Column

Awami League confident of returning to power

Awami League confident of returning to power

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 04 Dec 2018, 08:10 am
অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখে দশম সংসদের শেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শেখ হাসিনা প্রত্যয়ের সংগে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসছে। তিনি বলেছেন দেশকে সেবা করা এবং বর্তমানে চলতে থাকা উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

 আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাবনার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী যে এত আত্মবিশ্বাসী, তার কারণ আছে। দশ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নয়নের হার অত্যন্ত উঁচুতে থেকেছে। এই বছর পৃথিবীতে  এ বছরে যে  সব দেশে সব থেকে বেশি হারে বৃদ্ধি যে হয়েছে, তাদের অন্যতম বাংলাদেশ-৭.৮ শতাংশ।  
 

 এই দল এক দশক সময়ের মধ্যেই দেশকে নিম্নতম উন্নত দেশ (লিস্ট ডেভলপড কান্ট্রি )-র স্তর থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের পর্যায়ে নিয়ে এসেছে এবং ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য দূর করে ২০২৪ সালের মধ্যে এই জায়গা থেকেও আরও উপরে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। এই সাফল্যের পিছনে থাকা চালিকাশক্তি ২০১০-২০২১ দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম পাঁচশালা পরিকল্পনা।

 

এই সময় দেশে আর্থিক বৃদ্ধি ঘটেছে গড়ে  ৬.৬ শতাংশ হারে, যেখানে সারা বিশ্বের গড় ৫.১ শতাংশ। গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশে বৃদ্ধি গড়ে ৭ শতাংশ হারে চলছে। ২০১৮ অর্থবর্ষে এই বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৮৬ শতাংশে, পৃথিবীতে অন্যতম দ্রুত হারে। মাথাপিছু আয় গত এক দশকে ৭৫৯ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭৫১ ডলার।

 

গত দশ বছরে  দেশের সম্পূর্ন বাজেটের বহর পাঁচ গুণ বেড়েছে- ৮৯০ বিলিয়ন টাকা থেকে ৪,৬৪৫ বিলিয়ন টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় ৭.৫ বিলিয়ন টাকা থেকে ৩২.২ বিলিয়ন-চার গুণ বৃদ্ধি।উন্নয়নের একটি বড় মাপকাঠি হল দারিদ্র্য অপনয়ন। সে দিক দিয়ে ২০১৮ সালে দারিদ্র্য ২১.8 শতাংশ, যা ২০০৯ সালেও ছিল ৩১.৫ শতাংশ।
 

বর্তমান সরকারের দূরদর্শিতার কারণে বাংলাদেশের ১৬.২ কোটি মানুষের জীবন ডিজিটাইজড নলেজ-বেসড সোসাইটির সংগে যুক্ত হতে চলেছে। লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয় দেশগুলির মধ্যে এখন শীর্ষে এবং নারী খমতায়নে সারা বিশ্বে সপ্তম(গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০১৬)।
 

প্রধান খাদ্যশস্য চাহিদা পূরণে সক্ষম হয়ে দেশ আজ কৃষি উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল- একটি অতি বৃহৎ ঘটনা। একদা কৃষি-নির্ভর অর্থনীতির থেকে পরিষেবা এবং শিল্প-কেন্দ্রিক অর্থনীতিতে যে রূপান্তর ঘটেছে, তার ফলে দেশে আর্থিক সমৃদ্ধি ঘটেছে এবং সেই সাথে বিদেশি সাহায্য এবং আমদানির উপর নির্ভরশীলতা বহুলাংশে কমছে।
 

জি ডি পি -র সাধারণ হিসেবে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর ৪৪তম অর্থনৈতিক শক্তি এবং ক্রয়ক্ষমতার সাম্যের দিক দিয়ে ৩৩ তম,  পরবর্তী এগারোটি বিকাশশীল অর্থনীতি এবং বিকাশশীল বাজারের মধ্যেও অন্যতম।
 

২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে রেমিটান্স ২০০৭-০৮ সালের ৭.৯ বিলিয়ন ডলার থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে  হয়েছে ১৪.৫৮ বিলিয়ন ডলার। এই সময়ের মধ্যে সরাসরি বৈদেশিক লগ্নি ( এফ ডি আই ) ৯৬১ মিলিয়ন ডলার থেকে হয়েছে ২,৪৫৪.৮ মিলিয়ন ডলার। মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও দ্রুত উন্নতি করেছে দেশ। ২০১৭ সালে হিউম্যান ডেভলপমেন্ট ইনডেক্স বেড়ে ০.৬০৮ হওয়ায় ( ০. ৫৩৫ ২০০৯ সালে) বাংলাদেশকে মধ্য-মানবসম্পদ উন্নয়ন (মিডিয়াম হিউম্যান ডেভলপমেন্ট) শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের বিশ্বাস, এই সাফল্য এসেছে মানব সম্পদ উন্নয়ন নীতি রূপায়নের সঠিক কৌশল এবং বিভিন্ন ক্ষেত্র, বিশেষতঃ  শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিপুলভাবে জোর দেওয়ায়।
 

২০১৮ সালে দেশ স্বাক্ষরতা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ শতাংশে, যেখানে ২০০৮ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪৬.৬৬ শতাংশ। মানুষের গড় আয়ু হয়েছে ৭১.৬ শতাংশ, যেখানে  ২০০৯ সালে তা ছিল ৬৭.২ শতাংশ। এটি সম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্য এবং সামাজিক ক্ষেত্রে আরও বেশি খরচ করার ফলে।
 

ইতিমধ্যে সরকার ফাস্ট ট্র্যাক প্রোজেক্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প রূপায়ন করে চলেছে। এই সমস্ত প্রকল্পগুলি রূপায়িত হয়ে গেলে বাংলাদেশে পরিকাঠামোগত সমস্যার বেশিরভাগই মিট যাবে। যে সব প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নজরদারিতে রূপায়িত হচ্ছে, সেগুলির মধ্যে আছে পদ্মা সেতু নির্মাণ, পদ্মা রেল যোগাযোগ, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র,ত্মাতারবাড়ি কোলফিল্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং গভীর সমুদ্র বন্দর এবং পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর। 
 

আওয়ামী লীগের শাসনকালে যে সব বৃহত ব্যাপারগুলি ঘটেছে, তাদের তালিকা দীর্ঘ। এখানে অল্প কয়েকটি উল্লেখ করা হচ্ছে; ন্যুনতম উন্নত দেশের তকমা খসিয়ে দেশ এখন উপরের দিকে চলেছে। গত অন্তত দু'বছর  ধরে দেশের আর্থিক বিকাশ ৭ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০০৯ সালের ৪,৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০,০০০ মেগাওয়াটে। এ ছাড়া পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটে চলেছে তীব্র গতিতে, বজ্রকঠিন হাতে দমন করা হয়েছে জঙ্গি কার্যকলাপ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

দেশের মানুষ এখন নিশ্চিত যে আওয়ামী লীগই তাঁদের আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধি এনে দিয়ে আশা - আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারে। তাঁরা বিশ্বাস করেন বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পথে বাকী লক্ষ্যগুলিও পূরণ করতে সক্ষম আওয়ামী লীগ। 
 

আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় ফিরিয়ে এনে ২০০৮ এবং ২০১৪ সালে মানুষ তাঁদের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তার সুফলও তাঁরা পাচ্ছেন। যদি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকে, তাহলে দেশ উন্নয়নের পথে হেঁটে আরও সামনে এগিয়ে যাবে।