Muktijudho

মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতের তাণ্ডব

মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতের তাণ্ডব

| | 13 Dec 2013, 05:33 am
ঢাকা, ডিসেম্বর ১৩: যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামী নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে শুক্রবার মতিঝিলে হিংসাত্মক তাণ্ডব চালায় জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা।
জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মতিঝিলে চারটি প্রাইভেট গাড়ি ও পুলিশের দুটি মোটরসাইকেল সহ পাঁচটি বাইকে আগুন লাগিয়ে দেয় জুমা প্রার্থনার পরে
 
জামায়াতে শিবিরের কর্মীরা এছাড়াও তথ্য ও সার্ভিস সেন্টার এবং বর্জ্য রক্ষণাবেক্ষণের দুটি দপ্তরে আগুন লাগায়।

পুলিশ এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে একজনকে আটক করেছে।

অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সাজিব ওয়াজেদ জয় মোল্লার ফাঁসিতে তাঁর প্রসন্নতা ব্যক্ত করেছেন।

"আজ এক ঐতিহাসিক দিন। প্রথম যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। কাদের মোল্লা আমাদের স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময় "মিরপুরের কসাই" নামে পরিচিত ছিলো," জয় তাঁর ফেসবুকে লেখেন বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে। 
 
"আপনি একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর আদালতে দেয়া জবানবন্দী পাবেন যেখানে সে বলছে কাদের মোল্লা একদল রাজাকারকে নেত্রীত্ব দিয়ে তাদের বাড়ি প্রবেশ করে, একটা ২ বছরের বালককে মেঝেতে আছড়িয়ে মেরে ফেলেছিলো, তার বোনদের ধর্ষন করা সহ, নৃশংসভাবে পুরো পরিবারটিকে জবাই করেছিলো। পরিবারটির এক বোন মোমেনা বেঁচে গিয়েছিলো এবং তার বিরুদ্ধে সে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে।"

"এমন কাজ যারা করতে পারে তারা মানুষ নয়, তারা পশু। আজ মোমেনা এবং কাদের মোল্লার দ্বারা অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা ন্যায়বিচার পেয়েছে," তিনি বলেন।
 
 মোল্লাকে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি দেওয়া হয়।
 
"মোল্লাকে বৃহস্পতিবার রাত দশটা বেজে এক মিনিটে ফাঁসি দেওয়া হয়। তাঁকে প্রায় ২০ মিনিট ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয়," জানান ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শেখ ইউসুফ হারুন।

মোল্লা প্রথম যুদ্ধাপরাধী যার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হল।  
 
মোল্লাকে শুক্রবার ভোররাতে তাঁর পৈতৃক গ্রামে কবর দেওয়া হয়।
 
একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে মোল্লার মরদেহ ভোররাত তিনটে পনেরো নাগাদ ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার আমিরাবাবাদ গ্রামে নিয়ে আসা হয়। ভোররাত চারটে পনেরো নাগাদ তাঁকে তাঁর মাতা-পিতার কবরের পাশে গোর দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার মোল্লার রিভিউ পিটিশন প্রত্যাখ্যান করে। 

 আপিল বিভাগের চেম্বার জজ সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মঙ্গলবার রাতে মোল্লার ফাঁসি বুধবার পর্যন্ত স্থগিত করে।

বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সেপ্টেম্বর ১৭এ মোল্লাকে ফাঁসির নির্দেশ দেয় ১৯৭১এ মুক্তিযুদ্ধের সময় করা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তিস্বরূপ।

মোল্লা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২এর শোনানো যাবজ্জীবনের সাজার বিরুদ্ধে আবেদন করেন।

মোল্লাকে জুলাই ১৩, ২০১০-এ গ্রেফতারিত ঘোষণা করা হয় ১৯৭১-এ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ৩৪৫ মানুষ খুন করার অভিযোগে।

 আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ ফেব্রুয়ারি ৫ তারিখে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী মহাসচিব মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে। 

৬৫ বর্ষীয় নেতাকে পাঁচটি যুদ্ধকালীন অপরাধমূলক মামলায় দোষী পাওয়া যায়।