Finance
বাংলাদেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য করতে চায় ভারত
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৪ জুলাই ২০২২: বাংলাদেশের সঙ্গে পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় মুদ্রা রুপিতে যাতে লেনদেন করা যায়, সেজন্য সক্রিয় উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। ভারতে আমদানি বা ভারত থেকে রফতানির ক্ষেত্রে এ দেশের ব্যবসায়ীরা যাতে রুপিতেই পেমেন্ট করতে পারেন বা নিতে পারেন, তার জন্য যাবতীয় আইনি বাধাও দূর করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)।
তবে বাংলাদেশ রুপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে রাজি হবে কিনা, তা এখন সে দেশের সরকার ও শিল্প মহলের ওপরই নির্ভর করছে। কিন্তু ভারতের দিক থেকে তার সব প্রস্তুতিই ইতোমধ্যে সম্পন্ন।
গত সোমবার (১১ জুলাই) ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরবিআই’র চিফ জেনারেল ম্যানেজার বিবেক শ্রীবাস্তবের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংককে জানিয়ে দেওয়া হয়, এখন থেকে যেকোনও দেশের সঙ্গে ভারতের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতীয় রুপিতেই ‘সেটেলমেন্ট’ করা যাবে।
যদিও এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রধান উদ্দেশ্য হলো, রাশিয়া, ইরানের মতো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলোর সঙ্গে ডলারকে এড়িয়ে রুপিতে বাণিজ্য করা, একই পদক্ষেপ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। অন্যভাবে বললে, ভারত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দুদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য এখন যে ডলারে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলতে হয়, তার আর কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
মুম্বাইতে আর্থিক ক্ষেত্রের বিশ্লেষক শুভময় ভট্টাচার্য বলছিলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন যাতে রাশিয়া থেকে ভারতীয় কোম্পানিগুলো সহজে রুপিতে পেমেন্ট করে তেল কিনতে পারে, সেই জন্যই মূলত এই সিদ্ধান্তটা নেওয়া। কিন্তু এর ‘বাইপ্রোডাক্ট’ হিসেবে অন্য যে দেশগুলোর সঙ্গেও রুপিতে বাণিজ্যের পথ প্রশস্ত হতে পারে. তার অন্যতম হলো বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে রুপিতে বাণিজ্য শুরু করতে ভারতের এই চেষ্টা অবশ্য নতুন নয়। ডলার বা অন্য কোনও হার্ড কারেন্সিকে এড়িয়ে দুটো দেশ যখন নিজেদের মধ্যে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য চালায়, সেটাকে আর্থিক পরিভাষায় বলে ‘কারেন্সি সোয়াপ অ্যারেঞ্জমেন্ট’। বাংলাদেশের সঙ্গেও এই ধরনের ‘রুপি সোয়াপ’ করার জন্য ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক উদ্যোগ নিয়েছিল প্রায় নয় বছর আগেই।