্রতুলতা এবং এমন কি না পাওয়ার অভিযোগও আছে। সামাজিক মাধ্যমের ছবিগুলিতে দেখা গেছে কোনও মানুষ সিগারেটের বদলে বাঁধাকপি কিনছেন অথবা স্মার্টফোনের বিনিময়ে চাল কিংবা ডিশওয়াশিং লিকুইড দিয়ে আপেল। স্যানিটারি প্যাডের বদলে অল্প পরিমাণ সবজি কেনা হচ্ছে, এমন দৃশ্যও দেখা গেছে।
"একই আবাসনের মধ্যে মানুষ একে অপরের সঙ্গে জিনিষ বিনিময় করছেন, কারণ তাঁদের কাছে যথেষ্ট খাদ্যদ্রব্য নেই," ওয়াং নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা রেডিও ফ্রি এশিয়াকে বলেছেন।
এই সংবাদসংস্থার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর একজন মানুষ তাঁর স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের বিনিময়ে চাল কিনতে চেয়েছেন।
একজন উইবো ব্যবহারকারী বলেছেন, অসহায় নাগরিকরা বিনিময় প্রথার যুগে পৌঁছেছে। তুলার সোয়াবের জন্য অনেকে আলু বিনিময় করছেন। অন্য একজন জিয়ানের এমন ঘটনাকে ‘প্রাচীন সমাজে প্রত্যাবর্তন’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তবে অনেকে এখনও আশাবাদী। অনেক প্রতিবেশী নিজেদের খাবার অন্যদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। আর এমন ঘটনা ছুঁয়ে গেছে অনেকের হৃদয়।
চীনে বর্তমানে করোনার যে প্রকোপ চলছে, জিয়ানকে তার মূল কেন্দ্র বলা যায়। এর মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন যে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে, তা অনলাইনে যথেষ্ট সমালোচিত হচ্ছে।