Finance
বৈদেশিক ঋণে সুদ-আসল পরিশোধে সফল বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৯ এপ্রিল ২০২২: বৈদেশিক ঋণের সুদ-আসল পরিশোধে স্বাধীনতার পর থেকেই পারদর্শিতা দেখিয়ে আসছে বাংলাদেশ। শুধু ২০২০-২১ অর্থবছর ১৪১ দশমিক ৮৬ কোটি ডলার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে যা ১২ হাজার ২শ কোটি টাকা প্রায়) আসল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে বৈদেশিক ঋণে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪৯ দশমিক ৬১ কোটি ডলার (৪ হাজার ২৬৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা প্রায়)। সব মিলিয়ে যা ১৬ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। ঋণ পরিশোধের ধারায় উন্নয়ন সহযোগীরাও বাংলাদেশের প্রতি সব সময় ইতিবাচক।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের মোট বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ১২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ছাড় হয়েছে ৭২ বিলিয়ন, পাইপলাইনে রয়েছে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (স্বায়ত্তশাসিত ছাড়া)।
নানা উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ ও অনুদান দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা। মোটা দাগে স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে মোট সাড়ে ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় করেছে। এর মধ্যে নানা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঋণছাড় করেছে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাকি ঋণ এসেছে কমোডিটি এইড বাবদ। এরপর ১৮ বিলিয়ন ছাড় করেছে এডিবি। জাপানের ছাড় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সে তুলনায় ঋণছাড়ের ধারেকাছে নেই চীন। এই সময়ে চীন ছাড় করেছে ৪ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪ বিলিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র সাড়ে ৩ বিলিয়ন, রাশিয়া ৩ বিলিয়ন ডলার, কানাডা ও জার্মানি সমান ২ বিলিয়ন ডলার করে, ইউনিসেফ দেড় বিলিয়ন, ভারত ১ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন, নেদারল্যান্ডস ১ বিলিয়ন, ডেনমার্ক ১ বিলিয়ন, সৌদি ১ ও সুইডেন ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণছাড় করেছে।
এসব ঋণে উন্নয়ন সহযোগীদের নিয়মিতভাবে সুদ ও আসল পরিশোধে সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ফলে উন্নয়ন সহযোগীরা সব সময় ঋণ নিয়ে ঘুরছে বাংলাদেশের পেছনে।
ইআরডি জানায়, বৈদেশিক ঋণ নিয়ে যাচ্ছেতাই খরচ করেনি বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীরা প্রকল্পসহ উন্নয়নকাজ বাবদ ৭২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ঋণছাড় করেছে। এসব ঋণের বিপরীতে স্বাধীনতার পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ২০ দশমিক ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আসল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি পরিশোধ করেছে ৭ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সুদও।
সময়োপযোগী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ছাড়াও এক্সেপোর্ট ও রেমিট্যান্স বাড়ার ফলে বৈদেশিক সুদ ও আসল পরিশোধে বাংলাদেশ সক্ষমতা দেখিয়েছে বলে দাবি অর্থনীতিবিদদের।