Sports
কর্নওয়ালের স্পিনে ‘হোয়াইটওয়াশড’ বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১: শেষ বিকেলের মরে আসা আলোয় বাংলাদেশের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একাই দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর জয়ের মধ্যে। কিন্তু জয়ের নায়ক নন, দারুণ খেলেও শেষ পর্যন্ত তিনি হয়ে রইলেন ট্র্যাজেডির নায়ক। মিরাজকে ফিরিয়েই অসাধারণ এক জয়ের উল্লাসে মেতে উঠল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশড হলো বাংলাদেশ।
মিরপুর টেস্টে ১৭ উইকেট পতনের দিনে ১৭ রানের জয়ে ২-০তে টেস্ট সিরিজ জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্পিন ঝলক আর ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ম্যাচ শেষ চতুর্থ দিনেই।
শেষ ইনিংসে ২৩১ রান তাড়ায় বাংলাদেশের ৯ ব্যাটসম্যান স্পর্শ করেন দুই অঙ্ক। কিন্তু পঞ্চাশ ছাড়াতে পারেননি কেউ। ফিফটি জুটিও মোটে একটি। দল তাই অলরাউট ২১৩ রানে।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে রাকিম কর্নওয়ালের শিকার ৪ উইকেট। এই প্রথম বাংলাদেশের বিপক্ষে এক টেস্টে ৯ উইকেট পেলেন কোনো ক্যারিবিয়ান স্পিনার। ম্যাচের শেষও কর্নওয়ালের হাত ধরেই। শেষ জুটিতে মিরাজের দারুণ ব্যাটিংয়ে যখন জমে উঠেছে লড়াই, জোমেল ওয়ারিক্যানের বলে কর্নওয়ালের দুর্দান্ত ক্যাচে সমাপ্তি সব উত্তেজনার।
বাংলাদেশ ইনিংসের সব উইকেটই নেন ক্যারিবিয়ান স্পিনাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বার ১০ উইকেটই এলো স্পিনে, আগের দুবার ছিল সেই ১৯৫০ ও ১৯৫৬ সালে!
রানের হিসেবে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট ব্যবধানের পরাজয় এটি। তবে খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারের সান্ত্বনা নয় সেটিও। ২০১২ সালের পর এই প্রথম দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশড হলো বাংলাদেশ। সেবারও ছিল ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই।
এই পরাজয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পয়েন্টের মুখ আর দেখা হলো না বাংলাদেশের। অথচ খর্বশক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পুরো ১২০ পয়েন্টের আশায় সিরিজ শুরু করেছিল দল।
অনেক মোড় বদলের দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ৩ উইকেটে ৪১ রান নিয়ে। তাইজুল ইসলামের ৪ উইকেট আর নাঈম হাসানের ৩ উইকেটে ১১৭ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩১। ২১৫ রানের বেশি তাড়া করে কখনোই টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। চতুর্থ দিনের স্পিন সহায়ক উইকেটে এবারও কাজটি ছিল ভীষণ কঠিন। তবু আশা জাগায় তামিম ইকবালের ব্যাট।
টার্নিং উইকেটে স্রেফ উইকেট আঁকড়ে না রেখে বল নতুন ও শক্ত থাকতেই দ্রুত রান তোলার কৌশল নেন তামিম। পেস-স্পিনে একের পর এক বাউন্ডারি আসতে থাকে তার ব্যাটে। দলের পঞ্চাশ হয়ে যায় একাদশ ওভারেই। ১৩ ইনিংস পর উদ্বোধনী জুটিতে বাংলাদেশের ফিফটি!
সেই হর্ষ একটু পরই রূপ নেয় বিষাদে। জুটি ভাঙতে বল হাতে নেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। ম্যাচের চিত্র বদলের সেখানেই শুরু। প্রথম বলেই তাকে উইকেট উপহার দেন সৌম্য সরকার।
তামিম ৯ চারে ফিফটি স্পর্শ করেন ৪৪ বলে। তার পথচলারও সমাপ্তি সেখানেই। ব্র্যাথওয়েটেরই নিরীহ এক বলে আলতো ড্রাইভে ক্যাচ দেন শর্ট কাভারে, যে ফাঁদ পেতে রাখা স্রেফ ওই শটের জন্যই!