Bangladesh

Khulna resident Akhi among four recognised by UN as Real Life Heroes
সেলাইয়ের কাজে ব্যস্ত আঁখি (ছবি : সংগৃহিত)।

Khulna resident Akhi among four recognised by UN as Real Life Heroes

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 22 Aug 2020, 07:24 am
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২২ আগস্ট ২০২০ : বিশ্ব মানবিক দিবস উপলক্ষে খুলনার রূপসা চরের কিশোরী আঁখিকে (১৭) জাতিসংঘ ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। করোনা মোকাবেলায় কম দামে মাস্ক তৈরি করে গরিব মানুষের কাছে বিক্রি করার কাজই তাকে এই স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। দারিদ্র্যের চরম কষাঘাতে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া আঁখি এখন খুলনার গর্ব।

রূপসা চরের বস্তিতে বসবাসরত মাসুদ মোল্লা ও আনোয়ারা বেগমের দ্বিতীয় মেয়ে আঁখি। মাত্র ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করতে পেরেছে সে।

 

আাঁখি বলে, যখন করোনাভাইরাস শুরু হয়েছিল তখন বাজারে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছিল না। কিছু কিছু দোকানে পাওয়া গেলেও সেগুলোর দাম ছিল অনেক। আমাদের এলাকার দরিদ্র মানুষ সেগুলো কিনতে পারতো না। যখন জানলাম যে করোনা থেকে মুক্ত থাকতে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে তখন আমি নিজেই মাস্ক তৈরি করে কম দামে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যাতে এলাকার দরিদ্র মানুষ মাস্ক পরতে পারে। যাদের একদম টাকা পয়সা নেই তাদেরকে বিনামূল্যে আমার তৈরিকৃত মাস্ক দিয়েছি।

 

আঁখি জানায়, তার বাবা মাসুদ মোল্লা (৪৭) চিংড়ি কারখানায় কাজ করতেন। সেখানে কর্মরত অবস্থায় তিনি দুর্ঘটনার শিকার হন এবং শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন। মা আনোয়ারা বেগমও (৪০) চিংড়ি কারখানায় কাজ করতেন। কিন্তু তার একার রোজগারে সংসার চালান অসম্ভব হয়ে ওঠে। পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর মাকে সাহায্য করার জন্য সে তার বড় বোনের সঙ্গে একটা চিংড়ি কারখানায় কাজে যোগ দেয়। ফলে তার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

 

দুই বছর আগে ওয়ার্ল্ড ভিশন পরিচালিত জীবনের জন্য প্রকল্পের কর্মী আবেদা সুলতানা তাকে চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় কাজ করতে দেখে সেখান থেকে নিয়ে তাকে স্কুলে ভর্তি করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু আঁখির বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় কোনো স্কুলে তাকে ভর্তি করানো যায়নি। অবশেষে আঁখির আগ্রহ দেখে ওয়ার্ল্ড ভিশন পরিচালিত জীবনের জন্য প্রকল্পের মাধ্যমে তাকে সেলাই প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। প্রশিক্ষণ শেষে আঁখি যাতে তার নিজ ব্যবসা শুরু করতে পারে তার জন্য ওই প্রকল্প থেকে তাকে একটি সেলাই মেশিন ও কিছু থান কাপড় দেয়া হয়। শুরু হয় আঁখির পোশাক তৈরির ব্যবসা। ঘরে বসেই এলাকার লোকজনের পোশাক সেলাই করে মাসে গড়ে ৩০০০ টাকা রোজগার করত সে। আঁখির এই রোজগারে তারি পরিবার সুখের মুখ দেখতে শুরু করে।

 

গত ১৯ আগস্ট ২০২০ জাতিসংঘ বিশ্ব মানবিক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের চারজনকে ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এদের মধ্যে খুলনার রূপসা চরের কিশোরী আঁখি একজন।