Column

Sheikh Hasina among world’s 100 most influential people
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকরোঁ, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং ঊন, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেও আছেন এই তালিকায়। টাইম ম্যাগাজিন নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত একটি আমেরিকান সাপ্তাহিক।
২০১৭ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের বিচারে পৃথিবীর সব চেয়ে ক্ষমতাশালী ১০০ জন ব্যক্তির মধ্যে শেখ হাসিনা ছিলেন ৩০তম স্থানে। এই ম্যাগাজিনের আর একটি তালিকা- রাজনীতিতে পৃথিবীর সব থেকে ক্ষমতাশালী ২২ জন মহিলার মধ্যে শেখ হাসিনা ছিলেন নবম স্থানে, রাজনীতিতে তাঁর সাফল্যের কারনে। ২০১৭ সালেই অপর একটি ব্যবসায় পত্রিকা- ফরচুন- পৃথিবীতে পরিবর্তন আনা এবং অন্যদের সেই পথে অনুপ্রাণিত করা ৫০ জন নেতার তালিকায় শেখ হাসিনাকে রেখেছিল দশম স্থানে।
বিশ্ব সংবাদ, সমসাময়িক খবর এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে কাজ করা আমেরিকান প্রকাশন 'ফরেন পলিসি'র কথা অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু অত্যন্ত ধৈর্য্য নিয়ে তিনি বিরুদ্ধতা সামলেছেন। তিনি ৭ লক্ষ রোহিংগিয়া শরনার্থীকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কৃত করেন নি। ডিসেম্বর ২০১৯-এর নির্বাচনে বিপুল জয়লাভের পর সারা বিশ্বে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আরও অনেক বেশি করে প্রশংসিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক অতীতে শেখ হাসিনা ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রাক্তন নেতা নীল কিনকের কাছ থেকে শানিত পুরস্কার পেয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে যুদ্ধ থামাতে এবং ভারত ও মায়ানমারের মত প্রতিবেশী দেশগুলির সংগে বিরোধের বিষয়গুলি মিটিয়ে নিতে আক্রমণহীন কূটনীতি অনুসরণে তাঁর ভূমিকার জন্য তাঁকে হেলসিংকি পিস প্রাইজে ভূষিত করা হয়েছে। পৃথিবীতে শান্তি স্থাপনের ব্যাপারে তাঁর ভূমিকার জন্য বৃটেনের পাক্তন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। এমন কি আমেরিকার প্রাক্তন সেক্রেটারি অফ স্টেট হেনরি কিসিঞ্জার বিশ্বশান্তিতে অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনার সুখ্যাতি করেছেন।
শেখ হাসিনা তাঁর দেওয়া প্রায় সব প্রতিশ্রুতিই পূরণ করেছেন। নিরলস ভাবে তিনি দারিদ্র্য এবং ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী এবং ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে সাজার ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই দেশের রাজনীতি স্থিতিশীল হয়েছে, অর্থনীতি বিকাশলাভ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা এবং মৌলবাদের মত দেশের অভিশাপগুলিকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা যদি অব্যহত থাকে, আশা করা যায়, অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়ে উঠবে।
২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী পালন করবে। একটি মধ্য- আয়ের দেশ হতে গেলে যা যা করা দরকার, তা বাংলাদেশ করেছে বলে এই সময়েই সুপারিশ করা হবে। বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্রয় ক্ষমতার সমতার (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি) দিক দিয়ে অনেক ইউরোপিয়ান দেশ, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস এবং সাউথ আফ্রিকার মত দেশগুলিকে ছাড়িয়ে যাবে।
দেশে এবং বিদেশে শেখ হাসিনা এ ব্যাপারটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করেছেন যে বাংলাদেশের মত একটি জনবহুল দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মত সমস্ত গুণাবলী তাঁর মধ্যে আছে। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বে চলে বাংলাদেশ আজ আর নয় অন্তহীন চাওয়ার দেশ (বটমলেস বাস্কেট)। আজ এই দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জাদু দেশ। এই পটভূমিতে তিনি চতুর্থবারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর কৃতিত্বের ফলেই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়ে দেশ গত দশ বছর ধরে এক পরিবর্তনের পথে। এই উন্নয়নকে সাহায্য করেছে অনুকূল সরকারী নীতি এবং বিচক্ষণ নেতৃত্ব। এক দশকের মধ্যেই বাংলাদেশ দারিদ্র্য হার প্রচণ্ড ভাবে কমিয়ে এনে একটি নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশ হয়ে উঠতে পেরেছে । যে কোণও মাপকাঠিতেই এটি কোণও সামান্য সাফল্য নয়। নিঃসন্দেহে এই রূপান্তরের কৃতিত্ব শেখ হাসিনার।