Column
জনসমীক্ষাগুলি এগিয়ে রাখছে আওয়ামী লীগকে
শেখ হাসিনা-নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে দেশ সঠিক লক্ষ্যেই এগোচ্ছে, এ রকম মত পোষণ করা মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে বলে দেখাচ্ছে সমীক্ষাগুলি।
,
ইন্ডিপেন্ডেন্ট-আর ডি সি ( মার্চ ২০১৭), ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (এপ্রিল, ২০১৭) এবং ডেমোক্রাসি ইন্টারন্যাশনাল ( ২০১৬)- সব ক'টি সংস্থার গণসমীক্ষাতেই দেখা যায় আওয়ামী লীগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আস্থা বি এন পি এবং খালেদা জিয়ার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণে বেশি এবং বেশিরভাগ মানুষই দেশ যে দিশায় চলেছে, সে ব্যাপারে আশাবাদী।
মার্চ, ২০১৭ সালে প্রকাশিত ইন্ডিপেন্ডেন্ট-আর ডি সি সমীক্ষায় ৭২.৩ শতাংশ উত্তরদাতা শেখ হাসিনা যে ভাবে দেশ চালাচ্ছেন, তার স্বপক্ষে মত দিয়েছেন। অপরপক্ষে খালেদা জিয়ার সম্পর্কে ভাল বলেছেন ২৬.৬ শতাংশ মানুষ । একই সমীক্ষায় দেখা গেছে ৫৬.৯ অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগের অনুকূলে মত দিয়েছেন এবং ১৮.৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন বি এন পি র পক্ষে। ওই দিনেই নির্বাচন হলে কাকে তাঁরা ভোট দেবেন- এই প্রশ্নের উত্তরে ৩৬.১ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন তাঁরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন। বি এন পি-কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন ৩.৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।
২০১৬ সালে ডেমোক্রাসি ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষায় ৭০ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছিলেন যে, দেশ সঠিক পথে চলছে। এই ধরণের মানুষের সংখ্যা ঠিক আগের বছর ডি আই যে সমীক্ষা প্রকাশ করেছিল, তার তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি। যখন প্রশ্ন করা হয়, এই মূহুর্তে নির্বাচন হলে কাকে তাঁরা ভোট দেবেন, ৩৮ শতাংশ মানুষ বলেছেন তাঁরা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন। পাঁচ শতাংশের পছন্দ বি এন পি।
২০১৭ সালের আই আর আই জনমত সমীক্ষা দেখাচ্ছে ৭৫ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন যে, দেশ ঠিক পথেই এগোচ্ছে। এই সমীক্ষায় ৮৩ শতাংশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে বেশি নম্বর দিয়েছেন, যা আই আর আই-এর করা ২০১৫, নভেম্বর এবং ২০১৭, ফেব্রুয়ারির সমীক্ষায় ছিল যথাক্রমে ৭৭ এবং ৮০ শতাংশ।
সংবাদমাধ্যম এবং বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের জয়ের পিছনে প্রধান কারণ স্থানীয় স্তরে দলের একতা এবং মজবুত সংগঠন। এর সংগে যোগ করা যেতে পারে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দেওয়া এবং খালেদা জিয়া ও বি এন পি-র তুলনায় শেখ হাসিনা এবং তাঁর দলের বেশি জনপ্রিয়তা।
আই আর আই পরিচালিত ধারাবাহিক ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন, যা এপ্রিল, ২০১৮ তে প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে কয়েকটি বিবেচনাযোগ্য কৌতূহলোদ্দীপক ব্যাপার রয়েছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, বেশিরভাগ উত্তরদাতা আওয়ামী লীগ এবং তাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বর্তমানের উন্নয়নের সংগে সম্পর্কযুক্ত করে ইতিবাচক দৃষ্টিভংগী প্রকাশ করেছেন।
এফ জি ডি এস আভাস দিচ্ছে, উন্নয়নের কৃতিত্ব এবং নেত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে আওয়ামী লীগ মজবুত রাজনৈতিক অবস্থায় আছে। দূর্নীতি, হিংসাত্মক কাজকর্ম, একগুঁয়েমি এবং ধর্মীয় উগ্রবাদের সংগে যুক্ত থাকার কারণে খালেদা জিয়া, বি এন পি এবং তাদের মিত্র জামাত সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব ব্যক্ত করেছেন বেশিরভাগ উত্তরদাতা।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মানুষ দূর্নীতি এবং স্বজনপোষণের জন্য তারিক রহমানকে খারিজ করেছেন।
দূর্নীতির দায়ে খালেদা জিয়ার দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং বি এন পি-র অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান পদে তারিক রহমানের আসীন হওয়া খুব সম্ভবত বি এন পি এবং তাদের নেতাদের সম্পর্কে জনসাধারণের নেতিবাচক ধারণাকে আরও তীব্র করেছে।
এই প্রসঙ্গে আরও একটি ব্যাপার বিবেচ্য। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করেন আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি এবং দেশের স্থায়িত্বের জন্য সরকারের স্থায়িত্ব সবথেকে গুরুত্বপূর্ন। অতীতে বি এন পি সরকারের দায়িত্বে থাকার সময় দেশের মানুষ পরিকাঠামোগত এবং উন্নয়নমূহলক প্রকল্পগুলিকে ব্যহত অথবা বাতিল হয়ে যেতে দেখেছেন।