Finance
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পোশাকশিল্পে, আটকা ১৬৬ কন্টেইনার
নিজস্ব প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম, ৭ মার্চ ২০২২: ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এর প্রভাব দৃশ্যমান। জ্বালানি, তেল, গ্যাসসহ অনেক ক্ষেত্রেই পড়েছে রুশ অভিযানের প্রভাব। বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত তৈরি পোশাকশিল্পেও এর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বড় বড় শিপিং কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় পণ্য পরিবহন বন্ধ ঘোষণার প্রভাবে চট্টগ্রামের বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলোতে (অফডক) আটকা পড়ছে রপ্তানির পোশাক।
গত কয়েকদিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কারখানা থেকে রপ্তানির জন্য আসা ১৬৬ কন্টেইনার তৈরি পোশাক অফডকগুলোতে আটকা পড়ে। এগুলোর শিপমেন্ট নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
গার্মেন্টস ও শিপিং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেডিটেরিয়েন শিপিং কোম্পানি, মার্সক, হ্যাপাগ লয়েড এবং ওয়ান লাইন গত ১ মার্চ থেকে রাশিয়ায় পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। অন্য শিপিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে যারা এখনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি তারাও পণ্য বুকিং নিচ্ছে না। তাছাড়া সুইফটে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নিষেধাজ্ঞার কারণেও পণ্য পরিবহন বিল পাওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়াতে অনেক শিপিং কোম্পানি এখন রাশিয়া-ইউক্রেনগামী পণ্য বুকিং নিতে চাইছে না।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শাহেদ সরওয়ার বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি শিল্পেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকখাতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় বড় শিপিং কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় পণ্য বুকিং নিচ্ছে না। আবার যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ইউক্রেনেও পণ্য যাচ্ছে না। তিনি বলেন, এ যুদ্ধ সহসা শেষ হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আবার যেভাবে একে একে নিষেধাজ্ঞা আসছে, যুদ্ধ শেষ হলেও এগুলো কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।
জাতীয় রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই হতে জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম সাত মাসে রাশিয়ায় ৪২ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। যা দেশের মোট পোশাক রপ্তানির দুই শতাংশের কম। একই সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ দুই হাজার ৩৯৯ কোটি ডলার আয় করেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ ১১৪ কোটি ডলারের বাণিজ্য করেছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাকখাত থেকে এসেছে ৫৯ কোটি ডলার।