Column

হরতালের রাজনীতিতে পণবন্দী বাংলাদেশের মানুষ

হরতালের রাজনীতিতে পণবন্দী বাংলাদেশের মানুষ

| | 27 May 2013, 11:40 am
দেশের মানুষ হতাশ। কারন, তাঁরা আজ বিরোধী বি এন পি এবং তাদের মিত্র, দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামাতের হাতে পণবন্দী। চার বছরের বেশি সময় ধরে বি এন পি-জামাত জোট ক্ষমতার বাইরে ।তাড়াতাড়ি ক্ষমতায় ফিরে আসতে হলে দরকার সরকারকে দূর্বল করার। আর তা করতে হলে সহজ যে পথ--একের পর এক হরতাল ডেকে দেশকে দীর্ঘস্থায়ী অশান্তির মধ্যে ঠেলে দেওয়া--তাই তারা নিয়েছে।

 এইভাবে যে কোনও উপায়ে ক্ষমতা দখল করতে মরীয়া বিরোধী জোট তাদের লক্ষ্য পূরণের জন্য সাধারন মানুষকে ব্যবহার করে চলেছে। মানুষ অসহায়। তারা ভাবতেও পারছেনা, কি ভবিষ্যত তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। 

 
ক্রমাগত হরতাল শুধু স্বাভাবিক জীবনকে পঙ্গু করে দেয়নি, দেশের শিল্প উৎপাদনকে ভীষনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দেশের প্রধান আয়--তৈরি পোষাক রপ্তানি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা--এত বেশী মার খেয়েছে যে, ক্রেতারা অন্য বিকল্পের কথা ভাবছেন। দৈনিক মজুরিতে কাজ করা মানুষরা এবং অন্যান্য শ্রমিকরা পড়েছেন চরম দূর্দশায়। হরতাল সফল করতে তাঁদের ভয় দেখিয়ে ঘরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। 
 
 হরতাল সমর্থকরা গাড়িতে আগুন লাগাচ্ছে, করছে নানা ধরনের সন্ত্রাস। তার চরম মূল্য দিতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাভকদের। কেউ জানেনা এই অবস্থায় কীভাবে এস এস সি পরীক্ষা হল। 
 
সাতক্ষীরায় গত ৪ঠা এপ্রিল বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়া যা বলেছেন, তার থেকে তাদের বেপরোয়া মনোভাব স্পষ্ট।একটি জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন, "ক্ষমতা ছাড়ুন।আমি বলছি, তাহলে আর কোনও হরতাল হবেনা। যদি হরতাল দেখতে না চান, তবে পদত্যাগ করুন আর তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করুন।"
 
একই সঙ্গে ধর্মীয় আবেগ উস্কে দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে মানুষকে বিপথে চালিত করার। ঘোলা জলে মাছ ধরতে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে একটি অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন--হেফাজত-এ-ইসলামকে। সংবাদমাধ্যম সম্পর্কে মানুষকে ভুল বোঝান হচ্ছে। \'ব্লগার\'কথাটির মানেই অনেকে জানেননা।কিন্তু এইসব মানুষরা ব্লগারদের নাস্তিক বলতে দ্বিধা করছেননা। 
 বি এন পি, জামাত অথবা তাদের ছাত্র সংগঠন, ইসলামি ছাত্র শিবিরের অনেক কর্মী পুলিশের হাতে আটক অথবা গ্রেপ্তার হয়েছেন। এঁরা আদালত থেকে হয়তো জামিন পেয়ে যাবেন। এ\'গুলি আইনের বিষয়। কিন্তু এর জন্য চড়া মাশুল গুনতে হচ্ছে দেশের নিরীহ মানুষদের। আজকের দিনে রাজনীতির অর্থ যে কোনও উপায়ে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা অথবা ক্ষমতায় ফিরে আসা। এই খেলায় মানুষ শুধুই দাবার বোড়ে।