Entertainment
Devi Choudhurani now Star Jalsha Serial now
দুই বাংলায় ব্যাপক জনপ্রিয় এই সিরিয়ালের মূল চরিত্র ‘দেবী চৌধুরানী’র বাড়ি ছিল রংপুরের পীরগাছা উপজেলা কৈকুড়ী ইউনিয়নের মকসুদ খাঁ গ্রামে।
‘দেবী চৌধুরানী’ বাল্যকালেই যিনি হয়েছিলেন পিতৃহারা, লাঞ্ছনা আর অপমানের শিকার। সহায়-সম্বলহীন মায়ের সঙ্গেই বেড়ে ওঠেন ‘দেবী চৌধুরানী’। সব প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে দুঃখ-কষ্ট জয় করে একসময় ইংরেজ ও জমিদারদের শাসন-শোষণের শিকার নিরীহ মানুষদের নয়নের মণি হয়ে ওঠেন ‘দেবী চৌধুরানী’। সেসব ঐতিহাসিক ঘটনা ১৮৮৪ সালে লেখনির মাধ্যমে ফুটে তুলেছেন লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৮৪ সালে। ‘দেবী চৌধুরানী’ সিরিয়ালটি গত ১৬ জুলাই থেকে স্টার জলসায় বাংলাদেশ সময় প্রতিদিন রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত দেখানো শুরু হয়।
জানা যায়, ‘দেবী চৌধুরানী’র এই ঘটনা ১৭০০-১৮০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকের। প্রথমে ‘দেবী চৌধুরানী’র নাম ছিল প্রফুল্ল। বাড়ি ছিল রংপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম দুর্গাপুরে। এই গ্রাম থেকে ছয় ক্রোশ (প্রায় ১৪ কিলোমিটার) দূরে ভুতনাথ গ্রামের জমিদার হরবল্লভের একমাত্র ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয় প্রফুল্লের। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে শ্বশুর হরবল্লভ পুত্রবধূ হিসেবে প্রফুল্লকে মেনে না নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ সময় প্রফুল্ল বলেন, ‘এবার কোথায় যাব আমি।?’ এর উত্তরে হরবল্লভ বলেন, যেখানে খুশি যাও। চুরি করো, ভিক্ষে করো, পারলে ডাকাতি করো। পরে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রফুল্ল হয়ে ওঠেন ডাকাতদের রানী, নতুন নাম হয় ‘দেবী চৌধুরানী’।
ধনীদের কাছে থেকে ডাকাতি করা অর্থ এনে গরিব-দুঃখী মানুষদের মাঝে অকাতরে বিলিয়ে দিতেন ‘দেবী চৌধুরানী’। রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কৈকুড়ী ইউনিয়নের মকসুদ খাঁ গ্রামে ছিল এই ‘দেবী চৌধুরানী’র ভবন। ‘দেবী চৌধুরানী’ এই গ্রামেই থাকতেন। তৎকালীন জনসাধারণের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং জনসমর্থনের কারণে ইংরেজরা ‘দেবী চৌধুরানী’কে মেয়ে ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করলেও শত চেষ্টা করে আটক করতে পারেনি। তবে ইতিহাস অনুসন্ধানী অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বঙ্কিমচন্দ্র্র চট্টোপাধ্যায় উল্লেখিত প্রফুল্ল নয় বরং ‘দেবী চৌধুরানী’ ছিলেন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার জয়দূর্গাদেবী (ব্রহ্মণাদেবী) নামের শিবুকুণ্ঠিরাম (বামনপাড়া বা ভুতছড়া) গ্রামের ব্রজ কিশোর রায় চৌধুরী ও কাশিশ্বরী দেবীর মেয়ে। পীরগাছার জমিদার নারায়ণ চন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং সন্যাস বিদ্রোহের সময় তিনি জমিদার ছিলেন।