Muktijudho

সেদিন পাগলের মতো ছুটেছেন মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদা

সেদিন পাগলের মতো ছুটেছেন মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদা

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 25 Mar 2019, 11:42 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, মার্চ ২৬: ১৯৭১ সাল। চারিদিকে বাজছে যুদ্ধের দামামা। একের পর এক পুড়ে চলেছে শ্যামল বাঙলার শহর গ্রাম।

হাট-বাজার দোকান-পাট। দেশজুড়ে পাক বাহিনীর গণহত্যার বিভীষিকা। লাখে লাখে মরছে বাঙালি। দেশব্যাপী উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। এমন দমবন্ধ পরিস্থিতিতে এক রাজমিস্ত্রির বউ মাহমুদা বেগম ছুটে ফিরতেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। চাল, ডাল, তেল, নুন, তরকারি, আনাজপাতি যা কিছু মিলত সেগুলো রান্না করতেন মাহমুদা। নিজের সন্তানের মতো রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের মুখে সেসব রান্না খাবার তুলে দিতেন। কোনো কোনো দিন রেঁধে খাওয়ানোর মতো কিছুই থাকত না। সেদিন ছোলা মসুরি কিংবা গম ভেজে দিতেন। মুক্তিবাহিনীর ছেলেদের পরনের পোশাক ধুয়ে রোদে শুকিয়ে দিতেন। পাগলের মতো সবার বাড়ি বাড়ি ছুটেছেন তিনি।


বয়সের ভারে এখন বেঁকে পড়েছেন মাহমুদা বেগম। ঠিকমতো হাঁটতে পারেন না। কমে এসেছে দৃষ্টিশক্তিও। কিন্তু অশীতিপর এই নারী এখনো স্মরণ করতে পারেন একাত্তরের সেই দিনগুলি। কোনোরকম এদিক সেদিক হয় না তার।


সোমবার সকালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ফেলে আসা সেই দিনগুলোতে ফিরে যান মাহমুদা বেগম। তরুণ প্রজন্মের কাছে সেই দিনের গল্প বলেন অবলিলায়। এই গল্প বলার ও শোনার সুযোগ করে দিয়েছিল যশোরের মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার। সঙ্গে ছিল জনউদ্যোগ যশোর। শহরের সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কার্যালয়ে ‘স্মৃতিচারণ ১৯৭১’ অনুষ্ঠানে তিনিসহ আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন তাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গল্প বলেন। বাস্তব জীবনের সেই গল্পের ভেতরে মনের অজান্তে ঢুকে যায় স্কুল কলেজ পড়ুয়া এই প্রজন্ম। অন্তত গল্প কথনের সময় তরুণদের যে পিনপতন নীরবতা, তাদের গল্প শোনার বিভোরতা সেটাই বলে দেয়।


নারী মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদা বেগমের সঙ্গে যেন সবাই চলে যেতে থাকে সেই অগ্নিগর্ভ একাত্তরে। তখন মে মাসের মাঝামাঝি হবে হয়তো। রবিউল আলম ও কালু নামে দুইজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আসেন আমার বাড়িতে। তখন ভর দুপুর। সেখানে দুপুরের খাবার সারেন তারা। তাদের সঙ্গে আলাপ করে যুদ্ধে যোগ দেয় আমার স্বামী খোরশেদ আলী। সেই সুযোগটি নিই আমি। আমিও প্রশিক্ষণ নিই। অংশ নিই মুক্তিযুদ্ধে। গ্রেনেড ছোড়া ও রাইফেল চালানো শিখি। মুক্তিবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেব বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার সংগ্রহ শুরু করি। পাগলি সেজে, কখনো বউ সেজে আবার কখনো ভিক্ষুক ও ফেরিওয়ালা সেজে ইনফরমারের কাজ করতাম আমি।


একাত্তরের স্মৃতিচারণের একপর্যায়ে মাহমুদা বেগম বলেন, একবার পাকসেনাদের আত্মসর্মপণের খবর পাই। এটি জানার পর গোপনে দা নিয়ে বের হই। আত্মসমর্পণ করার স্থলে গিয়ে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে কুপিয়ে হত্যা করি এক পাকসেনাকে।

সর্বশেষ শিরোনাম

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির Fri, Mar 29 2024

রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রত্যাখ্যান বীর মুক্তিযোদ্ধার Tue, Mar 05 2024

সুগন্ধা বিচের নাম ‘বঙ্গবন্ধু বিচ’ করার নির্দেশনা বাতিল করল মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় Tue, Feb 27 2024

মেডিকেল ভর্তিতে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের নির্দেশ Fri, Feb 02 2024

সেবা নিতে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করা যাবে না Fri, Dec 29 2023

মহান বিজয় দিবস আজ Sat, Dec 16 2023

মহান বিজয় দিবস : জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা Sat, Dec 16 2023

মহান বিজয়ের মাস শুরু Fri, Dec 01 2023

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখক সাংবাদিক গীতা মেহতা আর নেই Mon, Sep 18 2023

সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান আর নেই Mon, Aug 28 2023