World
বাংলাদেশে আসার পথে ইউক্রেনীয় বিমান বিধ্বস্ত
এথেন্স, ১৮ জুলাই ২০২২: সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে আসার পথে একটি ইউক্রেনীয় কার্গো বিমান উত্তর-পূর্ব গ্রিসে বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানটির বিষয়ে গ্রিসের এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাস নজর রাখছে। উদ্ধার কাজের সুবিধার্থে সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া দুর্ঘটনাস্থলটির দূরত্ব এথেন্স থেকে অনেক বেশি।
এথেন্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ জানান, সার্বিয়া থেকে কার্গোটির যাওয়ার কথা ছিল সৌদি আরবের রিয়াদে। সেখান থেকে এটি ভারতের আহমেদাবাদ হয়ে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এটি উত্তর-পূর্ব গ্রিসে বিধ্বস্ত হয়ে উড়োজাহাজে থাকা আট ক্রুর সবাই মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি।
সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশে আসার জন্য ইউক্রেনীয় কার্গো বিমানটির বিষয়ে তথ্য থাকার কথা ইতালির বাংলাদেশ দূতাবাসের। কেননা সার্বিয়ার বিষয়ে দেখভালের দায়িত্ব রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের। যেহেতু কার্গোটি সার্বিয়া হয়ে গ্রিসে এসে বিধ্বস্ত হয়েছে, রোমের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এথেন্স দূতাবাসে কোনো যোগাযোগ করেছে কি না, জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত আসুদ আহমেদ বলেন, ইতালি থেকে এখনও কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। তবে আমরা ফলো করছি। যোগাযোগ রাখছি। আপডেট নেওয়ার চেষ্টা করছি।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, ডিজিডিপি (ডাইরেক্টরেট জেনারেল অফ ডিফেন্স পারচেজ) ক্রয় চুক্তির আওতায় কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সার্বিয়া থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের জন্য ক্রয়কৃত প্রশিক্ষণ মর্টার শেল আনা হচ্ছিল। ওই চালানে কোনো অস্ত্র ছিল না এবং চালানটি বিমার আওতাভুক্ত।
ড্রোনে তোলা দুর্ঘটনাস্থলের ছবিতে দেখা যায়, গ্রিসের কাভালা শহরের প্রত্যন্ত একটি এলাকার মাঠে আছড়ে পড়েছে অ্যান্তনোভ অ্যান-১২ কার্গো বিমানটি। গ্রিক কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিমানটিতে মোট ৮ জন ক্রু ছিলেন। ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ৮ ক্রুর সবাই ইউক্রেনের নাগরিক।
সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা কারখানায় তৈরি সাড়ে ১১ টন পণ্য পরিবহন করছিল ববিমানটি। আর এই পণ্যের ক্রেতা ছিল বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তিনি বলেছেন, বিমানের ক্রুরা সবাই মারা গেছেন।
গ্রিসের কর্তৃপক্ষ বিধ্বস্ত এই কার্গো বিমানের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি। তবে বিমান বিধ্বস্তের এই ঘটনা তদন্তের জন্য দুর্ঘটনাস্থলে বিশেষ দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং সামরিক বিশেষজ্ঞদের মোতায়েন করেছে দেশটি।
সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নেবোজসা স্টেফ্যানোভিস বলেছেন, বিধ্বস্ত কার্গো বিমানটতে মর্টার শেল এবং প্রশিক্ষণ শেল ছিল। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৈরি সাড়ে ১১ টন পণ্য পরিবহন করছিল বিমানটি।
সার্বিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল ইআরটি বলেছে, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পাইলট গ্রিসের এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি অবতরণের অনুমতি চাওয়ার পরপরই রাডারের সঙ্গে বিমানটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।