Bangladesh
Barrister Rafique-ul Haque dies
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৪ অক্টোবর ২০২০: সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
শনিবার দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে তার তৃতীয় ও শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে রফিক উল হকের মরদেহ বনানী কবরস্থানে দাফনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। স্ত্রী ডা. ফরিদা হকের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হন তিনি।
রক্ত শূন্যতা ও প্রস্রাবের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতা দেখা দেয়ায় গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তখন তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। গত শনিবার (১৭ অক্টোবর) তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করলে সকালের দিকে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরে যান। এরপরে দুপুরের পরপরই ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
জানা গেছে, রক্তশূন্যতা, ইউরিন সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন প্রবীণ এই আইনজীবী। তিনি ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
২০১৭ সালে বাম পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়ে। এ কারণে গত ৩ বছর ধরে তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেননি।
বয়োবৃদ্ধ খ্যাতিমান এ মানুষটির জীবনের শেষ সময়গুলোর বেশিরভাগই কেটেছে বিছানায় শুয়ে। চলাফেরা করতেন হুইল চেয়ারে।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল)।
তিনি ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় পার করেছেন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বিভিন্ন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুই নেত্রী যখন কারাগারে তখন তাদের জন্য অকুতোভয়ে আইনি লড়াই করেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে দুই নেত্রীর সমালোচনা করতেও পিছপা হননি তিনি। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।