Finance

তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র রাজস্ব বৃদ্ধি ১১ দশমিক ৫ শতাংশ নেটওয়ার্ক বিস্তারে বিনিয়োগ ২৯০ কোটি টাকা

তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র রাজস্ব বৃদ্ধি ১১ দশমিক ৫ শতাংশ নেটওয়ার্ক বিস্তারে বিনিয়োগ ২৯০ কোটি টাকা

| | 25 Nov 2016, 11:13 am
ঢাকা, নভেম্বর ২৫ঃ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টম্বর) রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।

একই সময় ২.৫ জি ও ৩ জি নেটওয়ার্ক বিস্তারে অপারেটরটি ব্যয় করেছে ২৯০ কোটি টাকা।

তৃতীয় প্রান্তিকের অর্থনৈতিক ফালফল জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৪, ২০১৬ রবি'র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবসার প্রসারের কারণে রাজস্ব বৃদ্ধি পেলেও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুনঃনিবন্ধনের বাইরে থাকা সিম বন্ধ করে দেয়ায় গ্রাহক সংখ্যা কিছুটা কমে ২ কোটি ৩৮ লাখে দাঁড়িয়েছে।

পূর্ববর্তী বছরের প্রথম-তৃতীয় প্রান্তিকের সাথে এ বছরের একই সময়ের তুলনামূলক আলোচনা:

নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে অনিবন্ধিত সিম বন্ধ করে দেয়া এবং এর ফলে নতুন সংযোগ গ্রহণের হার কমে যাওয়ার কারণে চলতি বছরে গ্রাহক সংখ্যা কমেছে। ফলে চ্যালেঞ্জ নিয়েই ২০১৬ সালের শুরু। সকল মোবাইল সেবার ওপর বাড়তি ১ শতাংশ সারচার্জ ও ২ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার ফলে মোবাইল ফোন সেবা গ্রহণ আরো ব্যয়বহুল হওয়ায় প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে পুনঃনিবন্ধনের পর রবি’র গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৩৮ লাখে দাঁড়িয়েছে যা দেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের ২০ দশমিক ৫ শতাংশ।

গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর মোট রাজস্ব ১ শতাংশ কমেছে, অন্যদিকে ইন্টারনেট সেবা থেকে রাজস্ব বৃদ্ধির পরিমাণ আশাব্যঞ্জক- ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। ৩.৫জি ও ২.৫জি ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য নেটওয়ার্ক খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ এবং সাশ্রয়ী মূল্যে উদ্ভাবনী ডাটা অফারের ফলে ইন্টারনেট থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০১৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র পরিচালন মুনাফা (ইবিআইটিডিএ) ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ। নেটওয়ার্ক খাতে ক্রমাগত বিনিয়োগ এবং বাজারে পণ্য ও সেবার মূল্য নিয়ে তুমুল প্রতিযোগিতার কারণে এই মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট কম। দেশজুড়ে নেটওয়ার্কের আধুনিকায়ন ও বাড়তি করারোপের ফলে প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জন করতে পারেনি রবি।

২০১৬ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনামূলক বিশ্লেষণ

নির্ধারিত তারিখের মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধন না করা সিমের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৩৮ লাখে নেমে এসেছে। মূল্য নিয়ে বাজারে তুমুল প্রতিযোগিতার মধ্যেও পূর্ববর্তী প্রান্তিক থেকে এ প্রান্তিকের রাজস্ব ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যা টাকার অঙ্কে ১ হাজার ৩৯০ কোটি। ২০১৬ সালের প্রথম প্রান্তিকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ক্যাম্পেইনের কারণে রাজস্ব কমে যাওয়ার ধারা গ্রাহক-বান্ধব পরিকল্পনার মাধ্যমে রোধ করা হয়েছে। মোবাইলভিত্তিক সেবা থেকে লক্ষ্যণীয় রাজস্ব বৃদ্ধি এবং দেশজুড়ে কার্যকর ব্যয় ব্যবস্থাপনা পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে পূর্ববর্তী প্রান্তিক থেকে এ প্রান্তিকে পরিচালন মুনাফা (ইবিআইটিডিএ) ১২ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে যা টাকার অঙ্কে ৪৫০ কোটি। দেশজুড়ে বিশেষত চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নের কারণে অবচয় বৃদ্ধির ফলে তৃতীয় প্রান্তিকে রবি’র কর পরবর্তী মুনাফা (পিএটি) হয়েছে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।

মোবাইল নেটওয়ার্ক অবকাঠামোয় বিনিয়োগ

গ্রাহকদের আরো মানসম্মত ভয়েস ও ডাটা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৩.৫জি নেটওয়ার্কের বিস্তার এবং ২.৫জি নেটওয়ার্কের মান আরো বৃদ্ধির জন্য ক্রমাগত বিনিয়োগ করে চলেছে রবি। চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকের ২৯০ কোটি টাকাসহ কোম্পানির কার্যক্রম শুরুর পর থেকে রবি’র মোট মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ ১৭ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। ৮ হাজার ৭শ’টির বেশি সাইট নিয়ে দেশের ৬৪টি জেলাতেই রয়েছে রবি’র নেটওয়ার্ক যার মধ্যে ৫ হাজার ২শ’টির বেশি ৩.৫জি সাইট।

সিইও’র বক্তব্য

রবি’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, “২০১৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে মোবাইল ফোন সেবা থেকে আমাদের রাজস্ব লক্ষণীয় পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে চলতি বছরের ৩১ মে’র পর বায়োমেট্রিক নিবন্ধনহীন সিমের সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার ফলে ব্যবসায়িক অগ্রগতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এরপরও গ্রাহকদের সেরা মোবাইল সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আমরা ২.৫জি/৩.৫জি নেটওয়ার্কের বিস্তার ও আধুনিকায়নে ক্রমাগত বিনিয়োগ করে চলেছি।”

তিনি আরো বলেন, “চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আমরা সবচেয়ে উদ্ভাবনী ও সাশ্রয়ী পণ্য বাজারে আনা অব্যাহত রেখেছি। গ্রাহকের প্রয়োজনের দিকটি মাথায় রেখে ‘এইস’ নামে একটি পরিপূর্ণ মোবাইল সল্যুশন চালু করেছি আমরা। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা সহজে তার প্রয়োজন অনুযায়ী সাশ্রয়ী মূল্যে টকটাইম, ডাটা ও এসএমএস বান্ডল প্যাক বেছে নিতে করতে পারছেন। পাশাপাশি বিনামূল্যে উপভোগ করছেন হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক ও ইয়ন্ডার মিউজিক সেবা। এছাড়া কর্পোরেট দায়বদ্ধতার আওতায় সমন্বিত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে পরিচালিত অনলাইন প্লাটফরম ‘টেন মিনিট স্কুল’র পাশে দাঁড়িয়েছে রবি।”

স্টেকহোল্ডারদের পরিশোধিত অর্থের বিবরণ

২০১৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা যা এ প্রান্তিকের মোট রাজস্বের ২৫ দশমিক ৩ শতাংশ। ১৯৯৭ সালে কার্যক্রম শুরুর পর থেকে রবি এ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ১৭ হাজার ৩০ কোটি টাকা। অন্যদিকে একই সময়ে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান করেছে ২৯০ কোটি টাকা।