Finance

 'শিল্প প্রসারে নির্বাচনী ইস্তাহা্রে প্রতিশ্রুতি চাই'

'শিল্প প্রসারে নির্বাচনী ইস্তাহা্রে প্রতিশ্রুতি চাই'

| | 21 Aug 2013, 04:19 am
ঢাকা, অগাস্ট ২১ ঃ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য রাজনৈতিক দলগুলির উচিৎ আগামী নির্বাচনের আগে নিজেদের দলীয় ইস্তাহারে নির্দিষ্ট কর্মসূচী রাখা, মনে করছেন দেশের শিল্প এবং শিক্ষা জগতের প্রধান ব্যক্তিত্বরা।

 আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলির ইস্তাহারের বিষয় নিয়ে শহরে সম্প্রতি আয়োজিত একটি সভায় তাঁরা বলেন, দেশে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে শিল্প স্থাপনের খরচ কমান, ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং দূর্নীতিতে রাশ টানার মত কিছু পদক্ষেপ কীভাবে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে  রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী ইস্তাহারে তাদের নিজেদের কর্মসূচী থাকা দরকার।

 
ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট কাজি আক্রম উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে শিল্প ও ব্যবসা-ক্ষেত্রের সমস্যা এবং কীভাবে সেগুলি সমাধান করা হবে সেই বিষয়গুলি্র ঠাঁই পাওয়া দরকার।" শিল্প-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে তারা ঠিক কী করতে চায়, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে নির্দিষ্ট করে বলতে হবে। নির্বাচনী ইস্তাহা্রের প্রতিশ্রুতি খুঁটিয়ে দেখে তবেই শিল্প ও ব্যবসা জগতের মানুষরা আগামী নির্বাচনে ভোট দেবেন," তিনি বলেন।
 
আক্রম, যিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামি লীগের অ্যাডভাইসরি কাউন্সিলের একজন সদস্য, দাবি করেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে চলেছে, এবং যদি রাজনৈতিক দলগুলি সেই গতি নষ্ট না করে, তবে আরও এগিয়ে যাবে। 
যে দল শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের দাবিগুলি অগ্রাহ্য করবে, তারা সেই মহলের ভোট কম পাবে বলে তিনি সতর্ক করেন।
 
আক্রম বলেন, বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে হলে গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন করা ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের হাইওয়ে প্রকল্পটির সম্পূর্ন রূপায়ন দরকার, এবং সেই উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক দলগুলিরও কাজ করা উচিৎ। 
 
আই বি এফ বি ডিরেক্টর এম এস সিদ্দিকি্র দাবি,রাজনৈতিক দলগুলিকে সুনির্দিষ্ট শিল্প নীতি নিক এবং কয়লা-নীতি চূড়ান্ত করুক।
 
রাজনৈতিক দলগুলি প্রতিশ্রুতি দিক যে, বিরোধী আসনে থাকলেও তারা বিক্ষোভ প্রদর্শনের নামে ধ্বংসাত্মক কাজকর্ম লিপ্ত হবেনা, বলেছেন আই বি এফ বি-র আর এক ডিরেক্টর প্রীতি চক্রবর্তী।
 
প্রাক্তন বাণিজ্য সচিব সোহেল আহমেদ চৌধুরি দাবি করেন আট শতাংশ জি ডি পি বৃদ্ধির ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলি তাদের কী কর্মসূচী, তা ঘোষণা করুক। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও যেখানে গত দশ বছর ধরে ছয় শতাংশ করে জি ডি পি বৃদ্ধি ঘটেছে, সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে সহজেই আট শতাংশ বৃদ্ধি লাভ করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। 
 
আলোচনার মূল বিষয়টি লিখিতভাবে পেশ করেন জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের অধ্যাপক এম আবুল কাশেম মজুমদার।দেশে ব্যবসা প্রসারের জন্য এতে ২৯টি বিষয়ের উপর নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অধ্যাপক চৌধুরি বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতি, রাজনৈতিক সুস্থিতি এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্প রূপায়নের কাজ চালিয়ে যাওয়ার উপর।
 
শিল্প-বাণিজ্যের উন্নতি ও প্রসারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলির চিন্তাভাবনা যাতে প্রতিশ্রুতির আকারে নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রতিফলিত হতে পারে, তার জন্য শিল্প মহলকে তাদের চিন্তাভাবনা দিয়ে সাহায্য করতে আহ্বান জানান তিনি।
 
আই বি এফ বি প্রেসিডেন্ট এবং রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।