Bangladesh

Ansari Funeral: Was Brahmanbaria crowd gathering previously planned?

Ansari Funeral: Was Brahmanbaria crowd gathering previously planned?

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 30 Apr 2020, 06:04 am
ঢাকাঃ  লকডাউনের ভেতর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা আনসারী হুজুরের জানাজায় বহু মানুষের উপস্থিতির ঘটনা বেশ চাঞ্চল্যকর লেগেছিল মানুষের কাছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মাটিতে করোনাভাইরাসের থাবা বসানোয় আতঙ্ক ছড়িয়েছে আর তার মাঝে এমন ঘটনা ছিল অবাক করবার মত।

তবে, এই মানুষ জমায়েত হওয়ার বিষয়টিকে ভেতরে ঢুকলে উত্তরটা বেশ অন্যরকম পাওয়া যাবে।

 

ওয়াটসাপের একটি অডিও ফোন আলাপ ফাঁস হওয়ার পরে এই জমায়েতের বিষয় আরও অদ্ভুত কিছু তথ্য উঠে এসেছে।

 

জামাতের আমির শফিকুর রহমান ও মুফতি মাহফুজুল হকের মধ্যে টেলিফোনে যে কথোপকথন হয় তার থেকে বেশ অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাচ্ছে।

 

জামাতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, কি অবস্থা ওদিকে ও তার উত্তরে  মাহফুজুল হক বলেনঃ "সবাইকে বলে দেয়া হয়েছে, ইনশাআল্লাহ ভালো মানুষের জমায়েত হবে।"

 

এমনটাই নিজেদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভোরের কাগজ নামের পত্রিকা।

 

" শুধু ভালো জমায়াত হলে হবে না। অনেক মানুষ যেন হয়, আনসারী হুজুরের জানাজা পুরো দুনিয়ার মানুষ দেখবে। লকডাউন পগডাউন পাত্তা দিয়েন না," শফিকুর রহমান বলেন।

 

উত্তরে মুফতি মাহফুজুল হক বলেনঃ "জি সাহেব, মাদ্রাসার আশপাশের লোকজন সবাই থাকবে।"

 

রহমান বলেনঃ "আমেলি সাহেবের ছেলের সাথে কথা হয়েছে, উনিও লোক দিবে লোক আসবে চিন্তার কিছু নেই। আমাদের নেতাকর্মীরাও যাবে। সব মাদ্রাসায় বলেদেন সবাইকে চলে আসতে। আপনাদের মাদ্রাসায় চাপ দেন হুজুরের জানাজার সবাই যেন উপস্থিত থাকে।"


লক ডাউন ও পুলিশের প্রসঙ্গ হক তোলার উত্তরে উনি বলেনঃ "আরে ধুর বাদ দেন, এত লোক আসতে শুরু করলে পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। একটা থানা বা ফাঁড়িতে কয়টা পুলিশ থাকে। হাজার হাজার মানুষ আসতে শুরু করলে পুলিশ কিছুই করতে পারবে না। আর আমাদের ছেলেরা তো থাকবেই। কিছু করলে ওরা সামাল দেবে। আপনারাও প্রস্তুত থাকেন।"

 

এই টেলিফোন কথোপকথন যদি সত্যি হয় তবে অনেক বিষয় এখন পরিষ্কার হচ্ছে এই জানাজার বিষয়।

 

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক যদিও পরে এই  টেলিসংলাপটি সম্পূর্ণ ভুয়া বলে জানিয়েছেন।

 

যে টেলিসংলাপটি প্রচার করা হয়েছে সেটি ইঙ্গিত দেয় জনসমাগম ছিল পূর্বপরিকল্পিত এবং এতে জামায়াতের ইন্ধন আছে এবং তাতে পরিষ্কার যে বিএনপি এই বিষয় অবহিত ছিল।

 

  ভোরের কাগজ পত্রিকায় যে সংলাপের অংশ বিশেষ প্রকাশিত হয়েছে তাতে  রহমানকে বলতে শোনা যাচ্ছে: "ঠিকমতো বলেন, সবাইকে আসার জন্য পুলিশ/ বিজিবি কিছুই করতে পারবেনা। এই সরকারকে একটু উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার আর বাধা দিলে সারাদেশে মতিঝিলের থেকেও খারাপ অবস্থা করব। নারায়ণগঞ্জ চট্টগ্রাম শহর সব জায়গায় বলে রাখছি তারা প্রস্তুত আছে। ফখরুল সাবোও জানেন বিষয়টা আর বিএনপির লোকজন থাকবে। আপনি সবাইরে ফোন দেন সবাইরে জানান।"

 

ফেসবুকে ইথিকাল হ্যাকিং নামের একটি পেজে অডিওটি প্রকাশ করা হয়। পোস্টে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাহফুজুল হক ও জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের ছবি যুক্ত করা হয়েছে এতে, প্রথম আলো জানিয়েছে।

 

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজার নামাজে লাখো মানুষের অংশ নেয়।

 

শনিবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মো. মুসা মুঠোফোনে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

 

জানাজা মাদরাসা মাঠ ছাড়িয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশে ছড়িয়ে যায়। এছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদেও মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। সেখানে পুলিশ পৌঁছালেও ছিল নীরব ভূমিকায়।


এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মাসুদ রানা জানান, সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু জনসমাগম কমাতে পারেনি। হুজুরদের বুঝিয়েছি।

 

মানুষজন সচেতন না হওয়ায় এমনটি করেছে।


জানাজার নামাজে ইমামতি করেন জুবায়ের আহমেদ আনসারির ছেলে হাফেজ মাওলানা আসাদ উল্লাহ।


উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল বিকাল পৌনে ৬টায় জেলা শহরের মারকাজ পাড়ায় নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন খেলাফত মজলিশের এই নেতা।


মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৯ বছর। তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে, ৪ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।


জুবায়ের আহমদ আনসারির বাড়ি জেলার নাসিরনগরের হরিপুর ইউনিয়নের আলিয়ারা গ্রামে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ওই এলাকা থেকে ১৯৯৬ সালে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।