Travel

এখনও অবহেলিত পর্যটন শিল্প
বর্তমানে বিশ্বায়নের ফলে পৃথিবীর সব জায়গাতেই পর্যটন একটি অন্যতম দ্রুত প্রসারমান শিল্প হিসেবে দেখা দিয়েছে। শ্রম-নিবিড় এই শিল্পে সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর হাজার হাজার কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। স্থানীয় মানুষদের আয়ের সুযোগ করে দেওয়া পর্যটন দারিদ্র দূরীকরণেও এক বড় হাতিয়ার।
উনিশশো নিরানব্বই সালে শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও বাংলাদেশে পর্যটন কখনোই সরকারি আনুকূল্য পায়নি। মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, কাম্বোডিয়া এবং লাওসের মত অনেক দেশ বাংলাদেশের অনেক পরে শুরু করেও আজ পর্যটন শিল্পে অনেক এগিয়ে গিয়েছে।
কেন পিছিয়ে বাংলাদেশ ? পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে বিশুদ্ধ পানীয় জল, নিকাশি ব্যবস্থা এবং গ্যাস সংযোগের অপ্রতুলতা এবং অনেক জায়গায় বিমান যোগাযোগের সুবিধা না থাকা সব থেকে বড় কারনগুলির মধ্যে অন্যতম।
সব বয়সের পর্যটকদের যাতায়াতের অবাধ সুবিধার জন্য পর্যটন-উপযোগী পরিকাঠামোর একান্ত প্রয়োজন।
উল্লিখিত সুবিধাগুলি ছাড়াও আরও অনেক কিছু প্রয়োজন। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে থাকা-খাওয়ার ভালো জায়গা, উন্নত পরিবহন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা, শৌচালয়, গাড়ি রাখার জায়গা, যথেষ্ট নিরাপত্তা--এ-সবই অত্যন্ত জরুরী। বস্তুতপক্ষে, পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে এই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা দরকার।
পর্যটন ক্ষেত্রে যথেষ্ট সংখ্যায় প্রশিক্ষিত কর্মী এবং প্রচারের অভাব আমাদের আরও দু\'টি বড় সমস্যা। ভাল দো-ভাষী অথবা গাইড এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবের ফলে বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকরা না থেকে তাড়াতাড়ি চলে গেছেন, এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। গাইডের পেশাটিকে একটি সম্মানজনক পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা দরকার আমাদের দেশে। প্রতিবেশী ভারত, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে বহু মানুষ স্বতঃস্ফুর্তভাবে এই পেশায় যোগ দেন এবং নানারকম সুযোগ-সুবিধা পান। বাংলাদেশেও শিক্ষিত, সপ্রতিভ, জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন এবং উৎসাহী তরুণ-তরুণীদের গাইড অথবা দো-ভাষীর কাজে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা উচিৎ। বিভিন্ন কার্যকলাপের ভিতর দিয়ে পর্যটকদের ব্যস্ত রাখতে পারলে তবেই তাঁরা পয়সা খরচ করে বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে আসা সার্থক বলে মনে করবেন।