Finance
রাশিয়ার বার্তায় থেমে গেল রূপপুর প্রকল্পের অর্থ লেনদেন
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৪ মার্চ ২০২২: রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংকের ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে অর্থ লেনদেন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
রাশিয়ার যে ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক এই প্রকল্পের অর্থ লেনদেন করে, সেই রুশ ব্যাংকটি তাদের সঙ্গে আপাতত লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বলেছে বাংলাদেশকে। কারণ রাশিয়ার ওই ব্যাংক বৈশ্বিক অর্থ লেনদেনের মাধ্যম সুইফটের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে।
রাশিয়ার ব্যাংকটির নাম ব্যাংক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (ভিইবি)। তারা কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে সুইফট ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি বার্তা পাঠায়। ওই বার্তায় লেনদেন না করার জন্য বলা হয়। ব্যাংকটি এ-ও বলেছে, বাংলাদেশ যদি রূপপুর প্রকল্পের অর্থ বিলম্বে পাঠায়, তাহলেও কোনো বিলম্ব ফি দিতে হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানানন, ভিইবি যখন সুইফটের নিষেধাজ্ঞার বার্তা পেয়েছে, তখনই তারা বাংলাদেশকে বিষয়টি জানিয়ে লেনদেন না করার কথা বলেছে। রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর ওপর সুইফটের নিষেধাজ্ঞার ফলে শুধু রূপপুর প্রকল্প নয়, রাশিয়ার সঙ্গে অন্যান্য বাণিজ্যিক লেনদেনে বিপত্তি তৈরি হতে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল বৃহস্পতিবার কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, ব্যাংকারসহ অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ায় এখনই অর্থ পাঠাতে হবে, এমন কোনো লেনদেন না করার বিষয়ে সভায় মতামত এসেছে। কারণ, সুইফটে অর্থ আটকে যেতে পারে।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে রাশিয়া। রাশিয়ার পরমাণু শক্তি করপোরেশন রোসাটমের নেতৃত্বে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করছে এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট।
রূপপুরে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে প্রায় ২২ হাজার ৫৩ কোটি টাকা। আর রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা হিসেবে আসছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। কেন্দ্রটি দিয়ে ২০২৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা।
রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রোসাটম বলেছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি এবং কাজের সময়সূচিতে কোনো বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে না।