Muktijudho

ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা ঃ ইতিহাসের সারাংশ

ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা ঃ ইতিহাসের সারাংশ

| | 27 May 2013, 11:47 am
প্রথম পর্যায় ১৫ ই সেপ্টেমবর, ১৯৪৭: ইসলামি আদর্শে অনুপ্রাণিত লেখক, সাংবাদিক ও বিদ্দজ্জনদের সংগঠন তামুদ্দুন মজলিস \'স্টেট ল্যাঙ্গুয়েজ অফ পাকিস্তানন ঃ বেংগলি অর উর্দূ\' নামে একটি পুস্তিকাতে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা করার দাবী করে। মজলিসের সেক্রেটারি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেম রাষ্ট্র ভাষা বিষয়ে প্রথম একটি আলোচনা সভা ডাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে।

 নভেম্বর, ১৯৪৭:করাচিতে বাঙ্গালি শিক্ষা মন্ত্রী ফজলুর রহমানের ডাকা পাকিস্তান এডুকেশনাল কনফেরেন্সে পূর্ব বাংলার প্রতিনিধিরা উর্দূকে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা হিসেব গণ্য করার বিরোধিতা করলেন।

 
২৩ শে ফেব্রুয়ারী, ১৯৪৮: "বিরোধী সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত উর্দূ ও ইংরাজির সঙ্গে বাংলাকে জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেবার জন্য পাকিস্তানের কন্সটিটুয়েন্ট অ্যাসেমব্লিতে একটি প্রস্তাব আনেন। প্রধান মন্ত্রী লিয়াকত আলি এবং অন্যান্য অবাঙ্গালি সদস্যরা প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেন। দুঃখজনক ভাবে, দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে আসা সদস্য খাজা নাজিমুদ্দিন এবং পশ্চিম পাকিস্তানীদের সহযোগী আরো কয়েক জন বাঙ্গালি সদস্যও এর বিরোধিতা করেন। পরে দত্ত প্রস্তাবটির কয়েকটি সংশোধনী আনলেও প্রত্যেক বারই পশ্চিম পাকিস্তানীরা এবং তাদের অনুগত কয়েক জন বাঙ্গালি সদস্য বিরোধিতা করতে থাকেন। সংখ্যাগুরু বাঙ্গালিদের এই ন্যায্য দাবী মেনে নেওয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানী সদস্যরা ছিলেন অনড়।" (রফিকুল ইসলাম)।
 
বাঙ্গালি আমলা, শিক্ষাবিদ, ছাত্র এবং মধ্যবিত্তদের অন্যান্য অংশের সমর্থনপুষ্ট হয়ে বাংলাকে অন্যতম জাতীয় ভাষা করার দাবী শক্তিশালী হয়ে ঊঠল, আর ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এই বিতর্ক রাস্তায় নেমে আসে। বলা হয়, মন্ত্রী সহ প্রভিন্সিয়াল অ্যাসেম্বলির বেশ কিছু সদস্যও সক্রিয় ভাবে এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ইস্ট পাকিস্তান স্টুডেন্ট লীগ এই আন্দোলনের পুরোভাগে ছিল।" (হাসান জাহির)।
 
মার্চ, ১৯৪৮(প্রথম সপ্তাহ): বাম, দক্ষিন ও মধ্য পন্থী--ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রাজনৈতিক মতাবলম্বী ছাত্ররা মিলে বাংলা ভাষাকে জাতীয় মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করলেন।
 
মার্চ ১১, ১৯৪৮: বাংলাকে জাতীয় ভাষা করার দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর পুলিশের লাঠি চার্জ, ঢাকার বহু ছাত্র গ্রেপ্তার। "পরের দিনগুলিতে পরিস্থিতির আরো অবনতি। ১৯ শে মার্চ থেকে কায়েদ-এ-আজমের ঢাকা সফরের কথা ছিল। ব্যাপক বিক্ষোভের চাপে গভর্নর জেনারেলের আসন্ন সফরের অপেক্ষায় থাকা বিচলিত নাজিমুদ্দিনের প্রাদেশিক সরকার অ্যাকশন কমিটির সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য মুহম্মদ আলি বোগরার সাহায্য প্রার্থনা করল। নাজিমুদ্দিনের সঙ্গে কমিটির এই মর্মে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যে, (১)পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাকে সরকারী ভাষার মর্যাদা দিতে এবং সর্ব স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে প্রাদেশিক সরকার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করবে এবং (২) অ্যাসেম্বলিতে আর একটি প্রস্তাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাকে জাতীয় ভাষা করার জন্য সুপারিশ করা হবে (হাসান জাহির)।