Finance
দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমার স্বপ্নঃ হাসিনা
হাসিনা বলেন যে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত মিলেনিয়াম ডেভেলপমেণ্ট গোল তবেই সাসট্যাঁনেবল ডেভেলপমেণ্ট গোলকে দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে পারবে যদি ধনী দেশ ও দাতারা স্বেচ্ছায় তাদের দেশকে পুঁজি দিতে রাজি থাকেন।
" সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেণ্ট গোল যদি ইউ এন এ গ্রহণ করা হয় তবে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য তা ভালো হবে। বৈঠকে এই সমস্ত উন্নত দেশেরা বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি করলেও তা খুব কম সময়েই কার্যকর হয়," হাসিনা বলেন।
উনি বলেন, " জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন বিষয় থাকলেও বাংলাদেশ এখনই খাদ্য নিরাপত্তার পথে অনেক দূর এগিয়েছে ও সবাই দুইবার তারা আহার পান। তবে শিশুদের পুষ্টি পাওয়ার বিষয়টি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ,"
"আমি ওনাদের নিজেদের প্রতিশ্রুতি রাখবার জন্য অনুরোধ করব। উন্নত দেশের নেতাদের নিজেদের প্রতিশ্রুতি রাখা উচিত," বলেন হাসিনা।
মিলেনিয়াম ডেভেলপমেণ্ট গোলের দুনিয়াতে বাংলাদেশ আজ সাফল্যের পথে হাঁটছে। হাসিনা নিজে ২০০০ সালে নিউ ইয়র্কে এই মিলেনিয়াম ডেভেলপমেণ্ট গোলের গৃহীত হওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ওনার কণ্ঠস্বর উল্লেখযোগ্যভাবে কর্তৃত্ব বহন করে।
"বেশ কিছু সাফল্য পাওয়ার জন্য আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে ভাগ করতেই পারি," হাসিনা বলেন।
মিলেনিয়াম ডেভেলপমেণ্ট গোলের সদ্য প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশ এই কয়েক বছরে বেশ কিছু খারাপ দারিদ্র্য সূচককে বদলে দিয়েছেন। ২০০১-২০০১ মধ্যে এই দেশ ৪০% দ্বারা মাতৃমৃত্যু কমাতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৯০-২০১৫ এর মধ্যে স্কুল যাওয়া ও চরম দারিদ্র্যের হারের সংখ্যা দেখলে দেখা যাবে যে মহিলারা পুরুষদের থেকে এই পথে এগিয়ে আছেন।
" ১৯৯ এ বি এন পি- এর চালু করা বিনামূল্যে শিক্ষা ও বৃত্তির ব্যবস্থা করবার পর থেকে দেশে মহিলাদের অবস্থায় উন্নতি দেখা গেছে," বলেন জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির এক কর্মকর্তা কাজি মোরশেদ বলেন।
"ভাল শিক্ষার ফল শিশুমৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর উপরে পরেছে। মহিলাদের চাকরি দেওয়ার পথে পোষাক সেক্টর হল এই দেশের এক সাফল্যের কাহিনি," উনি বলেন।
মোরশেদ বলেন জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, জলাবদ্ধতার, ও CO2 নির্গমন এর মত বেশ কিছু বড় সমস্যা এখনও দেশে আছে।
ঢাকা এখনও গাড়ির ধোঁয়ার কারণে গুরুতরভাবে দূষিত থাকার জন্য যক্ষ্মারোগ ও এজমা আজও এই দেশে প্রধান উদ্বেগের কারণ। এখনও শিশুর পুষ্টির বিষয়টি একটি বড় সমস্যা দেখা হয়, জানান মোরশেদ।
সমস্যাগুলো থাকেলেও, হাসিনা মনে করেন যে ২০০০ সাল থেকে এই দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির হার বেশ ভাল।
"আমাদের প্রত্যেকটি লক্ষ্যপূরণের পথে আমরা সাফল্য লাভ করেছি। সেই কারনেই আজ বাংলাদেশ ইউ এন ও অন্যদের কাছ থেকে বহু পুরস্কার পেয়েছে," হাসিনা বলেন।
"আমাদের আগামী লক্ষ্য হল সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেণ্ট গোলকে অবলম্বন করা। আমরা বিশ্বাস করি যে আগামী ইউ এন সেশান এ আমরা গ্রহণ করতে পারবো। বাংলাদেশ সেই পথে সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করছে," হাসিনা বলেন।
ঢাকা স্কুল অফ ইকোনমিক্স এর চেয়ারম্যান কাজি আহমেদ বলেছেন যে বিশ্বমন্দা, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাঝেই দেশের বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৬ % এর উপরে ছিল।
"যদি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হত তাহলে আজ বৃদ্ধি ১.৫% বেশি হত," উনি বলেন।
উনি আর বলেনঃ "সহায়তা ছাড়াই বাংলাদেশ অনেক কিছু অর্জন করেছে।"
"৪৩% মানুষের প্রতি দিনের আয় $ ১.২৫ থাকার জন্য আজ বাংলাদেশ পৃথিবীর গরীব দেশগুলির মধ্যে একটি," বলেন রবার্ট ওয়াটকিন্স, ইউ এন রেসিডেন্ট কোওয়ার্ডইনেটর, ঢাকা।
কিছু উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে হাসিনা উন্নয়ন ও সম্পদ সৃষ্টির বিষয়টিকে মানবাধিকারের উপরে রেখেছেন। এখনও বিষয়টি খুব পরিষ্কার নয় যে হাসিনা কি 'গোল' এর ঠিক করা চ্যালেঞ্জগুলিকে আদেও গ্রহণ করবেন কি না?
"সরকার এখনও পর্যন্ত ১৭ এর মধ্যে ১১ টি গোল নিয়েছেন," আসিফ সালেহ , ব্রাক এর সিনিয়র পরিচালক আসিফ সালে বলেছেন।
উনি আন্দাজ করেছেন যে আগামীদিনে আরও বড় সামাজিক সমস্যাগুলি উপেক্ষিত হবে।
নতুন 'গোল' অর্জন করবার জন্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন দুর্বল প্রতিষ্ঠানদের সমস্যা ঠিক করা অথবা দক্ষতা ও উচ্চ শিক্ষায় বিনিয়োগ করতে হবে।
"স্থানীয় সরকারদের নিজের কর্মীদের বিষয় আরও দায়িত্ব নেওয়া ছাড়াও আর্থিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে," আহমেদ বলেন।
" সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেণ্ট গোল প্রণয়নের ক্ষেত্রে আমাদের উপরে সাঙ্ঘাতিক প্রভাব ছিল। জলবায়ু পরিবর্তের বিষয় জরুরী পদক্ষে নেওয়ার পথে মেলে ধরা যুক্তি আমরা জিতেছি ও সেটিকে গোল এ অন্তর্ভুক্ত করেছি। এমডিজির থেকে আলাদা, সাসটেইন্যাবল ডেভেলপমেণ্ট গোল ক্ষেত্রে সবাইকে নিজেদের অবদান রাখতে হবে," উনি বলেন।
হাসিনা বলেছেন উনি বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত করতে বদ্ধপরিকর।
"আমি এই দেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে চাই," হাসিনা বলেন।
"আমাদের আর অনেক পথ হাটতে হবে ও আমরা তা করব। যদি একদিন এই দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রতা থেকে মুক্ত করে উন্নত দেশ বানাতে পারি সেদিন আমি নিজেকে গর্বিত মনে করব," হাসিনা বলেন।