Column

মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তারর ঃ সঠিক পদক্ষেপ সরকারের

মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তারর ঃ সঠিক পদক্ষেপ সরকারের

| | 25 Jun 2013, 02:23 pm
সবাই জানেন,গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পর্যন্ত দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে তাঁর মিথ্যা প্রচারের বহর বাড়িয়েই তুলছিলেন।

 মে মাসের ২৬ তারিখে তাঁর সংবাদপত্রের অনলাইন এডিশানে একটি  রিপোর্ট ছাপা হয়, যার শিরোনাম ছিল, \'মাহমুদুর রহমানঃ সরকার এবং ভারতপন্থী গোষ্ঠীর প্রধান লক্ষ্য।\' আর এটাই মিথ্যা প্রচারের মধ্য দিয়ে পাঠককে ভুল পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার একটি জ্বলন্ত উদাহরন। যতই তিনি দাবি করুন, মাহমুদুর রহমান অবশ্যই তাঁর সরকার বিরোধী অবস্থানের জন্য গ্রেপ্তার হননি।  

 
যা মাহমুদুর রহমান করতেন তা হল বানানো খবরের সাহায্যে ধর্মপ্রান মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় আবেগ জাগিয়ে তোলা এবং বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে তাঁদের উত্তেজিত করা। কাবা শরিফ গালিব এবং তার প্রধান মুফতিকে নিয়ে   বিকৃত তথ্যের খবর তাঁর কাগজে ছাপিয়ে এইভাবেই তিনি  ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করছিলেন। বাংলাদেশে \'আলেম\'(মুসলমান পন্ডিত)দের উপর \'অত্যাচারের প্রতিবাদে\' কাবা শরিফের ইমামরা মানবশৃংখল তৈরি করেছিলেন--এমন খবরও তিনি ছাপিয়েছেন। তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল ধর্মীয় আবেগকে খুঁচিয়ে মানুষের মনে অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি করা।
 
এই প্রসঙ্গে হিফাজত-এ-ইসলামের সাম্প্রতিক কার্যকলাপের দিকে চোখ ফেরানো ্যেতে পারে। হিফাজত ঠিক তখনই রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত হল, যখন রাজাকার, আল বদর এবং যুদ্ধাপরাধীদের চরম দন্ডের দাবিতে শাহবাগের যুব আন্দোলন তুঙ্গে। অন্যদিকে শাহবাগের ব্লগার এবং মুক্ত মনের আন্দোলনকারীদের \'নাস্তিক\' এবং \'ইসলাম বিরোধী\' আখ্যা দিয়ে  তাদের শাস্তি চাইলেন হিফাজতের নেতারা। এই হিফাজতের মঞ্চ ব্যবহার করে মৌলবাদী ইসলামিদের পুনরুত্থানের পিছনে মাহমুদুর রহমানের একটি পরিষ্কার ভূমিকা ছিল। 
 
একটি প্রশ্নের উত্তরে হিফাজতের প্রচার সচিব আলম আহমতুল্লা স্বীকার করেন যে, গণ জাগরন মঞ্চের কর্মীরা ব্লগে কি লিখেছিলেন, তা তিনি পড়ে দেখেননি। কিন্তু তাঁদের সম্পর্কে আমার দেশে যা যা লেখা হয়েছিল সেগুলি তিনি পড়েছেন। খোঁজ করলে গণ জাগরন মঞ্চের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করা  অন্যান্য ইসলামী সংগঠনগুলির কাছ থেকেও এই বিষয়ে একই উত্তর পাওয়া যাবে। এইভাবেই আমার দেশের অভিসন্ধিমূলক খবরে প্ররোচিত জামাত শিবিরের কর্মীরা এবং তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা গণ জাগরন মঞ্চ ভাঙ্গচুর করেছে, আর যাওয়ার পথে গাড়ি পুড়িয়ে, বোমা ফাটিয়ে এবং পুলিশের সঙ্গে লড়াই করে চালিয়েছে তান্ডব। দেশকে মধ্যযুগের দিকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে কর্মসূচী হাতে নেওয়া ইসলামি সংগঠনগুলি জেহাদ ঘোষণা করেছে প্রগতিশীল শক্তিগুলির বিরুদ্ধে। 
 
সুতরাং মানুষকে ভুল বোঝানোর উদ্দেশ্যে বানানো মনগড়া খবর ছাপিয়ে মাহমুদুর রহমান যা করছিলেন, সরকার তার নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারেনি এবং সঠিকভাবেই তাঁকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। দেশদ্রোহিতার অপরাধে মাহমুদুর রহমানের বিচারের দাবি না করে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি কীভাবে তাঁর মুক্তির দাবি করেন? পুলিশের হাতে বন্দী মাসুদুর রহমানের ছবি ছাপিয়ে এখন চেষ্টা করা হচ্ছে তাঁর স্বপক্ষে লোকের সহানুভূতি আদায় করার। কিন্তু মানুষের সামনে তাঁর মুখোশ  ্যে খুলে গেছে!