Bangladesh
India-Bangladesh joint statement: Teesta agreement to be signed fast
এদিকে, নয়াদিল্লী সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আট বছর আগে দুই দেশের সরকারের সম্মতি অনুযায়ী বাংলাদেশ এ চুক্তি আশু স্বাক্ষরের জন্য গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে।
এর আগে শনিবার ভারতের রাজধানীতে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি (শেখ হাসিনাকে) অবহিত করেছেন যে তার সরকার ভারতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নিয়ে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে চুক্তিটি সম্পাদনের জন্য কাজ করছে।’
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে দুই সরকারের সম্মতি অনুযায়ী তিস্তা নদীর পানি বণ্টনে ‘ফ্রেমওয়ার্ক অব ইন্টেরিম এগ্রিমেন্ট’ আশু স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন-এর জন্য বাংলাদেশের জনগণ অপেক্ষায় রয়েছে বলার পরিপ্রেক্ষিতে মোদি তার বক্তব্য দেন।
বিবৃতি অনুযায়ী দুই প্রধানমন্ত্রী যুগপৎভাবে অপর ছয়টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনেও দ্রুততার সাথে সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত বিনিময় এবং ফ্রেমওয়ার্ক অব ইন্টেরিম এগ্রিমেন্টের খসড়া প্রস্তুত করার জন্য যৌথ নদী কমিশনের কারিগরি পর্যায়ের কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অপর নদীগুলো মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার উল্লেখ করে এতে বলা হয়, দুই নেতা ফেনী নদীর পানি বণ্টনে খসড়া ফ্রেমওয়ার্ক অব ইন্টেরিম এগ্রিমেন্ট সুনির্দিষ্ট করারও নির্দেশ দেন।
মোদির সাথে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতকারে রোহিঙ্গা সমস্যাও উঠে আসে উল্লেখ করে বলা হয়, মোদি এসব বাস্তুচ্যুত লোকদের নিরাপদ, দ্রুত ও স্থায়ীভাবে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের নিজ বাড়ি-ঘরে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত হন।
৫৩-দফা বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিত ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতিসহ তাদের (রোহিঙ্গাদের) ফিরে যাওয়া সুগম করতে আরো বৃহত্তর প্রয়াস গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও তারা (দুইনেতা) একমত পোষণ করেন। এতে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের’ আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, নয়াদিল্লী কক্সবাজারের অস্থায়ী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে বাংলাদেশ সরকারের মানবিক প্রয়াসে সহায়তা করতে পঞ্চম কিস্তি মানবিক সহায়তা সরবরাহ করবে।
মোদি বলেন, সহায়তার এ কিস্তিতে থাকবে তাবু, ত্রাণ ও উদ্ধার সরঞ্জাম এবং মিয়ানমার থেকে আসা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে এক হাজারটি সেলাই মেশিন।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় যে ভারত রাখাইন রাজ্যে এ পর্যন্ত ২৫০টি বাড়ি তৈরির প্রথম প্রকল্প সম্পন্ন করেছে এবং দেশটি এখন ওই এলাকায় অপর একগুচ্ছ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লোকদের প্রয়োজন মোতাবেক সহায়তায় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের মানবিক সহায়তার জন্য ঢাকার কৃতজ্ঞতা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শান্ত, স্থিতিশিলতা এবং অপরাধ মুক্ত সীমান্ত’ নিশ্চিত করতে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যকর এবং যতশিগগির সম্ভব দু’দেশের সকল বাকি স্থানে সীমান্ত বেড়া নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে তাদের নিজ নিজ সীমান্ত বাহিনীকে নির্দেশ প্রদানের ওপর দুই প্রধানমন্ত্রীই গুরুত্বারোপ করেছেন।
দু’নেতাই সীমান্তে বেসামরিক লোকের হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ এবং এ ধরনের সীমান্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা জিরোতে নামিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সীমান্ত বাহিনীকে নির্দেশ প্রদানে সম্মত হন।
দুই নেতা আগামীতে দুটি বর্ষপূর্তি উদযাপনেও পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। যার একটি হচ্ছে- ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং ভারত বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন।