Column

আবারও ক্ষমতায় আওয়ামী লীগঃ অটুট আর্থিক বৃদ্ধির নীতি

আবারও ক্ষমতায় আওয়ামী লীগঃ অটুট আর্থিক বৃদ্ধির নীতি

Bangladesh Live News | @banglalivenews | 27 Jun 2019, 09:20 am
ডিসেম্বর ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিপুল জয়ের মাধ্যমে উপর্যুপরি তৃতীয়বারের জন্য দেশে ক্ষমতায় এসেছে আওয়ামী লীগ-নেতৃত্বাধীন মহাজোট, যা দেশের উন্নয়ন এবং বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে এক সুদূরপ্রসারী ঘটনা বলে মনে করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকেরা।

তাঁরা এও বিশ্বাস করছেন যে   সরকারের নীতি অব্যহত থাকার ফলে উন্নয়নের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে এবং তা দ্রুত বৃদ্ধির সহায়ক হবে। 

 


"দেশের বৃদ্ধির হার এক সময়ের ৪-৫ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন হয়েছে ৭ শতাংশের উপরে। ক্ষমতায় স্থিতির কারণে এই বৃদ্ধি ভবিষ্যতে আরও গতি পাবে," বিশিষ্ট অর্থনীতি বিশ্লেষক ডঃ জাইদ বখত বলেছেন। উন্নয়নের জন্য নীতির অব্যহতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন, কেননা তা বৃদ্ধি এবং উন্নয়নকে সাহায্য করে," তিনি বলেছেন। 

 

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ের ফলে দেশের উন্নয়নের প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে। দ্রুত রূপায়নের ফলে বৃহৎ প্রকল্পগুলি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। 
 

 
দেশকে একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ উপর্যুপরি তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। তাদের গত দশ বছরের শাসনকালে অনুকূল নীতি এবং বিচক্ষণ পদক্ষেপের ফলে আর্থ-সামাজিক প্রগতি ঘটেছে। এই সময়কালে দেশে গড়ে ৬.৬ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে, যেখানে সারা পৃথিবীর গড় বৃদ্ধি ৫.১ শতাংশ। এর ফলে  একটি নিম্ন আয়ের (এল ডি সি ) দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মধ্যে পুরোপুরিভাবে এল ডি সি তকমা ছেড়ে ফেলার জন্য এখন দেশ তৈরি হচ্ছে।
 

 

উপর্যুপরি গত তিন বছর ধরে বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের উপর থেকেছে- গত আর্থিক বছরে ৭.৮৬ শতাংশ- এবং মাথাপিছু আয় ১৭৫৯ ডলার থেকে বেড়ে ২০১৯ সালে হয়েছে ১৭৫১ ডলার। 
 

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন সরকারের লঙ টার্ম পার্সপক্টিভ প্ল্যান ২০১০-২১ এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এই সাফল্যের চালিকাশক্তি।.
 

 
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন আপাতভাবে  থেমে থাকা ব্যক্তিগত লগ্নির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি লগ্নির বৃদ্ধি আসলে বেশি বৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করেছে। সরকারি লগ্নি এখন দেশের জি ডি পি-র ৭.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। গত দশ বছরে দেশে বিদেশী মুদ্রা ভাণ্ডার চারগুন বেড়ে ৭.৫ বিলিয়ন   ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩২.২ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ পার্লামেন্টে রেকর্ড পরিমাণ ৫.২৩ ট্রিলিয়ন টাকার( প্রায় ৬২ বিলিয়ন ইউ এস ডলার) বাজেট পাশ হয়েছে ২০১৯-২০ সালের মধ্যে ৮.২ শতাংশ বৃদ্ধির লক্ষ্য করে।
 

 

উন্নয়নের একটি বৃহৎ সূচক দারিদ্র্য হ্রাস পাওয়া। ২০১৮ সালে দারিদ্র্য হার কমে ২১.৮ শতাংশে এসেছে যেখানে ২০০৯ সালে তা ছিল ৩১.৫ শতাংশ। চরম দারিদ্র্য ১৭.৬ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১১.৩ শতাংশ।
 

অর্থনৈতিক রূপান্তরের এই প্রক্রিয়ায় দেশের জি ডি পিঁ- তে কৃষির অবদান, যা দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে সব থেকে বেশি ছিল, তা কমে গিয়ে শিল্পক্ষেত্রের অবদান বেড়ে উঠছে। 

 

এই উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতির পরে সময় এসেছে তাকে ধরে রাখার, ডঃ জাইদ বখত বলেছেন। তিনি মনে করেন নতুন সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ হল ব্যক্তিগত লগ্নির পাশাপাশি সরকারি লগ্নির মান বাড়ানো। 


পরিকাঠামো, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র, শ্রমদক্ষতা এবং মানবসম্পদের উন্নতি ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে দারিদ্র্যে আরও কমানো এবং বৈষম্যের হার কমিয়ে আনা হবে আগামী দিনের বড় চ্যালেঞ্জ,  তিনি বলেছেন।
 

 
আর এক জন বিশিষ্ট অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ, যিনি   ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ঢাকা অফিসের অন্যতম প্রধান অর্থনীতিবিদ, বলেছেন  আর্থিক ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, যুক্তিনির্ভর সরকারি লগ্নি পরিকল্পনা করা এবং গণ প্রশাসনের ক্ষেত্রে সংস্কার   আনা নতুন সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। 
 

 

পদ্মা ব্রিজ, মেট্রো রেল এবং এল এন জি টার্মিনাল নির্মানের মত বৃহৎ প্রকল্পগুলি যাতে এই সরকারের সময়কালের মধ্যে সম্পন্ন হয়, তা সরকারকে  সুনিশ্চিত করতে হবে, কেননা এর ফলে অর্থনীতি লাভবান হবে, তিনি বলেছেন।

 

তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যে নির্বাচনের আগে তাড়াহুড়ো করে যে সব প্রকল্প মঞ্জুর হয়েছিল, সেগুলির পুনর্বিবেচনে দরকার এবং সাসটেনেব্‌ল ডেভেলপমেন্ট গোলস অনুযায়ী প্রকল্প পরিচালন ব্যবস্থাপনা নির্দিষ্ট করা এবং প্রকল্প-অগ্রাধিকার ঠিক করা প্রয়োজন। 


তিনি বলেন কর নীতি এবং প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই সংস্কার সাধন করে জনমূখী করে তোলা দরকার, যাতে করে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বৃদ্ধি পায়। সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলসের এটিও একটি   পূর্বশর্ত।
 

তাঁর      প্রস্তাব, সাফল্য-ভিত্তিক প্রোমোশন এবং বেতনবৃদ্ধির মত কিছু সংস্কারের মাধ্যমে   প্রশাসনিক ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং দায়বদ্ধতা বাড়াতে হবে।
 

"বিপুলভাবে জয়ী হয়ে উপর্যুপরি তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা একটি সরকার যদি প্রশাসনে সংস্কার না আনতে পারে, তাহলে আর কে তা আনবে," একটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন। 

সর্বশেষ শিরোনাম

বাংলাদেশে পশ্চিমের ‘গণতান্ত্রিক বিতর্কের’ শূন্যতা Tue, Jan 02 2024

হাসিনার ১৫ বছর: আঞ্চলিক সহযোগিতা ও প্রবৃদ্ধির একটি অনুকরণীয় গল্প Thu, Dec 07 2023

বাংলাদেশ: পাকিস্তানের ছায়া থেকে পরিপক্ক গণতান্ত্রিক দেশ Fri, Dec 01 2023

ধর্মনিরপেক্ষতা বনাম ধর্মতন্ত্র: বাংলাদেশ - এবং পশ্চিম - হুমকির মুখে Thu, Nov 16 2023

সার্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের সূচক - বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের তুলনা Tue, Jan 17 2023

বাংলাদেশে বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতি - ব্যাপক দুর্নীতি ও উগ্র ইসলামবাদ Sat, Nov 19 2022

বিডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনের বাইরে বাংলাদেশ Wed, Dec 08 2021

Manipulating institutions: The Chinese Way in Bangladesh Sat, Dec 04 2021

শিল্পদ্রব্যের গুনমাণ: কোথায় চীনের বিশ্বাসযোগ্যতা Tue, Sep 15 2020

চিন থেকে সাবধান হওয়ার সময় এখন Mon, Aug 31 2020