Bangladesh

আদালতে পেশ করা হল রানা প্লাজার মালিককে

আদালতে পেশ করা হল রানা প্লাজার মালিককে

| | 26 May 2013, 07:01 am
ঢাকা, এপ্রিল ৩০: রানা প্লাজা ধসে পড়ার ঘটনায় ভবনটির মালিক সহেল রানাকে মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে পেশ করা হয়।

 নয়তলা ভবনটিতে অবস্থিত বস্ত্র কারখানাগুলির মালিকদের ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টরদেরও আদালতে হাজির করা হয়।

 
 তারা হলেন - নিউ ওয়েভ বটমস চেয়ারম্যান বাজলুস সমাদ ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মাহমুদুর রহমান তাপস, ফ্যানটম আপারেলস এন্ড টাক লিমিটেড চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ডেভিড মেয়র রেকো এবং ইথার টেক্স চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান।
 
পুলিশ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ছয়জনকে আদালতে পেশ করে ভবনধসে তাদের ভূমিকা বিস্তারিতভাবে ব্যাক্ত করার জন্যে।
 
সহেল রানাকে রবিবার দুপুরে গ্রেফতার করা হয় যশোরের বেনাপোল থেকে।
 
রানা বেনাপোলে গিয়েছিল পাসপোর্ট ছাড়া সীমা পার করতে ও একজন মানুষ পাচারকারীর বাড়িতে লুকিয়ে ছিল বল ফিল্ড এলাকায়, যেটি ভারতের সীমানার থেকে ০.৫ কিলোমিটার দূরে, জানায় রাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন।
 
রানার গ্রেফতারের খবর ভবনধসের স্থানে পৌঁছতেই সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা স্লোগান দিতে থাকেঃ "রানাকে ফাঁসি দিন ... রানার জন্য ফাঁসি চাই।"
 
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে একটি ছোট বিজয়মিছিলও বের করে।
 
রানাকে রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
 
"বুধবার থেকেই রানা  দেশের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে বেড়াচ্ছিল। আমরা গোপন সুত্রে খবর পাই যে সে বেনাপোলে লুকিয়ে আছে," এক সাংবাদিক সন্মেলনে জানান রাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মহাপরিচালক মোখলেসুর রহমান।
 
রানার ব্রিফকেস থেকে পাওয়া যায় ফেন্সিডাইলের দুটি শিশি, লুঙ্গি, টুপি, সিগারেট, ওষুধ ও ওরাল স্যালাইন।
 
রহমান জানান রানা কোন শক্তিশালী ও নামী ব্যাক্তির আশ্রয়ে ছিল না।
 
"কোন শক্তিশালী ব্যাক্তির হাত রানার মাথায় থাকলে সে এক জায়গায়ই থাকত, এ-ভাবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় পালিয়ে বেড়াত না," তিনি বলেন।
 
রহমান বলেন যখন রানা প্লাজা ধসে যায় তখন রানা ভবনটির ভেতরেই ছিল। সে এই ঘটনায় আহত হয় ও আশুলিয়ায় ইনসাফ হাসপাতালে দুই ঘণ্টা চিকিৎসাধীন থাকে।
 
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সে মোহাম্মদপুরে তার এক বন্ধু মোহাম্মদ শামিমের বাড়ি যায়। পরের দিন সে মানিকগঞ্জে আফজাল শরিফ নামক এক ব্যাক্তির সাথে থাকে।
 
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রানাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিতেই রানা ফরিদপুরে চলে যায় ও অনিল নামক একজনের সাহায্য নিয়ে পরের দিন যশোরের ঝিকরগাছায় পালায়।
 
যশোরে শাহ আলাম মিতু নামক এক মানুষ পাচারকারী তাকে আশ্রয় দেয়।
 
অনিলকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়।
 
রানা ও মিতু রবিরার দুপুর দেড়টা নাগাদ গ্রেফতারিত হয়। 
 
রানাকে গ্রেফতারের একদিন পরেই তাকে ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। 
    
নয় তলা রানা প্লাজায় একটি শপিং মল, পাঁচটি বস্ত্র কারখানা ও ব্রাক ব্যাঙ্কের একটি শাখা ছিল।
 
গত বুধবার সকাল পৌনে নয়টা নাগাদ ঢাকার সাভার এলাকায় রানা প্লাজা ধসে পড়ে, তার থাম ও মেঝেতে ফাটল দেখা দেওয়ার একদিন পরেই। সেই সময় ভবনটিতে ৩০০০-এর মত বস্ত্র কর্মচারী ছিল।  
 
এখনো পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৮৫; ২৪৩৭জনকে ধ্বংসাবশেষের নীচে থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, জানায় পুলিশ।