Entertainment
Cancer has changed my life: Manisha Koirala
সাফল্যও পেয়েছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে তখনই জানা গেলো তিনি দূরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরপর লম্বা সময়ের জন্য তার অভিনেত্রী জীবন থমকে পড়লেও তিনি হাল ছাড়েননি।এই আকষ্মিক বিপর্যয় তাকে আরও বেশি ‘লড়াকু’ করেছে, বদলে দেয় তার ৪২ বছরের জীবনটাকে। চিকিৎসকদের মতে দৃষ্টিতে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিই বেশি ছিল মনীষার। পাঁচ বছরের চিকিৎসায় সেই লড়াই জয় করে তিনি ফিরেছেন কোটি ভক্তের সামনে।
নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় বলিউডের অভিনেত্রী মনীষা শনিবার ঢাকা লিট ফেস্টের মঞ্চে এসে বললেন সেই যুদ্ধ জয়ের গল্প, জীবন-মৃত্যুর লড়াই থেকে জীবনের মূল্য উপলব্ধির কথা। তার ভাষায়, ‘জীবন অনেক আনন্দের। এখানে অনেক ইতিবাচক গল্প আছে। আমাকে বাঁচতে হত।’বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত ঢাকা লিট ফেস্টের তৃতীয় দিনে ‘হিলড ‘ শিরোনামের একটি সেশনে নিজের আত্মজীবনী ‘হিলড’ নিয়ে আলোচনায় এসব কথা বলেন মনীষা।
২০১০ সালে নেপালের ব্যবসায়ী স¤্রাট দাহালকে বিয়ে করেছিলেন মনীষা। দুই বছর পর ভেঙে যায় সংসার। সে সময়ই এক পরীক্ষায় ধরা পড়ে ক্যান্সার। সে দিনের স্মৃতিচারণে মনীষা বলেন, ‘আমাকে বলা হল, আমার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ৪৪ শতাংশ, কিন্তু এটাও সত্যি যে ৫৬ শতাংশ মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। আমার মনে হল, মৃত্যুদূত যেন অপেক্ষায়। আমার আকাশ ভীষণ কালো হয়ে আসছিল। কিন্তু নিজেকে বললাম, আমাকে পারতে হবে। আমাকে বাঁচতে হবে। কেমোথেরাপির ধকল সামলাতে হবে। নিজেকে আশ্বস্ত করলাম, আমাকে এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে কী? ক্যান্সার আমাকে ভীষণভাবে বদলে দিয়েছে, পাল্টে দিয়েছে একদম ভেতর থেকে।
উনি বলেন, ‘আমার ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পর বেশ কয়েকদিন কেটে গেছে। কী যে এক কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে! আমি বিষন্ণ ছিলাম, খুব অস্বস্তি লাগত, শারীরিকভাবেও বিপর্যস্ত ছিলাম।’ পরীক্ষায় মনীষার পাকস্থলী অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। ক্যান্সার লিড স্টেজে এসে ছড়িয়ে পড়ছিল সারা শরীরে।
মনীষা বলেন, ‘অনেক পরে আমাকে জানানো হল, আমার জরায়ুতে ক্যান্সার এবং সেটা কেটে ফেলে দিতে হবে। এটা শোনার পর মনে হল, আমার জীবনের নিঃসঙ্গ রাত শুরু। আমার বন্ধু, পরিবার সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিতে বসল কোথায় আমার অপারেশন করাবে। কেউ বলল যুক্তরাষ্ট্র, কেউ ব্যাংকক, কেউ বা মুম্বাই। তবে আমার জন্য কষ্টের সংবাদ ছিল, আমি আর কখনো মা হতে পারব না।’
মনীষা পরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতাল থেকে ক্যান্সারের চিকিৎসা নেন। মনীষার চিকিৎসক তাকে জানিয়েছেন, দুই বছর পর্যন্ত আবার ক্যান্স্যারের ঝুঁকি থাকে শতকরা ৯০ ভাগ। তবে তাতে মানসিকভাবে দুর্বল হননি মনীষা। তিনি বলেন, ‘আমি কখনও মনে করিনি আমাকে অল্প কিছু দিন বাঁচতে হবে। আমার বিশ্বাস ছিল, আমি একদিন পুরোপুরি সুস্থ হব। আমাকে লড়াই করতে হবে।’