World

Infanticide after birth is China's policy to suppress Uyghurs Uighur

Infanticide after birth is China's policy to suppress Uyghurs

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 05 Oct 2020, 02:28 pm

চীনের হেনান প্রদেশের জিনজিয়াং-এর হাসপাতালগুলিতে নাকি সংখ্যালঘু তুর্কিভাষী সন্তানসম্ভবা উইঘুর মহিলাদের গর্ভপাত অথবা তাঁদের নবজাতকদের হত্যা করা হচ্ছে গণহারে।

গায়ে কাঁটা দেওয়া এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে।

এরা সেই মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুর, যাদের বিদ্রোহ নিয়ে ব্যতিব্যস্ত চীন প্রশাসন এবং যাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।

এই খবর জানিয়েছে, তুরস্কের একটি সংবাদমাধ্যম, রেডিও ফ্রি এশিয়া, হাসিয়েত আবদুল্লা নামে জনৈক উইঘুর-জাত একজন চিকিৎসককে উদ্ধৃত করে। যদি সত্যি হয়, তবে এ খবর বর্তমান সময়ের এক অবিশ্বাস্য জাতিহত্যার কাহিনীকে সামনে আনতে চলেছে।

বর্তমানে তুরস্কে থাকা হাসিয়াত আবদুল্লাহ, যিনি নিজে একজন চীনা উইঘুর এবং চীনের হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে কাজ করেছেন, তাঁকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে, এই ভ্রুন এবং শিশুহত্যার পিছনে রয়েছে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির (সিসিসিপি) পরিবার পরিকল্পনা নীতি, সম্ভবত যার প্রধান লক্ষ্য উইঘুর-সহ ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুরা।

এই নীতিতে নির্দিষ্ট করা হয়েছে যে, গ্রামাঞ্চলে দম্পতিদের তিনটি এবং শহরাঞ্চলে দুটির বেশি সন্তান থাকতে পারবেনা।

শুধু তাই নয়, দুই সন্তানের মধ্যে থাকতে হবে অন্তত তিন বছরের ব্যবধান।

এ-পর্যন্ত হয়তো তাও বোঝা যায়, বিতর্ক থাকলেও।

কিন্তু বিষয়টি তো অন্য জায়গায়! বলা হচ্ছে, জিনজিয়াংয়ের প্রসূতি ওয়ার্ড চীনা কমিউনিষ্ট পার্টির (সিসিপি) পরিবার পরিকল্পনা নীতিমালা বাস্তবায়ন করেছে।

কী ভাবে?

বলা হচ্ছে, কোন পরিবারে দু'টির বেশি সংখ্যার বাচ্চার জন্মগ্রহন করলেই সেই বাচ্চাকে জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই হত্যা করা হচ্ছে সরকারী অথবা চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির নির্দেশে।

হাসিয়াত আবদুল্লাহর মতে উইঘুর এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুকে সীমাবদ্ধ করে রাখার উদ্দেশ্যেই এমন নৃশংস মানবতা বিরোধী কাজ করা হচ্ছে।

আবদুল্লাহর এই অভিযোগের আগেই জুন মাসের ২৯ তারিখে প্রকাশিত জার্মান গবেষক আড্রিয়ান জেঞ্জের একটি রিপোর্টে চীনের ওই অঞ্চলে উইঘুরদের নিশানা করে জবরদস্তি বন্ধ্যাকরণ এবং গর্ভপাতের ঘটনার নাটকীয় বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছিল।

জেঞ্জ আশংকা প্রকাশ করেছিলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংজ্ঞা অনুযায়ী যাকে গণহত্যা বলা হয়, তাই সম্ভবত ঘটছে দেশের সরকারের নির্দেশে।

আরও স্পষ্ট করে আবদুল্লাহ বলেছেন, "ওই অঞ্চলের প্রতিটি হাসপাতালে একটি পরিবার-পরিকল্পনা ইউনিট আছে যাদের দায়িত্বই হচ্ছে সিসিপির এই আদেশ বাস্তবায়ন করা। এছাড়াও এই ইউনিটের দায়িত্ব এলাকায় তার কতজন সন্তান আছে বা নতুন কোথায় কোন সন্তান জন্ম নিচ্ছে তার খবর কেন্দ্রে পাঠানো।"

আবদুল্লাহ বলেছেন, "একজন মা ন' মাস বাচ্চাকে গর্ভে ধারন করার পর প্রসব বেদনা জাগিয়ে সেই বাচ্চাকে আমরা হত্যা করছি। তা করা হচ্ছে প্রসূতি বিভাগের মধ্যেই, কারণ এটাই আদেশ।" তিনি বলেছেন, কোনও কোনও ক্ষেত্রে এমন কি হাসপাতালের কর্মীরাও এই নবজাতকদের হত্যা করছে এবং তারপর সেই দেহগুলি পরিবারকে না দিয়ে নষ্ট করে দিচ্ছে। "উপর থেকে আসা আদেশের জন্যই এই কাজ করা হচ্ছে। রীতিমতো কাগজে ছাপানো এই সরকারি আদেশ বিতরণ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলি এই আদেশ না মানলে তাদের জরিমানা করা হয়। তাই তারা আদেশ পালনও করে।"

উইঘুর মুসলিমদের সঙ্গে হান চীনাদের জাতিগত দাঙ্গায় ২০০৯ সালে দেশে এক বিরাট গোলযোগের পরিস্থিতি হয়েছিল।

তারপর থেকে দেশের কম্যুনিস্ট সরকার ওই বিশেষ অঞ্চলটিকে সম্পূর্নভাবে একটি পুলিশতান্ত্রিক অঞ্চলে পরিণত করে।

জিনজিয়াং-এ মানবাধিকার হত্যার অভিযোগে চীনা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরদার হচ্ছে দিনে দিনে।

এই সব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সম্প্রতি আমেরিকা চীনের কিছু গুরুত্বপূর্ন সরকারী আধিকারিকদের ভিসা মঞ্জুরের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

চীন সরকারের দমন নীতির অঙ্গ হিসেবে ২০১৭ সালে থেকে প্রায় কুড়ি লক্ষেরও বেশি মুসলিম ক্যাম্পে আটক আছেন।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, রাষ্ট্রসঙ্ঘের আধিকারিকরা এবং অন্যান্য রাষ্ট্রগুলির তরফ থেকে উইঘুরদের ব্যাপারে এই দমন নীতি বন্ধ করার আবেদন করা হলেও চীন তাতে কর্নপাত করেনি।

বৃত্তিমূলক শিক্ষাশিবির বলা হলেও এই সব ক্যাম্পগুলি আসলে কী, তার বিশদ কাউকেই জানানো হয়নি।

বিদেশী সাংবাদিকদের সেই শিবিরগুলি দেখতে দেওয়া তো হয়ইনি।

আটক থাকা এই মুসলিমদের মধ্যে সিংহভাগই উইঘুর এবং বাকিরা কাজাখ এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের।