Bangladesh
Bangladesh turns 48
আজ ২৬ মার্চ, বাংলাদেশের ৪৮তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পরাধীনতার গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি শাসক ও সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে। সেই সংগ্রামে জীবন দিয়েছেন ৩০ লাখ শহীদ, সম্ভ্রম হারিয়েছিলেন দুই লাখ মা-বোন।
বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয় লাল-সবুজের এ বাংলাদেশ। সেদিনের সংগ্রাম শুধু পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার নয়, ছিল অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামেরও। কারণ ওই সময়ে অর্থনৈতিক শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্য ছিল চরমে। ক্ষুধা, অপুষ্টি, স্বাস্থ্যহীনুাসহ নানা কারণে আয়ুষ্কালও ছিল অনেক কম।
শিক্ষার হার ছিল নিম্নপর্যায়ে। কর্মসংস্থানও ছিল না পর্যাপ্ত। এমন দশায় যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ একসময় ঘুরে দাঁড়াবে ভাবতে পারেনি অনেকেই। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অদম্য বাঙালির ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের ফলে উন্নয়নের বিস্ময় এখন বাংলাদেশ।
বেড়েছে মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক ডলারের রিজার্ভ। কমেছে শিশু মৃত্যুর হার। বেড়েছে গড় আয়ু ও মানবসম্পদের সূচকও অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বেড়েছে অর্থনীতির আকার সমৃদ্ধশালী হচ্ছে আমাদের অর্থনীতি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রথম বাজেটের আকার ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছরের বাজেটের আকার চার লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। যা স্বাধীনতার পর প্রথম বাজেটের তুলনায় প্রায় ৬০০ গুণ বড়।
অর্থনীতির আকারে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। উন্নয়ন অগ্রগতির ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৩৩ সাল নাগাদ বিশ্বের শীর্ষ ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের তালিকায় নাম লেখাবে বাংলাদেশ।
৪৮ বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় ১৮ গুণ। ১৯৭১ সালের পর দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১০০ ডলারের মতো। এখন তা ১৯০৯ ডলার। শুধু মাথাপিছু আয় নয়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭১ সালে দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ছিল ৮ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার। আর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ তিন হাজার ১৪৯ কোটি ডলার।