Column

Covid 19: Bangladesh

Covid 19: Bangladesh

Bangladsh Live News | @banglalivenews | 04 Jul 2020, 05:56 am

বাংলাদেশে কোভিড ১৯ এর প্রথম ঘটনার সন্ধান পাওয়া যায় ৮ই মার্চ, ২০২০ তারিখে। এ পর্যন্ত সারা দেশে ১০৫,৫৩৫ টি কোভিডের নিশ্চিত ঘটনার সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৩৮৮ জন মারা গেছেন এবং ৪২,৯৪৫ জন চিকিৎসার পর সেরে উঠেছেন । সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৩২৬,৭৭৯ জনকে এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে, যাদের মধ্য থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২৬৪,২৩৩ জনকে । বর্তমানে ১০, ৩২২ জন রোগী আইসোলেশনে আছেন।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের তরফে যে অতীব প্রশংসনীয় ব্যবস্থাদি নেওয়া হয়েছে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রক, ডিরেকটরেট জেনারেল হেলথ সার্ভিসেস (ডি জি এইচ এস) এবং আই ই ডি সি আর - এর ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় ।

বাংলাদেশ ওয়ার্লড হেলথ অর্গানাইজেশন সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সংগেও এ ব্যাপারে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে নগর পুরসভা, পুরসভা, জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন স্তরে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সাধারণ ব্যবস্থা

সামাজিক এবং শারীরিক দূরত্বঃ এই ব্যপারটি সারা দেশে বলবত করা হয়েছে। সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি অফিসগুলি বন্ধ। ব্যাঙ্কের কাজও নির্দিষ্ট কিছু শাখায় দিনে দুঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য ডাকা হয়েছে সেনাবাহিনীকে । শুধুমাত্র মুদিখানা এবং ওষুধের দোকানগুলি খোলা আছে। মুদির দোকানগুলি দুপুর দুটো অবধি খোলা থাকতে পারে এবং সুপার শপগুলি সন্ধ্যা সাতটা অবধি। একমাত্র ওষুধের বিপণীগুলিকেই আগের মত সব সময় খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

করোনা ভাইরাসজনিত মহামারীর কারণে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তার মোকাবিলা করার জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন পুরোপুরি তৈরি।

সরকারি আদেশ অনুসারে মসজিদ সহ সমস্ত ধর্মীয় স্থানগুলিতে জমায়েত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে বলা হয়েছে ঘরে থেকেই প্রার্থনা সারতে । বন্ধ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান , বহু মানুষ এক সংগে থাকেন, এমন বাসস্থানগুলিকে খালি করে দেওয়া হয়েছে এবং সমস্ত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত রকমের গণ জমায়েতও বন্ধ। এর আগে বর্তমান পরিস্থিতিতে মুজিব বর্ষ পালনের সমস্ত অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

লকডাউন এবং কোয়ারেন্টাইন: যে সব অঞ্চলগুলিতে মানুষের সংক্রমণের সব থেকে বেশি ঘটনা ঘটেছে, সেই সব অঞ্চলগুলিকে সম্পূর্ন লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনটি ডিভিশন, ৪৯ টি জেলা এবং ৩৯৫টি উপজিলাতে সম্পূর্ন লকডাউন বলবত করা হয়েছে। ঘরে কোয়ারেন্টাইন থাকা মানুষদের অবস্থা কঠোর ভাবে নজরে রাখছেন আইনরক্ষাকারী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

পরিবহন: বাংলাদেশে সমস্ত ডমেস্টিক এবং ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত গণপরিবহন, ইন্টার সিটি বাস, কম্যুটার ট্রেন, ইন্টার-ডিসট্রিক্ট ট্রেন, জলপরিবহনও বন্ধ। চালু আছে শুধু পণ্যপরিবহন। পরিবহন বন্ধ হবার আগে স্থলে, জলপথে এবং বিমানবন্দরে ৬৬৮,০০০ জন মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল।

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যবস্থা

হাসপাতাল: কোভিড ১৯ রোগীদের ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের ৪০টির বেশি হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে। ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলিতে ফ্লু কর্নার, আলাদা ওয়ার্ড এবং ইমার্জেন্সি খোলা হয়েছে। যে সব হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে, সে সব জায়গায় অতিরিক্ত ভেন্টিলেটর এবং আই সি ইউ দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলিতে বর্তমানে ৫০০ টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। এই সব হাসপাতালগুলিতে আরও ৭০০টি বসানোর কাজ হচ্ছে। আমদানি করা হচ্ছে আরও ৩৫০ টি।

সারা বাংলাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ১০০ টি নতুন ইন্টেন্সিভ কেয়ার উনিট বসানোর কাজ চলছে এবং আরও ৩০০টি আই সি ইউ এর জন্য যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আনার ব্যবস্থা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ২৯০ টি সংগঠনকে ।

টেলি অ্যান্ড ডিজিটাল হেলথ: আটটি ডিভিশনে বাছাই করা চিকিৎসা সংস্থায় ৭,৬৯৩ টি আইসোলেশন বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে হটলাইন টেলিফোনের মাধ্যমে। নাগরিকদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা-পরামর্শ দেওয়ার জন্য ৪,২০৬ জন চিকিৎসককে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসককে যুক্ত করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১.৪ মিলিয়ন মানুষ ৮ই মার্চ, থেকে এই হটলাইনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য এবং কোভিড ১৯ সম্পর্কিত প্রাথমিক পরামর্শ পেয়েছেন। এই ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ' হট জোন' চিহ্নিত করে বিশেষ নজর দেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

পরীক্ষা: কোভিড ১৯ পরীক্ষার সুবিধা এখন দেশের ৬১ ল্যাবরেটরিতে পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে ৩০টি বড় শহরে কোভিড পরীক্ষার ল্যাবরেটরি কাজ করছে। জুন মাসের ১৭ তারিখ অবধি এই ল্যাবরেটরিগুলিতে ৫৫৪২৪৪ টি পরীক্ষা করা হয়েছে। কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৩,৬২৫ জন ডাক্তার এবং ১,৩১৪ জন নার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সবকটি জেলা এবং উপজেলা হাসপাতালগুলির মেডিকাল টেকনোলজিস্টদেরও কোভিড টেস্টের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মোট ৫০০ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরও টি ডি এইচ এস ২-এ কোভিড নজরদারির ব্যাপারে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।

সারা দেশজুড়েই বিভিন্ন স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের পি পি ই দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সগুলির প্রত্যকটিতে ১০-১৫ সেট করে পি পি ই সরবরাহ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২,৫০৯,১৪২ টি পি পি ই নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা পেশায় যারা নিযুক্ত, তাঁদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে ২,৩১৭,৭০৫ টি পি পি ই এবং ১৬৭,৪৩৭ ট মজুত রাখা হয়েছে।

অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ন্যায়ের ব্যবস্থাঃ

স্টিমুলাস প্যাকেজঃ বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর এই মহামারীর প্রভাবের সংগে মোকাবিলা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০২,৯৫৭ কোটি টাকার (প্রায় ১২.১১ বিলিয়ন ডলার) ১৯ টি স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

৫ই এপ্রিল তারিখে শেখ হাসিনা ৭২,৭৫০ কোটি (প্রায়) টাকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলে। এতে চারটি দিক ছিলঃ ১) মানুষের ব্যয় বৃদ্ধি করা ২) ফিসকাল প্যাকেজ নিয়ে আসা ৩) সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের প্রসার বিস্তৃত করা এবং ৪) টাকার জোগান বাড়ানো।

এই চারটি স্তম্ভের পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে এই কৌশলগুলিঃ ১) শিল্প এবং পরিষেবা ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলিকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেওয়া ২) ছোট এবং মাঝারি শিল্পগুলিকে (কুটির শিল্প সহ) ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেওয়া ৩) বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত 'এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফাণ্ড' এর আওতায় থাকা বিশেষ সুবিধাগুলিকে আরও প্রসারিত করা ৪) 'প্রি শিপমেন্ট ক্রেডিট রেফারেন্স স্কিম' চালু করা।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী একটি ৫০০০ কোটি (প্রায় ৫৯২.২ মিলিয়ন ডলার) টাকার আশু প্রয়োজনভিত্তিক হার্ডশিপ ফান্ডের কথা ঘোষণা করেছিলেন রপ্তানিমূলক শিল্পগুলিতে শ্রমিকদের বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদানের জন্য। প্রধানমন্ত্রী যে সমস্ত স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, সেগুলির মোট মূল্য ৭২,৭৫০ কোটি টাকা (প্রায় ৮.৫৭৩ বিলিয়ন ডলার), যা দেশের জি ডি পি-র ২.৫২ শতাংশ।

১২ই এপ্রিল তারিখে প্রধানমন্ত্রী আরও একটি ৫০০০ কোটি টাকার স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। এর থেকে কৃষকেরা ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারবেন। অন্য একটি প্যাকেজের (৯,৫০০ কোটি টাকা) আওতা থেকে কৃষকদের ভর্তুকি মূল্যে সার, যন্ত্রপাতি, জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী ফসল কাটা এবং কৃষিকার্যের যন্ত্রায়নের জন্য ২০০ কোটি টাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বীজ এবং চারা বিতরণের জন্য ১৫০ কোটি টাকা ধার্য করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

দেশজুড়ে সমস্ত কিছু বন্ধ থাকার দরুন শহরাঞ্চলের যে ৫০ লক্ষ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের নগদ সাহায্যের জন্যেও সরকার থেকে ৪০০০ কোটি টাকা (প্রায় ৪৭১ মিলিয়ন ডলার) দেওয়া হবে।

৪ ঠা মে তারিখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিম্ন আয়ের পেশাদার, কৃষক এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগকারীদের জন্য ৩০০০ কোটি টাকার ( ৩৫৩.৩ মিলিয়ন ডলার) একটি বিশেষ ঋণ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

করোনা ভাইরাস মহামারীতে যে সব তরুণ কর্মহীন হয়েছেন অথবা বিদেশ থেকে যে সব বাংলাদেশি কাজ খুইয়ে ফিরে এসেছেন, তাদের সাহায্যার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ই মে তারিখে কর্মসংস্থান ব্যাংক এবং প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে ২৫০০কোটি টাকা (২৯৩.৮ মিলিয়ন ডলার) ধার্য করার কথা ঘোষণা করেছেন।

২০২০ সালর এপ্রিল এবং মে মাসের বকেয়া ঋণের ভর্তুকি হিসেবেও শেখ হাসিনা ১৮৪০ কোটি টাকা ঘোষণা করেছেন।

নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাহায্যঃ শহর এবং গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষ এবং দিন মজুরদের জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে দ্রুত খাদ্য সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এদের জন্য 'ঘোরাফেরা প্রকল্প' অনুযায়ী ছ' মাস পর্যন্ত খাদ্য এবং অর্থ সাহায্য করা হচ্ছে। মানবিক কারণে তাৎক্ষনিক সহায়তার জন্য সরকার থেকে ১৭২,৪৬৭ মেট্রিক টন চাল এবং ৯৭.৭৭ কোটি টাকা (প্রায় ১১.৫ মিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সারা দেশে এই সব খাদ্য এবং অর্থ বিতরণ করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে সরকার শহর, ডিভিশন এবং জেলা স্তরে 'দশ টাকা কিলো চাল' প্রকল্প চালাচ্ছে। শুধুমাত্র ঢাকাতেই এই প্রকল্পের ফলে ৭৩ টি বস্তিতে বাস করা ৩৯,১৮০ টি পরিবার উপকৃত হবে। এ ছাড়া ভাসন চর প্রোজেক্ট মোতাবেক ১০০,০০০ নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বাসস্থান এবং জীবিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যে সব মানুষের তৎক্ষণাৎ খাদ্য সাহায্যের প্রয়োজন, তাদের জন্য সরকার থেকে একটি টেলিফোন হেল্প লাইন পরিষেবা চালানো হচ্ছে। সরকার ৫০ লক্ষ নিঃস্ব পরিবারের জন্য একটি অর্থ সাহায্য কর্মসুচী শুরু করেছে। এই সব পরিবারের জন্য মোট ১২৫০ কোটি টাকা (১৪৭.২ মিলিয়ন ডলার) বিতরণ করা হবে।

মে মাসের ২০ তারিখে শেখ হাসিনা দেশের মসজিদগুলির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১২২.৫ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। মার্চ মাস থেকে দেশজোড়া লকডাউনের ফলে এইসব মসজিদগুলি আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল।

বিল, ধার ইত্যাদিঃ ইউটিলিটি বিল ( গ্যাস, বিদ্যুৎ, জল) লেট ফাইন ছাড়াই জুন মাস পর্যন্ত দেওয়া গেছে। একই ভাবে, মাইক্রো ক্রেডিট লোনের সুদও কোনও অতিরিক্ত ফি ছাড়াই জুন মাস অবধি মিটিয়েছেন মানুষ। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, জুন মাস অবধি কোনও ঋণকে 'ব্যাড লোন ' হিসেবে গণ্য করা হবেনা। এই সময়কালে কাউকেই সময়মত সুদের কিস্তি দিতে না পারার জন্য 'ডিফল্টার' হিসেবে ঘোষণা করা হবেনা।

রপ্তানি থেকে আয় সংগ্রহের সময়সীমা দু' মাস থেকে বাড়িয়ে ছ' মাস করা হয়েছে। একই ভাবে, রপ্তানি খরচ মেটানোর সময়ও চার মাস থেকে বাড়িয়ে ছ' মাস করা হয়েছে। মোবাইল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের সীমা বাড়ানো হয়েছে।

অগ্রবর্তী শ্রমিকদের জন্য সাহায্যঃ স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মী, আইন রক্ষাকারী, সেনা এবং রাষ্ট্রের কাজে সরাসরি যুক্ত থাকা সামনের সারির কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে প্রধানমন্ত্রী গত ৭ই এপ্রিল এই ব্যবস্থাগুলির কথা ঘোষণা করেছেনঃ ক) একটি বিশেষ সাম্মানিক দিয়ে সরাসরি ভাবে যুক্ত ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পেশাদারদের পুরস্কৃত করা খ) ফ্রন্টলাইন ডিউটিতে নিযুক্ত কারুর সংক্রমণ হলে সরকারের তরফ থেকে তার চিকিৎসার সব রকম বন্দোবস্ত করা গ) সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী, আইন রক্ষক, সেনাবাহিনীর সদস্য, কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিযুক্ত রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের জন্য তাদের পদ অনুসারে বীমার ব্যবস্থা করা। এই বীমার অংক হবে পাঁচ থেকে দশ লাখ টাকা। মৃত্যু হলে অথবা মৃত্যুর ঝুঁকি থাকলে এই অংক পাঁচগুণ বাড়বে। সারা দেশে কর্মরত ব্যাংক কর্মীদের জন্যও প্রধানমন্ত্রী প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন যাতে করে এই দুঃসময়ে তাঁরা নিজেদের পরিবারকে সাহায্য করতে পারেন। এই লকডাউনের মধ্যে কাজ করে যাওয়া প্রত্যেক ব্যাংক অফিসার দশ দিন কাজ করলেই পুরো মাসের বেতন পাবেন। অতিরিক্ত হিসেবে তাঁদের নিয়মিত বেতনের একটা শতাংশও পাবেন তাঁরা।

ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশনঃ এই বিশ্বজোড়া এই সংকটের বিরুদ্ধে লড়তে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করছে। দক্ষিন এশিয়ায় করোনা ভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে ৫ লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশ সার্কের ফান্ডে ১.৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে।