World
আমেরিকা, ইউরোপে সাইবার আক্রমণের অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে
ওয়াশিংটন ডিসি/লন্ডন/বেইজিং, আগস্ট ৯: সম্প্রতি বিবিসি একটি বিবৃতিতে জানায়, চলতি বছরের শুরুতে চীন প্রায় ৩০ হাজার প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালায় বলে দাবি করছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলো। মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জ সার্ভারে এই হামলা হয়েছে চীনা ভূখণ্ড থেকে।
যুক্তরাজ্য বলছে, ব্যক্তিগত ও বুদ্ধিবৃত্তিক তথ্য নেয়ার জন্য এমনটি করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী অন্তত ৩০ হাজার প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
চীনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউ কে, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, জাপান এবং ন্যাটোর অন্যান্য সদস্যরাও।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে একটি প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সমস্ত সাইবার আক্রমণগুলির সঙ্গে অ্যাডভান্সড পারসিসটেন্ট থ্রেট ৪০ এবং অ্যাডভান্সড পারসিসটেন্ট ৩১ (সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের দেওয়া নাম) নামের পরিচিত হ্যাকিং সংগঠনগুলির যোগ আছে। ইউনাইটেড কিংডমের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার (এন সি এস সি) বলেছে, এপিটি ৪০ সংগঠনটি আমেরিকা এবং ইউরোপের সমুদ্রপকূলবর্তী শিল্প এবং নৌ প্রতিরক্ষাকে নিশানা করেছে।
অন্যদিকে এপিটি ৩১ ২০২০ সালে আক্রমণ করেছে ফিনল্যান্ডের পার্লামেন্ট সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে।
একটি প্রেস বিবৃতিতে এনসিএসসি-র ডিরেক্টর অফ অপারেশন্স পাল শিচেস্টার বলেছেন, "মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জের উপর এই ধরণের সাইবার হামলা চীনের রাষ্ট্রীয় মদতে যারা কাজ করছে, তাদের অপকর্মের আর একটি উদাহরণ।"
ক্যালিফোর্নিয়ার ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি রেন্ডি গ্রোসম্যান জানিয়েছেন, চীন কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিশানা করে হ্যাকিং অভিযান চালিয়ে আসছে। চীনের তরফ থেকে অবশ্য এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়, চীনসংশ্লিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান হাফনিউম গত জানুয়ারিতে এ হামলা শুরু করে। সে সময় মাইক্রোসফট এক্সচেঞ্জের সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে হ্যাকাররা। পরে আবার সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়েও দেয়।
যুক্তরাজ্যের অভিযোগ, এর মাধ্যমে মূলত বড় পরিসরে গুপ্তচরবৃত্তি শুরু হয়েছে। ব্যক্তিগত তথ্য ও মেধাসত্ত্ব চুরিও এর আওতায় পড়েছে।
পশ্চিমের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ধারণা, গুপ্তচরবৃত্তি থেকে অনেকটা সরে গিয়ে এখন সাইবার হামলার মাধ্যমে সরাসরি আক্রমণ ও তথ্য চুরিকে লক্ষ্য করেছে চীন। তাদের সঠিক উদ্দেশ্য অবশ্য এখনও স্পষ্ট হয়নি।
এই ঘটনার পর চীনের বিরুদ্ধে সাইবার অপতৎপরতাবিষয়ক অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
এ ধরনের হামলা নিরাপত্তা ঝুঁকির পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটোর সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।