Finance
৪০ কেজি পেঁয়াজে এক লিটার সয়াবিন
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৪ মে ২০২২: গত সপ্তাহে হাটে পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ। কিছুটা লাভের আশা করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু চাষির সেই আশার গুড়ে বালি। কারণ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে গড়ে ৫০০ টাকা কমে গেছে।
শনিবার (১৪) দেশের সর্ববৃহৎ পেঁয়াজের হাট বনগ্রামে সবচেয়ে ভালো মানের প্রতি মণ পেঁয়াজ এক হাজার থেকে সাড়ে ১১শ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ফাটা পেঁয়াজ প্রতি মণ ২০০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। এতে চাষিরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানিয়েছেন।
তারা জানিয়েছেন, এক মণ ফাটা পেঁয়াজ বিক্রি করে এক লিটার সয়াবিন তেলের দামও হচ্ছে না।
বনগ্রাম হাট ভর্তি পেঁয়াজ। হাটে জায়গা না পেয়ে অনেক চাষি রাস্তার ওপরও পেঁয়াজের বস্তা রেখেছেন। পেঁয়াজ আমদানির অনুপাতে বাজারে চাহিদা নেই। ব্যাপারীরা বেশি পেঁয়াজ কিনতে উৎসাহী নন। ব্যাপারীদের ডেকে এনে চাষিরা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন।
বেশ কিছু পেঁয়াজ চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই বছর পেঁয়াজ চাষিরা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়লেও শেষ পর্যন্ত বাজারে ভালো দাম পেয়েছেন। এবার নিরাপদেই পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পেরেছেন তারা। তবে পেঁয়াজ মৌসুমে কয়েক দফায় ভারি বর্ষণ হওয়ায় পেঁয়াজ গাছ ফুলে ভরে গিয়েছিল। এতে অধিকাংশ জমির পেঁয়াজ ফেটে গেছে। ফাটা পেঁয়াজের দাম কম আবার তা ঘরেও রাখা যায় না। শনিবার হাটে এরকম ফাটা পেঁয়াজ ২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
চাষিরা জানান, এবার পেঁয়াজ লাগানোর পর থেকেই অসময়ে কয়েকবার বৃষ্টি হয়। সে সময় অনেক জমিতে পানিও জমেছিল। ফলে এবার পেঁয়াজ গাছ ফুল দিয়ে ভরে গেছে। ফলে উৎপাদন অনেক কমে গেছে। যে জমিতে বিঘায় ৬০-৭০ মণ ফলন হতো সেখানে এবার হয়েছে ৪০-৫০ মণ।
চাষিরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পেঁয়াজের জমি বার্ষিক লিজ নিতে হয়েছে ১৫-২০ হাজার টাকায়। এতে চাষিদের বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ পড়েছে ৪০-৪৫ হাজার টাকা। এক বিঘায় পেঁয়াজের গড় ফলন হয় ৪০-৫০ মণ। সে হিসাবে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা মণে পেঁয়াজ বিক্রি করলে তাদের উৎপাদন খরচ উঠছে না।
কৃষি তথ্য সার্ভিস পাবনার আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কুমার সরকার জানান, পাবনা জেলায় এবার ৫৩ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে হালি (চারা) পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষের লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়ে গেছে। এবার পাবনা থেকে অন্তত সাত লাখ ৪৯ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হবে বলে কৃষি বিভাগ আশাবাদী।