World
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধাচারণ পাকিস্তানের, চির ধরলো ইসলামাবাদ-রিয়াদ সম্পর্কে
সূত্র মারফত জানা গেছে যে কাশ্মীর ইস্যুতে রিয়াদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলাতে এই পরিণতি হয়েছে ইসলামাবাদের।
সম্পর্কের হাল দ্রুত ফেরাতে তাই রিয়াদ সফর এ পাক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানের ঘোরতর প্রতিবাদ যাতে সৌদি আরব করে সেটা পাকিস্তান বলতেই এই সম্পর্কে চির ধরে।
এর ফলস্বরূপ রিয়াদের থেকে পাওয়া অর্থনৈতিক সাহায্য তেও এখন ভাটা পড়েছে ইসলামাবাদের।
এই সফর নিয়েও ভিন্ন সুর শোনা যাচ্ছে পাক অন্দরমহলে। যেখানে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র এটিকে 'বিভিন্ন সামরিক বিষয় নিয়ে আলোচনা' করার জন্য সফর বলে তুলে ধরেছেন, অপরদিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও সরকারের কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, পরিস্থিতি শান্ত করতেই সেনাপ্রধান সৌদি সফরে গেছেন।
বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই বলেছেন যে রিয়াদ অর্থ সহায়তা ও ঋণ বন্ধ করে দিয়েছে। সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্ত ইসলামাবাদের জরাজীর্ণ অর্থনীতিকে আরো বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও। অগত্যা, পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টায় রিয়াদ সফর করছেন কামার জাভেদ বাজওয়া।
সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সোমবার রিয়াদে অবতরণ করার পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন সৌদি আরবের চিফ অব জেনারেল স্টাফ মেজর জেনারেল ফায়াদ বিন হাম্মাদ আল-রুওয়ালি।
পাকিস্তান অভিযোগ তোলে যে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতকে যথেষ্ট চাপ দিচ্ছে না সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি।
এই অভিযোগ যে খুব একটা গ্রহণযোগ্য হয়নি তা রিয়াদ বোঝায় ইসলামাবাদকে দেওয়া ঋণ ও জ্বালানি তেলের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ঘটনাটি কে দুই মিত্র দেশের সম্পর্কের অবনতির নতুন মাইলফলক হিসেবে ভাবা যেতে পারে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন যে রিয়াদের ভারতের প্রতি এই আচরণে জড়িয়ে আছে ব্যবসায়িক স্বার্থ। ভারত শুধু পাকিস্তানের থেকে অর্থনীতিতেই বড়ো না, সৌদি আরবের অনেক ব্যবসাই আছে ভারতে, যা তারা ঝুঁকির মুখে ফেলতে চান না।
এ ছাড়া শত্ৰু দেশ ইরানের বেইজিংয়ের উচ্চভিলাসী প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে নির্মিত চীন-পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডোরে অন্তর্ভূক্তিও ভালো চোখে দেখছে না রিয়াদ।
২০১৮‘র নভেম্বরে সৌদি আরব পাকিস্তানকে ৬২০ কোটি ডলারের ঋণ বরাদ্দ করে। প্যাকেজটিতে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ এবং ৩২০ কোটি ডলারের ওয়েল ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ছিল। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পাকিস্তানে সফরের সময় সেসব চুক্তি সই হয়।