World
রোহিঙ্গা সংকট অবসানে নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবার প্রস্তাব পাস
নিউইয়র্ক, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ : মিয়ানমারে সহিংসতার অবসান এবং দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিসহ সব রাজবন্দির মুক্তির আহ্বান জানিয়ে গত ৭৪ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাজ্যের আনা এই প্রস্তাব ১২-০ ভোটে গৃহীত হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা সঙ্কটের নেপথ্যের সব কারণ চিহ্নিত এবং তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবসনের অনুকূল পরিবেশ তৈরির আহ্বানও জানানো হয়েছে।
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন মিয়ানমারের নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় দেশটি সামরিক বাহিনী। অভ্যুত্থানের পরপরই সু চিসহ তার দলের জ্যেষ্ঠ অনেক নেতা, সরকারি উচ্চপদস্থ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে জান্তা সরকার।
এরপর থেকেই দেশটিতে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন করে আসছেন দেশটির গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক। জান্তা সরকার ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন ও গণতন্ত্রকামীদের বিক্ষোভ গুঁড়িয়ে দিতে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার ও বলপ্রয়োগ করছে বলে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর তিনমাস ধরে আলোচনার পর বুধবার ১২-০ ভোটে যে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছে, সেটি উপস্থাপন করেছিল যুক্তরাজ্য। এই প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনও সদস্য ভোট দেয়নি। এমনকি নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী কোনও সদস্যও ভেটো দেয়নি। তবে ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে চীন, ভারত ও রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল।
ব্রিটেনের উপস্থাপিত প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত বারবারা উডওয়ার্ড বলেছেন, ‘আমরা আজ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে একটি দ্ব্যর্থহীন বার্তা দিয়েছি। এ নিয়ে তাদের কোনও সন্দেহ থাকা উচিত নয়। আমরা আশা করছি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই প্রস্তাব পরিপূর্ণ রূপে বাস্তবায়ন করবে।’
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে উডওয়ার্ড বলেছেন, ‘আমরা মিয়ানমারের জনগণের কাছেও একটি পরিষ্কার বার্তা পাঠিয়েছি। আমরা তাদের অধিকার, তাদের ইচ্ছা এবং তাদের স্বার্থের জায়গাগুলোতে উন্নতি চাই।’
মিয়ানমারের সংকট কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভক্তি রয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। মিয়ানমারের অন্যতম ঘনিষ্ঠ দুই মিত্র চীন এবং রাশিয়া দেশটির বিরুদ্ধে যেকোনও ধরনের শক্তিশালী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছে। বুধবার যে ভোটাভুটি হয়েছে, তাতে অংশ নেয়নি চীন, রাশিয়া ও ভারত।