Column
সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে বৈধতা, অর্থ সাহায্য দিচ্ছে ব্রিটেন
পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী এবং তাদের ইসলামি সহযোগীরা লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করার চার দশক পরে অবশেষে বাংলাদেশে কিছুটা ন্যায়বিচার দেখা যাচ্ছে। ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনালের বিচারে গণহত্যার জন্য এ\'পর্যন্ত দোষী সাব্যস্ত হওয়া দশ জনের মধ্যে আট জনই জামাতের ইসলামি আন্দোলন করা ব্যক্তি।
পশ্চিমে, যেখানে ১৯৭১-এর বহু যুদ্ধাপরাধী পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে, সেখানে কিন্তু জামাতের আন্দোলন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অগ্রণী শক্তি হিসেবে পরিণত হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যানমতে দাবি করা হয় যে, পাকিস্তানি সৈন্য এবং তাদের জামাত সহযোগীরা অন্তত ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছিল, ধর্ষণ করেছিল দু\'লক্ষ মহিলাকে। তাদের অত্যাচারে ঘর ছাড়া হতে হয়েছিল বহু লক্ষ মানুষকে। বাংলাদেশে গণহত্যা চলার সময় .একজন মার্কিণ অফিসার বলেছিলেন পোল্যান্ডে নাৎসিরা ্যা করেছিল, তার পরে এই ঘটনা সব থেকে অবিশ্বাস্য এবং পরিকল্পিত।\'
কিছুদিন আগেই ১৯৭১-এর ঘটনাবলীর পিছনে তাঁর ভূমিকার জন্য জামাত-এ-ইসলামীর অন্যতম প্রধান নেতা আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ দিয়েছে ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল। রায়ে দৃশ্যত খুশি ঐ নেতা সুপ্রীম কোর্ট থেকে বেরিয়ে তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশ্যে \'ভিকট্র সাইন\' দেখান। \'মিরপুরের কসাই\' নামে পরিচিত মোল্লার বিরুদ্ধে এক জন কবির মাথা কেটে নেওয়া, একটি এগার বছরের বালিকাকে ধর্ষণ করা এবং ৩৪৪ জন মানুষকে গুলি করে হত্যা করার জন্য দন্ডাদেশ হয়েছিল।
কিন্তু লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশী কারাবাসের এই শাস্তিকে অতি নিরীহ মনে করছেন এবং তার ফলে দেশের রাজধানী শহর ঢাকায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে বিপুল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। এমনকি বাংলাদেশের অন্যান্য চরম ইসলামপন্থী দলগুলিও জামাতকে অতিমাত্রায় হিংসাত্মক বলে মনে করে। \'ব্রিটিশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট\'-এর একজন সাংবাদিক, ফিলিপ হেনশের লিখেছেন, "এই প্রতিবাদ-আন্দোলন চলছে বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় এবং উদারপন্থী নাগরিকদের নেতৃত্বে। তাঁরা মোল্লা এবং সাজাপ্রাপ্ত অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদন্ড দাবি করছেন।"
বাংলাদেশে যখন এই অবস্থা, ব্রিটেনে কিন্তু তখন জামাতকে তাদের অতীত নিয়ে কোনও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছেনা।
সেখানে ইস্ট লন্ডন মস্ক এবং ইসলামিক ফোরাম অফ ইওরোপ--এই দুটি প্রতিষ্ঠানই ব্রিটেনে জামাতের প্রধান সংগঠন। এই দুই জায়গা থেকেই \'জামাত ইসলামিজম\'-এর জনক সঈদ মওদাদির লেখার ব্যাপক প্রচার করা হয়। মওদাদির বই, \'লেট আস বি মুসলিমস\'বলছে, পৃথিবীর যে কোনও দেশেই বাস করুক না কেন, মুসলমানদের পবিত্র কর্তব্য হল, সরকারের ভুল ভিত্তি পালটে দেওয়ার চেষ্টা করা এবং যারা ঈশ্বরকে ভয় করেনা, তাদের হাত থেকে শাসনক্ষমতা কেড়ে নিয়ে আইন তৈরি করা।
বাংলাদেশে জামাতের একজন এম পি, দেলওয়ার হোসেন সাইদি, যিনি নিজে একজন যুদ্ধাপরাধী,নিয়মিতভাবে ইস্ট লন্ডন মস্কে শুধু আসেননি, দলের আন্দোলন চালানর জন্য টাকাও তুলে দিয়েছেন। ওয়ার ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল সাইদির নিজের জেলা পিরোজপুরে যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য ২০১০ সালের নভেম্বরে তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিল। এই পিরোজপুরে ৩০ হাজার মানুষকে হত্যা করে তাদের দেহগুলি ১২ টি গণ কবরে চাপা দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এখানে অন্তত ৩০০ জন মহিলার উপর অত্যাচার করার এবং ১৪৬ টি বাড়িতে আগুন লাগানর অভিযোগ আছে। তদন্তকারীরা পিরোজপুরে গিয়ে সাইদির বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ এবং গণ হত্যায় লিপ্ত থাকার প্রমান পেয়েছেন। গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনাল সাইদিকে মৃত্যুদন্ড দেয়।
এই সাইদি ছাড়াও ইস্ট লন্ডন মস্কে অন্যান্য যাঁরা বক্তৃতা দিতেন, তাঁদের মধ্যে আছেন বিলাল ফিলিপস, ১৯৯৩ সালে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিস্ফোরণের পিছনে একজন \'অভিযুক্ত না হওয়া সহ-ষড়যন্ত্রকারী\' হিসেবে আমেরিকা সরকার যার নাম করেছে, হুসেইন ঈ, ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলাকে যিনি ইহুদীদের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছিলেন এবং আল কায়দা সংগঠণে সদস্য নিয়োগকারী প্রয়াত আনওয়ার আল-অওলাকি।
দ্য ইসলামি ফোরাম অফ ইওরোপ আর একটি সংগঠণ, যারা উগ্রবাদীদের মদত দেয়।আজাদ আলি, ঐ সংগঠণের একজন পরিচিত নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি, রিপোর্টারদের গোপন ক্যামেরার সামনে এক সময় বলেছিলেন, "যদি শরিয়া আইনকে বাদ দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তবে তা কেউ মেনে নেবেনা।" এই ব্যক্তি ইজরায়েল ধ্বংস করার ডাক দিয়েছিলেন, ইরাকে ব্রিটিশ সেনাদের হত্যা সমর্থন ক