Bangladesh

রাজাকারদের কমান্ডার ছিলেন মোবারক হোসেনঃ সাক্ষী

রাজাকারদের কমান্ডার ছিলেন মোবারক হোসেনঃ সাক্ষী

| | 27 Aug 2013, 08:01 am
ঢাকা, অগাস্ট ২৭ ঃ যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত মোবারক হোসেন স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাজাকার শিবিরের কমান্ডার ছিলেন বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে জানিয়েছেন ওই সময় রাজাকার শিবিরের এক রাঁধুনি।

 মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে চলতে থাকা মামলায় আট নম্বর সাক্ষী, আবদুস সামাদ ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনালে জানিয়েছেন, উনিশশো একাত্তর সালে দখলদারি সেনারা বাংলা বৈশাখ মাসে তাঁর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার পরে তিনি  আখাউড়া চেক পোস্টের কাছে তাঁর মাসির বাড়িতে সপরিবারে আশ্রয় নেন।

 
দু সপ্তাহ সেখানে থাকার পর রেল অঞ্চলে সামাদের মা\'র বাবার বাড়িতে পরিবারটি ঠাঁই নেয় এবং সেখান থেকেই মোবারকসহ শান্তি কমিটির লোকজন তাঁকে নিয়ে গিয়ে মুগরা বাজারে নিয়ে গিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজে লাগায়।
 
বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া্য বসবাসকারী ৭৮ বছরের এই সাক্ষী জানিয়েছেন, তিনি ২০-২৫ দিন ধরে কাজ করেছিলেন এবং সেই সময় শান্তি কমিটির লোকজন তাঁর স্ত্রী এবং সম্পর্কিত দুই বোনকে বলাৎকার করেছিল।
 
তিনি বলেন ওই বছরের ভাদ্র মাসে শান্তি কমিটির সদস্যরা কুখ্যাত রাজাকার বাহিনীতে বহু লোককে নিয়োগ করেছিল।
 
সামাদ আরও বলেন, তিনি রান্নার কাজ জানেন বলে কাসু মিয়া এবং মোবারক হোসেন তাঁকে তাঁদের সঙ্গে যেতে বলেন। তাঁকে এই বলে হুমকি দেওয়া হয় যে, রাজী না হলে আরও অনেক বিপদ অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য।"ওদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত ট্রেনে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যেতে বাধ্য হই আমি," সামাদ জানিয়েছেন।
 
"ট্রেন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে আমরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালী মন্দিরে পৌঁছই। এর পরে শান্তি কমিটির লোকজনরা মন্দিরের গেট ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে মূর্তিগুলি গুঁড়িয়ে দিয়ে পাশের পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে।পরে ওই মন্দিরটির নাম দেওয়া হয় রাজাকার মঞ্জিল," সাক্ষী বলেন।
 
তিনি জানিয়েছেন এর প্রায় দু মাস পরে রাজাকার মঞ্জিলে ধরে আনা একটি অল্প বয়সী হিন্দু ছেলেকে কমান্ডার মোবারক হোসেন এবং অন্য রাজাকাররা গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার কিছুদিন পরে মোবারক হোসেন এবং তাঁর দলবল রাজাকার মঞ্জিল ছেড়ে চলে যায় এবং নজরুল নামের একজনের নেতৃত্বে অন্য একটি রাজাকার দল সেখানে আসে।সামাদ বলেন, তিনি রাজাকার মঞ্জিলেই থেকে গিয়েছিলেন।
 
সামাদ বলেন তিনি জানতে পেরেছিলেন যে, সুহিলপুর ক্যাম্পে কমান্ডার হিসেবে থাকার সময় মোবারক নয়নপুর থেকে অপহরন করে আনা একটি লোককে হত্যা করেছিলেন।
 
সামাদের সাক্ষ্যদানের পরে মোবারকের কৌঁসুলি আহসানুল হক হেনা তাঁকে জেরা করেন। সেই সময় মোবারক কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
 
সামাদকে জেরা করা শেষ হতে ট্রাইব্যুনাল ৪ঠা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতুবী রাখার কথা ঘোষণা করে।