Bangladesh
Chittagong: Fire in slum leaves 8 charred to death
জীবন্ত দগ্ধ হয়েছেন তিন পরিবারের আটজন। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিটের ১০টি গাড়ি প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে পারলেও ভেড়া মার্কেট বস্তির হাজার খানেক বাসিন্দা সর্বস্ব হারিয়ে এখন হতবিহ্বল।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের সুরুজ মিয়ার স্ত্রী রহিমা আক্তার (৫৫) ওই বস্তিতে বসবাস করে আসছিলেন এক যুগের বেশি সময় ধরে। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর ওই বস্তিরই আরেক ঘরে থাকতে শুরু করেন। তিন মেয়ে নাজমা আক্তার (১৬), নার্গিস (৯) ও নাসরিন (৫) এবং ছেলে জাকিরকে (১০) নিয়ে বস্তির দুটি ঘরে ছিল রহিমার সংসার। বস্তির পাশে একটি দোকান চালাতেন তিনি। রহিমার ছোট ভাই পেশায় শ্রমিক মো. আকবরও একই কলোনিতে ভাড়া থাকেন। ভোরের আগুনে ঘর পুড়লেও প্রাণে বেঁচে গেছেন আকবর ও তার স্ত্রী।
কিন্তু এক মেয়েকে কোনোমতে বাইরে এনে অন্য সন্তানদের আনতে জ্বলন্ত ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন রহিমা। কয়েক ঘণ্টা পর ওই ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ রহিমার পোড়া লাশ।
রাতে ঠিক কী ঘটেছিল তার বিবরণ পাওয়া যায় রহিমার বেঁচে যাওয়া মেয়ে নার্গিসের কথায়। সে বলে, ‘ঘুম ভেঙে দেখি আম্মা ঘরের ভেতর ছুটোছুটি করতেছে। পরে আমার ভাই দরজা ভেঙে আমাকে কোনো রকমে বের করে দেয়। আম্মাও তখন ঘর থেকে বের হয়ে আসে। কিন্তু নাসরিনকে আনতে আবার ঘরের ভেতরে ঢোকে। আর বের হতে পারেনি। ডাকাডাকি করেও কোনো আওয়াজ পাইনি।’
স্থানীয়রা জানান, রহিমার বড় মেয়ে নাজমা ঘরের কাজকর্ম করতেন। আর জাকির স্থানীয় একটি স্কুলে পড়ত।
রহিমার ঘরের কাছেই ছিল স্বামী পরিত্যক্তা আয়েশা আক্তারের (৩৭) ঘর। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর আয়েশা ও তার বোনের ছেলে সোহাগের (১৯) পোড়া লাশ উদ্ধার হলেও তার নিজের মেয়ে ঋতু আক্তারের (১২) কোনো খোঁজ পাননি স্বজনরা।
বাকলিয়া থানাধীন চাক্তাই ভেড়া মার্কেট সংলগ্ন রাজাখালী খালের পাড় এবং কর্ণফুলী নদী তীর সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কের লাগোয়া জমিতে ওই বস্তিতে ছিল দুই শতাধিক ঘর। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী কয়েকজন টিনের ছাউনি আর বেড়ার ছাপড়া দিয়ে এসব ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছিলেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের কাছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন জানিয়েছেন, আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। নিহদের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকের পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।