Bangladesh

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মাঝে দ্বিতীয় দিনে জামাতের হরতাল

বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মাঝে দ্বিতীয় দিনে জামাতের হরতাল

| | 14 Aug 2013, 01:44 pm
ঢাকা, অগাস্ট ১৪: জামাত-এ-ইসলামীর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল বুধবার দ্বিতীয় দিনে প্রবেশ করে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের মাঝে।

 নানা জায়গা থেকে আসে জামাত-শিবিরের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের খবর।

 
তবে, মঙ্গল্বারের তুলনায় বুধবার রাস্তায় অনেক বেশী যানবাহন দেখা যায়। 
 
ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বুধবার পুলিশের সাথে সংঘর্ষে এক ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা প্রাণ হারায়, পুলিশ জানায়।
 
ইসলামী ছাত্র শিবির হল জামাত-এ-ইসলামীর ছাত্র সংগঠন।
 
মৃতের নাম খালিউর রহমান। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন ওয়ার্ড ৮৮র সভাপতি ছিলেন।
 
 স্থানীয় বাসিন্দারা জানান এই সংঘর্ষে বাংলাভিশন টিভির এক ক্যামেরাম্যান সহ অনেকে আহত হন।
 
   শিবির কর্মীরা সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বিনা অনুমতিতে এক মিছিল বের করে ও দুইটি হাতবোমা বিস্ফোরণ করে। 
 
ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রবারের বুলেট ছোঁড়ে। রহমান সেই বুলেটের ঘায়ে মারা যান, জানায় স্থানীয় লোকেরা।  
 
জামাত-এ-ইসলামীর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয় মঙ্গলবার সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে, পুলিশ জানায়।
 
হরতালকারীরা যানবাহন ভাংচুর করে, নানান রাস্তা অবরোধ করে ও হাতবোমা বিস্ফোরণ করে।
 
মঙ্গলবার ছয়টায় শুরু হওয়া এই হরতাল চলবে বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত।
 
জামাত পয়লা অগাস্ট দেশব্যাপী এই হরতালের ডাক দেয় তার রেজিস্ট্রেশন অবৈধ ঘোষণা করার প্রতিবাদে।
 
 উচ্চ আদালত অগাস্ট ১ জানায় নির্বাচন কমিশনের সাথে করা জামাত-এ-ইসলামীর রেজিস্ট্রেশন অবৈধ। 
 
উচ্চ আদালতের তিন-সদস্যের একটি বেঞ্চ এই রায় শোনায়। 
 
তিন জনের মধ্যে দুইজন জামাতকে অবৈধ ঘোষণা করে। তৃতীয় বিচারক এই রায়ে তাঁর অসন্মতি প্রকাশ করেন।  
 
 উচ্চ আদালত জামাত-এ-ইসলামীর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার আবেদন নিয়ে দায়ের করা একটি রিট পিটিশনের ওপর তার রায় শোনায়। 
 
জুনের ১২ তারিখে হাই কোর্ট জানায় যে কোন দিন জামাত-এ-ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ওপর রায় শোনানো হবে।
 
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামাতের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে একটি রিট পিটিশন ফাইল করা হয়। 
 
 তিন-সদস্যের এই বেঞ্চ জুনের ১২তে সেই পিটিশনটি শোনার পর এই রায় দেন।  
 
বাংলাদেশ তারিকাত ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রেজানুল হক চাঁদপুরি ও অন্যান্য ২৪জন জামাতের রেজিস্ট্রেশনের বৈধতার প্রশ্ন তুলে একটি পিটিশন দায়ের করেন জানুয়ারি ২৫, ২০০৯-এ।
 
এই বছর এপ্রিলে, এই পিটিশন শুনানির সময় ব্যারিস্টার তানিয়া আমির বলেন নির্বাচন কমিশন অবৈধভাবে জামাত-এ-ইসলামীকে রাজনৈতিক দল হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করেছে।
 
জুন ১২ জামাতের রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধতা নিয়ে সেই পিটিশনের শুনানির তৃতীয় দিন ছিল। 
 
 তানিয়া পাকিস্তানের উদাহারণ দিয়ে বলেন সেখানকার নির্বাচন কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ধর্মকে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যাবহার করতে নিষিদ্ধ করেছে যদিও সেই দেশে ধর্মনিন্দার বিরুদ্ধে একটি আইন আছে।
 
"কিন্তু বাংলাদেশে জামাতের রেজিস্ট্রেশন করা আছে যদিও এরা ধর্মকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করে," তানিয়া বলেন।
 
পরে হাই কোর্টের বেঞ্চ - জাস্টিস এম মোয়াজ্জাম হোসেন, জাস্টিস এনায়েতুর রহিম ও কাজী রেজা-উল হক - শুনানি মুলতুবী করেন।
 
মার্চে বাংলাদেশ সরকার জানান যে তারা জামাতকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব নিয়ে রীতিমত চিন্তাভাবনা করছেন। 
 
পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেনঃ "জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নিয়ে সরকার নিশ্চিতরূপে বিবেচনা করছে।"
 
জামাতকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে দীপু মনি আগেও সরকারের পক্ষ থেকে সরব হয়েছেন।