Column
হিজব-উত-তাহ্রিরর ঃ সন্ত্রাসের আর একটি বাহু
তার বক্তব্য অনুসারে, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির আরবি শিক্ষক, জনৈক মহিউদ্দিন চট্টগ্রাম অঞ্চলে এইচ ইউ টির \'চিফ কোঅর্ডিনেটর\'। প্রপ্রপ্রকৃতপক্ষে জামাতের নিয়ন্ত্রণাধীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সমস্ত শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মচারী হয় সেই দলের নেতা অথবা কর্মী কিংবা সমর্থক।
আই আই ইউর লাগোয়া চকবাজার এলাকায় উনিশশো একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের জন্য বিচারাধীন জামাতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মির কাশেম আলির একটি নিজস্ব বাড়ি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশীরভাগ শিক্ষক এবং কর্মচারী ওই বাড়িটিতে থাকেন। আলি আবার সৌদি আরব-কেন্দ্রিক রাবেতা-আল-আলম-আল-ইসলামির \'কান্ট্রি ডিরেকটর\'।
বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ইসলামি শাসন চালু করার ডাক দিয়ে এইচ ইউ টি সম্প্রতি লাখ লাখ লিফলেট বিলি করেছে। এই লিফলেটগুলিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত এবং আমেরিকার মত \'ইসলাম বিরোধী\' শক্তির \'চর\' বলে বর্ননা করা হয়েছে।
বি ডি আর বিদ্রোহের প্রথম বর্ষ পূর্তিতে সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে আল্লাহ্র শাসন চালু করার জন্য সেনাবাহিনীর কাছে আবেদন করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় লিফলেট বিলি করেছিল এইচ ইউ টি। এই লিফলেটে অভিযোগ করা হয়েছিল, সেনা অফিসারদের হত্যা করার জন্য শেখ হাসিনাই নাকি বি ডি আর বিদ্রোহ করিয়েছিলেন। এও অভিযোগ করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে দূর্বল করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সহযোগীতায় ভারত ওই বিদ্রোহের পরিকল্পনা করে এবং তার প্রয়োগ ঘটায়। বোঝাই যাচ্ছে, লিফলেটে যা লেখা হয়েছিল, তার উদ্দেশ্য ছিল সামরিক কর্মীদের তাতিয়ে তাঁদের মনে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশোধস্পৃহা জাগিয়ে তোলা।
দু\'হাজার নয় সালে যখন এইচ ইউ টি নিষিদ্ধ হয়, সেই সময় এই সংগঠনের ইউ কে শাখার কর্মীরা সেই দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। শুধু বাংলাদেশে নয়, আল কায়দার সঙ্গে যোগাযোগ থাকার জন্য পৃথিবীর কুড়িটি দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এইচ ইউ টিকে। বাংলাদেশে এইচ ইউ টির প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ম্যানেজমেন্টের শিক্ষক, মহিউদ্দিন আহমেদকে দু\'হাজার দশ সালের অক্টোবর মাসে গ্রেপ্তার করা হলেও গোপনে তাঁর অনুগামীদের সংগঠিত করা হতে থাকল জামাত-এ-ইসলামি ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে।নৈরাজ্য তৈরি করার লক্ষ্যেই এই এইচ এউ টিকে এখন সম্পদের মত ব্যবহার করছে বি এন পি-জামাত জোট। এখনকার বিরোধীরা যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন গোপন সাহায্য যুগিয়ে যাওয়া হয়েছিল এইচ এউ টিকে এবং তার ফলেই আজ তৃণমূলস্তরে এই সংগঠনের আজ এত শক্তি।
দু\'হাজার দশ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের সেনা বাহিনী জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার উদ্দেশ্য নিয়ে জনা বারো \'ধর্মান্ধ\' সেনা অফিসারের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। ফাঁস হওয়া ওই ষড়যন্ত্রের বিশদ জানাতে গিয়ে এক বিবৃতিতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রাজ্জাক বলেছিলেন, মেজর পদমর্যাদার একজন অফিসার, যিনি তখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন, ই-মেল মারফত অন্যান্য কর্মরত অফিসারদের কাছে দু\'হাজার বারোর জানুয়ারি মাসের নয় এবং দশ তারিখে ঘটানোর জন্য ওই অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার বিশদ জানিয়েছিলেন।এই অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টায় এইচ ইউ টি সরাসরি যুক্ত ছিল বলে ওই বিবৃতিতে জানান হয়। এইচ ইউ টির অনুগামী অন্তত ষোলজন অফিসার এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন জানা যায়। দেশের সেনাবাহিনীর উপরের দিকে এরকম কতজন চরমপন্থী ইসলামী আছে, অভ্যুত্থানের চক্রান্ত ফাঁস হওয়ার পরে সেই আশঙ্কা সবাইকে আচ্ছন্ন করেছিল।
বি এন পি-জামাত চক্রের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া নিষিদ্ধ চরমপন্থী সংগঠন, এইচ ইউ টি \'খেলাফত\', অর্থাৎ খলিফা-শাসিত রাষ্ট্রের দাবিতে ঢাকা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ এবং মিছিল করবে বলে সম্প্রতি লিফলেট ছেপে বিলি করেছে। তাদের এই উদ্যোগ সরকারের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ছুঁড়ে ফেলে খেলাফতরাজ গঠন করার ডাক দিয়ে পোস্টারও দেখা যাচ্ছে ঢাকা শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন জায়গায়। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পাশাপাশি প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল রক্ষা করা, শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাহিনী তৈরি করা এবং আমেরিকা, ইংল্যান্