Finance

ব্যবসা বাড়বে আশা করছেন চিংড়ি রপ্তানিকারীরা

ব্যবসা বাড়বে আশা করছেন চিংড়ি রপ্তানিকারীরা

| | 16 Aug 2013, 02:04 pm
ঢাকা, অগাস্ট ১৬ ঃ আরও ভালো ব্যবসার আশা করছেন বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানিকারীরা। এর কারন, ভারত ও ভিয়েতনামসহ বাংলাদেশের পাঁচ প্রতিযোগী দেশ থেকে চিংড়ি রপ্তানির উপর অতিরিক্ত শুল্ক বসিয়েছে মার্কিণ ্যুক্তরাষ্ট্র।

 "আমেরিকায় আমাদের রপ্তানি এবার পরিমাণ এবং মূল্য, দুদিকে দিয়েই অনেক বাড়বে," বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ আমিন উল্লা জানিয়েছেন। 

 
বাংলাদেশ থেকে চিংড়ির দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারী দেশ আমেরিকা অতি সম্প্রতি ভারত, চিন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং ইকুয়েডর থেকে সে দেশে  চিংড়ি রপ্তানির উপর ৪।৫২ থেকে ৫৪।৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বসিয়েছে।এর কারন, ওই পাঁচটি দেশে চিংড়ি চাষীদের বিপুল ভর্তুকি দেওয়া হয়। 
 
গত বছর দক্ষিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি রাজ্যের চিংড়ি চাষি এবং প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলির একটি যৌথ সংগঠন আমদানির উপর সুবিধা দেওয়ার জন্য দেশের সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। 
 
"এবার আমেরিকার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের মত বিকল্প উৎস থেকেই বেশি আমদানি করবে," আমিন বলছেন।
 
"যদি এখন আমরা পাঁচ থেকে দশ শতাংশ দাম বেশিও চাই, তাহলেও আমরাই সুবিধাজনক অবস্থায় থাকব। কারন, শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার পরে আমাদের প্রতিযোগীরা যে দামে চিংড়ি দিতে পারবে, আমাদের আমাদের দাম তার থেকে কমই থাকবে," তিনি বলেন। 
 
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আমেরিকার বাজারে রপ্তানি হওয়া প্রতি পাউন্ড ব্ল্যাক টাইগার শ্রিম্পের জন্য এখন দাম নেন সাড়ে সাত ডলার করে। এর পরে এই দর উঠতে পারে প্রতি পাউন্ড আট ডলার করে। 
 
একই কথা বলছেন আমেরিকায় মূল্যযুক্ত চিংড়ি রপ্তানিকারী সংস্থা, অ্যাপেক্স ফুডস লিমিটেডের ডিরেক্টর অসীম কুমার বড়ুয়া।"সারা পৃথিবীতে অন্য চিংড়ির উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে ব্ল্যাক টাইগারের রপ্তানি আরও বাড়বে, আর এর ফলে প্রতি কিলোতে আমরা দেড় ডলার মত বেশি পাব," তিনি বলেন।
 
গত আর্থিক বছরে আমেরিকার বাজারে মোট ৩৩০।৫৭ কোটি টাকার চিংড়ি রপ্তানি থেকে  অ্যাপেক্স ফুডের আয় হয়েছিল প্রায় ১০০ কোটি টাকা। 
 
কয়েকটি বড় রপ্তানিকারী দেশে উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমেরিকা এবং ইওরোপের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশ থেকে চিংড়ি রপ্তানির পরিমান বেড়ে গিয়েছে গত জুন মাস থেকেই।এক্সপোর্ট প্রোমোশন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর ফলে জুলাই মাসে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা চিংড়ির মূল্য গত বছরের একই সময় থেকে ৩৩।৯১ শতাংশ বেড়ে  দাঁড়ায় ৫৬।৫৫ মিলিয়ন ডলারে।
 
এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে,বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা চিংড়ির ৩৫ শতাংশই যায় আমেরিকায়, ৪৫ শতাংশ ইওরোপীয়ান দেশগুলিতে এবং বাকি ২০ শতাংশের খরিদ্দার জাপান, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশগুলি। তবে বাংলাদেশে থেকে চিংড়ি রপ্তানি শুল্কের দিক থেকে আমেরিকায় কখনোই কোনও সুবিধা পায়নি।
 
এর আগে কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় চিংড়ি রপ্তানি পড়তির মুখে ছিল। এর কারন, অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি করা দেশগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ এঁটে উঠতে পারেনি। এ ছাড়াও মার্কিণ  ্যুক্তরাষ্ট্রে মন্দাও চিংড়ি রপ্তানির উপর একটা প্রভাব ফেলেছিল। তবে এবারে আমেরিকার থেকে আরও বেশি বরাত পাওয়া ্যাবে বলেই বাংলাদেশের রপ্তানিকারীরা মনে করছেন।
 
বাংলাদেশের সমুদ্র অঞ্চলে, বিশেষত দক্ষিন-পূর্বে ২১৭,০০০ হেকটর জমি জুড়ে চিংড়ি চাষ করা হয়। মিষ্টি জলের চিংড়ি চাষ হয় প্রায় ৩০,০০০ হেকটর জমিতে। 
 
আমিন জানিয়েছেন, এই মূহুর্তে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরে রপ্তানি হওয়া চিংড়ির পরিমান ৫০,০০০ টন।