Bangladesh

ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা : ডিএমপি কমিশনার

ট্রাফিক আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা : ডিএমপি কমিশনার

| | 04 May 2016, 05:48 am
ঢাকা, মে ৪-বুধবার ডিএমপির মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগে রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বিপিএম,পিপিএম বলেন-একটি আদর্শ শহরে যানবাহন চলাচলের জন্য ২৫% রাস্তা প্রয়োজন।

অথচ ঢাকা শহরে রাস্তা আছে মাত্র ৮% এর মতো। ঢাকা শহরের রাস্তায় তিন লক্ষ যানবাহন সংকুলান হলেও যানবাহনের প্রকৃত সংখ্যা প্রায় তিন গুন। অপ্রতুল এই সড়কে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল, একই সড়কে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যান চলাচল, অপর্যাপ্ত পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত গণপরিবহণের অভাব, সর্বোপরি ট্রাফিক আইন অমান্যের কারণে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং সড়ক দূর্ঘটনা ঘটছে, উনি বলেন।


তিনি বলেন-ঢাকা মহানগরীতে প্রায় ৪,০০০ ট্রাফিক পুলিশ সদস্য যানজট নিরসনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ রাস্তায় ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও দূর্ঘটনা রোধে নতুন নতুন কৌশল উদ্ভাবনসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিবিড় তদারকি করছে। 


ঢাকা মহানগরীতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনয়ন এবং ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ দ্বারা বিভিন্ন যানবাহন কর্তৃক ট্রাফিক আইন লংঘন এর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গৃহীত হচ্ছে।


তিনি আরও বলেন-ঢাকা মহানগরীতে মোটর সাইকেল ব্যবহার করে বিভিন্ন অপরাধজনক কর্মকান্ড সংঘটিত হয়ে থাকে। এছাড়া মোটর সাইকেলের ট্রাফিক নিয়ম লংঘনের কারণে যানজট সৃষ্টিসহ দূর্ঘটনা ঘটে থাকে। 


গত এপ্রিল  ২৪ হতে মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।


 রেজিস্ট্রেশন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন, মোটর সাইকেলে ০২ জন এর বেশী আরোহণ, হেলমেট বিহীন, উল্টোপথে, ফুটপাতে এবং হেড ফোন ব্যবহার করে মোটর সাইকেল চালানোসহ ট্রাফিক আইনভঙ্গকারী সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক গত এপ্রিল ২৪ হতে মে ২ তারিখ পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে মটরযান আইনের বিভিন্ন ধারায় মোট ৯,৮৫১ টি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য যানবাহনের বিরুদ্ধে ২১,৪১৫ টি মামলা রুজু হয়েছে।



"গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার দন্ডনীয় অপরাধ। হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহারের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে ৪০৭ টি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ব্যবহৃত হাইড্রোলিক হর্ণগুলো জব্দ করা হয়েছে," কমিশনার
বলেন।

"গাড়িতে হুটার/বিকন লাইট ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
গাড়িতে ‘পুলিশ/ডিএমপি/সাংবাদিক/ এ্যাডভোকেট ইত্যাদি লেখা স্টিকার ব্যবহার ঃ
ক্স পুলিশের সকল প্রকার যানবাহনসহ পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত গাড়িতে ‘পুলিশ/চড়ষরপব’ বা ‘ডিএমপি/উগচ’ লেখা স্টিকার ব্যবহার না করার জন্য ইতোমধ্যে সার্কুলার জারি করা হয়েছে এবং এ ধরণের স্টিকার ব্যবহারকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে," উনি বলেন।


"মাইক্রোবাস ব্যবহার করে নানা রকম অপরাধ কর্মকান্ড সংঘটিত হয়ে থাকে। বিশেষ করে অস্বচ্ছ কাঁচ/টিন্টেড পেপার ব্যবহার অপরাধ সংঘটনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এজন্য মাইক্রোবাসে ইঁরষঃ-রহ রঙ্গিন কাঁচ ব্যতীত অননুমোদিতভাবে রঙ্গিন ঞরহঃবফ ঢ়ধঢ়বৎ লাগানো থাকলে সংশ্লিষ্ট মাইক্রোবাসের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 
উল্টো পথে গাড়ি চালনা রোধে ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক বিশেষ ব্যবস্থা গৃহীত হচ্ছে," উনি বলেন।


কমিশনার বলেনঃ " যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তায় যত্রতত্র পার্কিং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে।"


রিক্সা মুক্ত রাস্তায় রিক্সা চলাচল বন্ধ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।


"বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বাস/লঞ্চ টার্মিনাল, মার্কেট প্লেসে ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন রকম জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে।জাতীয় সংসদ সচিবালয় হতে প্রদত্ত স্টিকার মাননীয় সংসদ সদস্যদের নিজেদের ব্যবহৃত গাড়ি ও তাদের পরিবারের গাড়ি, সংসদে কর্মরত অন্যান্য সংস্থার গাড়ি, সংসদ সচিবালয়ের নিজস্ব গাড়ি এবং সংসদ সচিবালয় ও সংসদ সচিবালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগ/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ব্যক্তিগত গাড়িতে ব্যবহৃত হবে," উনি বলেন।


কশিনার বলেন,"যানজট নিরসন ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। তবে গণসচেতনতা বৃদ্ধি ও জন সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের একক প্রচেষ্টায় সফলতা অর্জন সম্ভব নয়। আমরা ঢাকা মহানগরীর সম্মানিত সকল নাগরিককে ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য আহবান জানাচ্ছি। চালক ভাইদের উল্টোপথে, ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে, দ্রুত গতি গাড়ি না চালানো এবং যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানো-নামানো, রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। পথচারীদের প্রতি ফুটপাত, আন্ডারপাস, এবং ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার এবং যত্রতত্র রাস্তা পার না হওয়ার জন্য আহবান জানাচ্ছি।"


"এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত বিশেষ অভিযানে সবার সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি," উনি বলেন।


অপরাধ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন-জনগণের মাঝে আস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিট পুলিশিং কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। যা অপরাধ নিবারণে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।